জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে উদ্বেগ জানাবে বাংলাদেশ

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশ চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত একটি দেশ। প্যারিস চুক্তি বাস্তবায়ন না হওয়ায় নিজেদের রাজস্ব ফান্ড খরচ করে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার লড়াই করতে হচ্ছে। এ জন্য ৩৬টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ কাজ করছে। প্যারিস চুক্তির আগে ডিএফআইডিসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা বাংলাদেশকে ফান্ড দিতো। এখন ওই ফান্ডও বন্ধ করে দিয়েছে তারা। এ জন্য বাংলাদেশ গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।
শিল্পোন্নত দেশগুলোকে এমন বার্তা দিতে বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনে অংশ নিতে পরিবেশ ও বনমন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর নেতৃত্বে উচ্চ পর্যায়ের টিম জার্মানির বন-এ এসেছে। পরিবেশ ও বন মন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন ২৮ সদস্যের বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল হাই লেভেল সেগমেন্টসহ বিভিন্ন সেশনে অংশ নেবে। প্রতিনিধি দলে আছেন- পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ড. হাছান মাহমুদ খন্দকার, পরিবেশ ও বন উপমন্ত্রী আব্দুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব, মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম, পরিবেশ ও বন সচিব ইশতিয়াক আহমেদ, অতিরিক্ত সচিব নূরুল কাদিরসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। এদের মধ্যে শুক্রবার হাছান মাহমুদ বনে এসে পৌঁছান। মন্ত্রিপরিষদ সচিব আসছেন বুধবার। পরিবেশ ও বন সচিব সবার আগে পরিবেশ অধিদপ্তর ও মন্ত্রণালয়ের কয়েক কর্মকর্তাকে নিয়ে কপ-২৩তে এসেছেন। পরিবেশ ও বনমন্ত্রী আজ শুরু হওয়া উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে অংশ নেবেন। বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল সূত্রে জানা গেছে, পরিবেশ ও বনমন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি বড় টিম গতকাল বন-এ এসে পৌঁছেছেন। ভ্রমণক্লান্তি কাটাতে বিশ্রাম নিয়েছেন তারা। ঠাণ্ডা আবহাওয়া ও ঝিরিঝিরি বৃষ্টির কারণে প্রতিনিধি দলের সদস্যরা হোটেলের বাইরে বের হননি। দুয়েক জন বাইরে বের হলেও মার্কেট বন্ধ থাকায় আবার হোটেল রুমে ফিরে যান। এদিকে গত বৃহস্পতিবার পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে কপ-২৩তে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ সম্পর্কে জানানো হয়। ওই সময় পরিবেশ ও বনমন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু সাংবাদিকদের জানান, এ ধরনের কনফারেন্সে বাংলাদেশের উপস্থিতি একান্ত প্রয়োজন। কারণ, আবহাওয়ার পরিবর্তনে যে দেশগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হবে বাংলাদেশ সেই দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম। তাই আমরা যাচ্ছি পুরনো কথাগুলোই বলার জন্য এবং কী অগ্রগতি হয়েছে, তা জানতে। তিনি জানান, কপ-২৩ তে আমাদের উদ্বেগ জানালেই একটি বিশেষ দেশের অবস্থান পরিবর্তিত হবে- এটা আমি বিশ্বাস করি না। এই পরিস্থিতিতেও বিশ্বব্যাংকসহ অন্যান্য ব্যাংকগুলো অর্থ ধার দেবে। কিন্তু দ্বিপক্ষীয় যে টাকাগুলো পেতাম যেমন- বৃটিশদের ডিএফআইডি, তা কিন্তু পাচ্ছি না। তাই আমি বলবো প্যারিস চুক্তির আগেই আমরা ভালো ছিলাম। বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল সূত্রে জানা গেছে, জলবায়ু সম্মেলনে গত কয়েক দিনে বাংলাদেশ তিনটি বডিতে সদস্য হিসেবে রি-ইলেকটেড হয়েছে। এর মধ্যে একটি হচ্ছে অভিযোজন ফান্ড বোর্ড। যেখানে ২২টি সদস্য দেশ রয়েছে। অন্যটি এক্সিকিউটিভ কমিটি অব লস অ্যান্ড ড্যামেজ। এই বডিতে রয়েছে ২০টি সদস্য দেশ। আরেকটি হচ্ছে কনসালটেটিভ গ্রুপ। এ গ্রুপেও ২০টি দেশ রয়েছে। বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের এক উচ্চ পর্যায়ের সদস্য মানবজমিনকে বলেন, কপ-২৩ তে আশার আলো দেখা যাচ্ছে না। শিল্পোন্নত দেশগুলোর সদিচ্ছা না থাকলে প্রতি বছর বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনে অনেক সিদ্ধান্ত হবে কিন্তু বাস্তবায়ন হবে না।

No comments

Powered by Blogger.