‘ভারতকে খুশি করতে ট্রানজিট ফি কমিয়ে দিয়েছে সরকার’ -বিএনপি

সরকারের নৈতিক ভিত্তি দুর্বল হওয়ায় ভারতকে খুশি করতে ট্রানজিট ও ট্রান্সশিপমেন্ট ফি কমিয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। একইসঙ্গে ট্রানজিট ও ট্রানশিপমেন্টের ফি পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়েছে বিএনপি। আজ বিকালে নয়াপল্টনস্থ দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান বিএনপির  মুখাপাত্র ও আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. আসাদুজ্জামান রিপন। তিনি বলেন, গত বুধবার ট্রানজিট ও ট্রানশিপমেন্টের ফি নিয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকে প্রতি টনে ১ হাজার টাকার পরিবর্তে কমিয়ে ৫৮০ টাকা ধার্য করা হয়েছে। বিএনপি ট্রানজিট ও ট্রানশিপমেন্টের বিরোধী নয়। তবে এর বিনিময়ে বাংলাদেশ কি পেল তা ভেবে  দেখতে হবে। রিপন বলেন, ভারত কেন্দ্র থেকেই তার বিভিন্ন অঙ্গ রাজ্যে যে পণ্য পরিবহন করে তা কোন রিলিফ কর্মসূচি নয়। ওই সব যদি রিলিফ কর্মসূচি হতো তাহলে তা বাংলাদেশ বিবেচনা করতে পারে। কিন্তু ট্রানজিট ও ট্রানশিপমেন্টের মতো বাণিজ্যিক কার্যক্রম কোনভাবেই রিলিফ কর্মসূচি ভাবার কোন কারণ নেই। তিনি বলেন, সরকারে, প্রশাসনে কিছু অতি বিদেশ বান্ধব কর্মকর্তা থাকতে পারে। তবে বাংলাদেশের মানুষ কোনভাবেই তা মেনে নেবে না। তারা চায় ভারত আমাদের সঙ্গে প্রতিবেশী সুলভ সম্পর্কের স্বার্থে আমাদের ভূমি ব্যবহার করে তারা যে লাভবান হচ্ছে তার উপযুক্ত মাশুল আমাদেরকে দিক। রিপন বলেন, স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে কখনও বন্ধুত্ব হয় না। সরকারের নৈতিক ভিত্তি দুর্বল থাকার কারণে তারা ভারতের কাছ থেকে ন্যায্য মাশুল আদায় করতে নতজানুতার পরিচয় দিচ্ছে। তবে ভারতের সঙ্গে ভাল সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য ন্যায্য মাশুল আদায় করতে হবে। তিনি বলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে সাড়ে ৭ শতাংশ ভ্যাটের মাধ্যমে বছরে মাত্র ৫০ কোটি টাকা আদায়ের জন্য সরকার মরিয়া হয়ে উঠেছিল। তারা কেন দেশের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে ভারতের সঙ্গে ট্রানজিটের ন্যায্য মাশুল আদায়ে এতটা আপসকামী তা জাতি জানতে চায়। জয়পুরহাট সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশী নিহতের প্রতিবাদ করে বিএনপির মুখপাত্র বলেন, বাংলাদেশ সীমান্তের ৫০ গজ অভ্যন্তরে ঢুকে বিএসএফ গুলি চালিয়েছে। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে কোন প্রতিবাদ জানানো হয়নি।  বাংলাদেশের জনগণ সরকারের এই নতজানু পদক্ষেপ মেনে নেবে না। তিনি বলেন, ২৪ দিন আগে চাঁপাইনবাবগঞ্জের তানোরের মুন্ডুমালা থেকে র‌্যাব-৫ বিএনপির ৪ কর্মীকে অপহরণ করেছিল। দীর্ঘ ২৪ দিন পর শুক্রবার তাদেরকে থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। গতকালও বাংলাদেশের যারা গুমের স্বীকার হয়েছেন তাদের খুঁজে  বের করতে জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থা বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। আমরাও সরকারের প্রতি শুধু বিএনপি নয়, অন্যান্য রাজনৈতিক দলের যেসব নেতাকর্মী গুমের শিকার হয়েছেন তাদের খুঁজে বের করতে সরকারকে নতুন করে উদ্যোগের আহ্বান জানাই। সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম আকবর খন্দকার, জলবায়ু বিষয়ক সম্পাদক আফজাল এইচ খান, সহ-দপ্তর সম্পাদক আবদুল লতিফ জনি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

No comments

Powered by Blogger.