পুলিশ বাহিনীর সদস্যের অপরাধ- স্বাধীন তদন্তের বিকল্প নেই

জনগণের আস্থা অর্জনে পুলিশকেই আন্তরিক হতে হবে। পুলিশ বিভাগ জবাবদিহিবিমুখ থাকলে রাষ্ট্রের অন্যান্য সংস্থার পক্ষে তার ঘাটতি পূরণ করা সহজ নয়। পুলিশ নাগরিকের প্রাত্যহিক জীবনে একধরনের সামাজিক বিচারের সেবা দিয়ে থাকে। মানুষের সবচেয়ে বড় বন্ধু হতে হবে তাই পুলিশকেই। পুলিশের ভাবমূর্তি যত বেশি অমলিন রাখা যাবে, সমাজে শান্তিশৃঙ্খলা তত বেশি ভালোভাবে নিশ্চিত করা সম্ভব। কিন্তু সে জন্য পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে সজাগ হতে হবে, তাকে তার যথাযথ দায় নিতে হবে।
কোনো উচ্ছৃঙ্খল সদস্যকে বাঁচিয়ে বাহিনীর কোনো লাভ নেই। রাজধানীর আদাবর থানার এসআই রতনের বিরুদ্ধে আনা নারী নিগ্রহের অভিযোগ পুলিশি তদন্ত নাকচ করেছিল, কিন্তু বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি এখন তার প্রাথমিক সত্যতা খুঁজে পেয়েছে। বিচার বিভাগের প্রাথমিক তদন্তে প্রমাণিত হওয়ার মতো ঘটনাবলিকে যথা গুরুত্বের সঙ্গে পুলিশ বিভাগকে নিতে হবে। এই ঘটনার মধ্য দিয়ে পুলিশের নিজস্ব বা বিভাগীয় তদন্তের বিষয়টি বরাবরের মতোই প্রশ্নের মুখে পড়ল এবং স্বাধীন বা বিচার বিভাগীয় তদন্তের যৌক্তিকতা প্রমাণিত হলো। এর আগে ইভ টিজিংয়ে আত্মহননের ঘটনায় সারা দেশ বিচলিত হয়েছিল। আর এখন দেখি পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার ‘রিকশা থামিয়ে ছাত্রীর সঙ্গে কথা বলা ঠিক হয়নি’ মর্মে স্বীকার করেন।
সাধারণ মানুষের ন্যূনতম শ্রদ্ধার আসনে পুলিশ বাহিনীর অবস্থান ধরে রাখতে হলে বাহিনীকে তার অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা ধরে রাখতে হবে। বিপথগামী কোনো পুলিশ সদস্যকে বাহিনীর শক্তি দিয়ে আগলে রাখা আত্মঘাতী। ব্যাংক কর্মকর্তা রাব্বী ও সিটি করপোরেশনের পরিদর্শক বিকাশকে নিপীড়নের ঘটনায় পুলিশ মানুষকে হতাশ করেছে। মিরপুরে চুলায় ফেলে চা-দোকানিকে পুড়িয়ে হত্যায় যদিও পুলিশের তদন্ত কমিটি সত্যতা পেয়েছে; কিন্তু সামগ্রিক বিচারে যেকোনো দুর্বৃত্ত পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে ত্বরিত বিশ্বাসযোগ্য কোনো ব্যবস্থা গ্রহণে পুলিশ বিভাগ আগ্রহী—সেই বার্তা মানুষের কাছে নেই। পুলিশকে একটা আস্থার জায়গা অর্জন করতে হবে।

No comments

Powered by Blogger.