প্রাণ বাঁচাতে ভারতীয় পরিবার বাংলাদেশে

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার সীমান্তের ওপারে গ্রাম পঞ্চায়েত নির্বাচনকে কেন্দ্র করে একজন পঞ্চায়েত নিহত হওয়ায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। ফলে বুধবার মধ্যরাতে সীমান্ত সংলগ্ন কাটাঁতারের বেড়ার বাইরে ভাংচুর ও সংঘর্ষের ঘটনার কারণে ১০টি পরিবারের নারী, শিশু ও পুরুষরা বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছে। ভারতীয় নারী পুরুষ ও শিশুরা দলবেঁধে লেপ তোষক থালা বাসন ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে চলে আসেন। সহিংসতার ঘটনাটি ঘটে উপজেলার গোরকমন্ডল সীমান্তের ওপারে কোচবিহার জেলা দিনহাটা থানাধীন সীমান্তবর্তি খারিদা হরিদা গ্রামে। বিজিবি টহল জোরদার রেখে বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী লোকজনকে শান্ত থাকার আহবান জানানো হয়েছে। ফুলবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ ফুয়াদ রুহানী ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সব ধরনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত লাগোয়া ৯২৯/৫ এস আন্তর্জাতিক পিলারের পাশে বসবাসকারী বাংলাদেশে পালিয়ে আসা ভারতীয় খারিদা হরিদা গ্রামের মৃত মোসলেম উদ্দিনের ছেলে শহিদুল হক, একই গ্রামের আব্দুল হকের ছেলে শাহিন মিয়া, মোহাম্মদ আলীর ছেলে বদরু মিয়া, আব্দুল আজিজের স্ত্রী শফিয়া বিবি, আশরাফ আলীর স্ত্রী বেনু বিবি জানান, আগামী ৫ই মে পঞ্চায়েত নির্বাচন। এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তাদের এলাকার খারিদা হরিদা গ্রামের তুণমূল কংগ্রেস (টিএমসি) দলের বর্তমান পঞ্চায়েত মোঃ আবু হোসেন মিয়াকে একই দলের যুব সংগঠনের সশস্ত্র কর্মীরা বুধবার গভীর রাতে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে সেগুন গাছ বাগানে নির্মমভাবে হত্যা করে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করেই টিএমসি কর্মিরা তাদের বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর করে। রাতেই তারা জীবনের ভয়ে পালিয়ে এসে বাংলাদেশের সীমান্ত সংলগ্ন গোরকমন্ডল এলাকার নামাটারী ও উচাটারী গ্রামে আশ্রয় নেন।
ভারতীয় খারিদা হরিদা ভোরাম জুনিয়র হাইস্কুলের ৭ম শ্রেণির শিক্ষার্থী পিংকি খাতুন, ৪র্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী আর্বিনা খাতুন বলেন, আমাদের স্কুলে পরীক্ষা চলছে। কিন্ত দেশে যেতে পারছিনা। বাড়িঘরে ফিরলেই তারা আমাদের প্রাণে মেরে ফেলার প্রকাশ্যেই হুমকি দিচ্ছে।
দেগারকমন্ডল সীমান্তের বাংলাদেশী আবেদ আলী, লিলিমা বেগম, আমির আলী জানান, মানবিক কারণে তাদেরকে আশ্রয় দিয়েছেন। নাওডাংগা ইউনিয়ন পরিষদের গোরকমন্ডল এলাকার ইউপি সদস্য মো: আনোয়ার হোসেন বলেন, প্রাণভয়ে যারা রাতেই বাংলাদেশে এসেছে তাদের আমরা সীমান্তের কিছু কিছু বাড়িতে আশ্রয় দিয়েছি।
লালমনিরহাট ১৫ বিজিবি গোরকমন্ডল বিওপি’র ক্যাম্প কমান্ডার হাবিলদার রেজাউল করিম ভারতীয়দের পালিয়ে আসার কথা স্বীকার করে বলেন, সীমান্তে টহল জোরদার করায় নতুন করে আর কেউ বাংলাদেশে প্রবেশ করতে পারছেন না। পরিস্থিতি মোকাবেলায় উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। পত্র দেয়া হয়েছে বিএসএফ কর্তৃপক্ষকে।

No comments

Powered by Blogger.