প্রার্থীদের অযথা হয়রানি না করার নির্দেশ

সিটি নির্বাচনের প্রার্থীদের কোন ধরনের হয়রানি না করে প্রচারণায় সমান সুযোগ দেয়ার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ। তিনি বলেছেন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্পন্ন করতে সব ধরনের ব্যবস্থা করেছে কমিশন। এক্ষেত্রে কাউকে কোন ধরনের ছাড় দেয়া হবে না। গতকাল সকালে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। রাজধানীর খামারবাড়িতে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে ঢাকা উত্তরের রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ের পক্ষ থেকে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের নির্দেশ দিয়ে সিইসি বলেন, জনগণ যেন শান্তিপূর্ণভাবে আনন্দমুখর পরিবেশে ভোটকেন্দ্রে যেতে পারেন, তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারেন সেরকম পরিবেশ সৃষ্টি করুন। কেউ যেন অযথা হয়রানির শিকার না হন। প্রার্থীরা যেন সুন্দরভাবে তাদের প্রচারণা চালাতে পারেন সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখুন। ভোটকেন্দ্র সুরক্ষিত রাখুন। কোন বেআইনি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা যেন না ঘটতে পারে তা নিশ্চিত করুন। প্রার্থীদের উদ্দেশে কাজী রকিবউদ্দীন বলেন, আজ এই ঐত্যিহবাহী নগরীর দুটি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আমরা গণতন্ত্রের মূলমন্ত্র পরমত সহিষ্ণুতা ভোটারদের রায় খোলা মনে মেনে নেয়ার সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠা করে শান্তিপূর্ণভাবে, নিয়মতান্ত্রিকভাবে নির্বাচন করার ঐতিহ্য গড়ে তুলি। ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে গিয়ে পছন্দের প্রার্থী নির্বাচন করতে পারে সে সুযোগ সৃষ্টি করি। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীগণ যেন নির্বিঘ্নে প্রচারণা চালাতে পারে সেজন্য ব্যবস্থা নেয়ার চেষ্টা করি। ইতিপূর্বে ৬টি সিটি করপোরেশনের নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করেছি। সেখানে একে অপরের প্রতি সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে রায় মেনে নিয়েছেন। প্রার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আশা করি আপনারা এবারের নির্বাচনে আরও ভাল দৃষ্টান্ত স্থাপন করে এ ঐতিহ্যকে এগিয়ে নেবেন। নির্বাচনে সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য আমরা পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। প্রচারণার শুরু থেকেই অধিক সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন হয়েছে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের সংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়েছে। আরও আদালতের ব্যবস্থা করা হবে যাতে করে আচরণবিধি লঙ্ঘন করা না হয়। নির্বাচনের প্রতিটি ক্ষেত্রে, প্রতিটি সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করার ব্যবস্থা আছে। আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার সুযোগ আছে। আপনারা আইন ভঙ্গ করবেন না, নিজের হাতে তুলে নিয়ে বিপদগ্রস্ত করবেন না। বিষয়টি উচ্চ আদালতের নজরে আনুন। নিশ্চয় আপনারা সুবিচার পাবেন। সেনাবাহিনী মোতায়েনের ব্যাপারে তিনি বলেন, সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে ১৯শে এপ্রিল বৈঠকের পর সেনা মোতায়েনের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হবে। আমরা সর্বোচ্চ শান্তিপূর্ণ ব্যবস্থা নিশ্চিত করবো যেন প্রতিটি ভোটার নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারেন।
নির্বাচনী কাজে নিয়োজিত সরকারি কর্মকর্তাদের উদ্দেশে সিইসি বলেন, এবার নির্বাচনে অনেক বেশি প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। নির্বাচনের প্রতি সম্পৃক্ত সকল কর্মকর্তার প্রতি নির্দেশ- আপনাদের দায়িত্ব এ রাষ্ট্রীয় গুরুদায়িত্ব আইন অনুযায়ী নিয়মনীতি মেনে সম্পূর্ণ নিরপেক্ষভাবে নির্ভয়ে পালন করে দেশের প্রতি দেশবাসীর প্রতি আপনাদের ঋণ পরিশোধ করুন। নির্বাচনে কোন প্রকার কারচুপি ও প্রভাব খাটানোর সুযোগ নেই উল্লেখ করে সিইসি বলেন, আমি দৃঢ়তার সঙ্গে বলছি সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে অবাধ সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণভাবে ও নিরপেক্ষভাবে সম্পন্ন করার জন্য নির্বাচন কমিশন সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে, সর্বোচ্চ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কোন রকম ছাড় দেয়া হবে না। নির্বাচনের জন্য যে ভোটার তালিকা করা হয়েছে এতে ভূয়া ভোট দেয়ার সুযোগ নেই। এ নির্বাচনে অস্বচ্ছতার কোন সুযোগ নাই। এখানে সকলে উপস্থিত থাকবেন। পর্যবেক্ষক, সাংবাদিক ও এজেন্টরা থাকবেন। গণমাধ্যম কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, মিডিয়ার কাছে অনুরোধ সকল প্রার্থীর এলাকা যেন মিডিয়াতে প্রকাশ পায়। জনসংযোগে সবাই যেন সুযোগ পান। এ সময় বিটিভিকেও সকল প্রার্থীর প্রচারণায় সহায়তা করার অনুরোধ জানান প্রধান নির্বাচন কমিশনার। সভায় অন্য নির্বাচন কমিশনার ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

No comments

Powered by Blogger.