বহু ভাষাবিদ লির বর্ণাঢ্য রাজনীতি

আধুনিক সিঙ্গাপুরের রূপকার লি কুয়ান ইউ ছিলেন রাজনীতিবিদ ও আইনজীবী। তিনি ১৯৫৯ সাল থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তার দীর্ঘ শাসনামলে সিঙ্গাপুর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সবচেয়ে সমৃদ্ধশালী দেশে পরিণত হয়। লি ১৯২৩ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর চীনের ধনাঢ্য এক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পরিবারটি উনিশ শতক থেকে সিঙ্গাপুর গড়ে তোলার ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রেখে আসছিল। লি’র প্রথম ভাষা ইংরেজি। রাজনীতিতে যোগদানের পর তিনি চাইনিজ, মালয় ও তামিল ভাষা আয়ত্ত করেন।
সিঙ্গাপুরে শিক্ষাজীবন শেষে লি ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে যান। ১৯৫০ সালে তিনি ইংলিশ বারে ভর্তি হন। ব্রিটিশ উপনিবেশ সিঙ্গাপুরে ১৯৫০ দশকের প্রথম দিকে সাংবিধানিক সংস্কারের পর লি নবাগত দুই রাজনীতিবিদের সঙ্গে জোট বাঁধেন। যাদের সঙ্গে জোট বাঁধেন তারা হলেন ডেভিড সৌল মার্শাল ও লিম ইউ হক। তবে অল্পকাল পরেই তাদের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয় এবং লি তার নিজ দল পিপলস অ্যাকশান পার্টির (পিএপি) মহাসচিব হন। তার দলে এ সময় বেশ কিছু কমিউনিস্ট ছিলেন। তিনি বেশ কিছু বছর কমিউনিস্টদের সমর্থন পান। ১৯৫৫ সালে পরিষদের ৩২টি আসনের মধ্যে ২৫টি নির্বাচিত আসন রাখার বিধান চালু হয়। এ বছরই নির্বাচনে লি’র সাবেক সহকর্মীদের দল লেবার ফ্রন্ট ১৩টি আসন জেতে এবং পিএপি জিতে ৩টি আসন। পরের বছর সিঙ্গাপুরের স্বায়ত্তশাসন নিয়ে আলোচনা করতে লি লন্ডন যান।
কিন্তু আলোচনা ব্যর্থ হয়। সিঙ্গাপুরে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হয় এবং পিএপির কিছু নেতাকর্মী কারারুদ্ধ হন। ১৯৫৯ সালে সিঙ্গাপুরে নতুন সংবিধানের আওতায় যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় তাতে লি’র দল ব্যাপক বিজয় অর্জন করে। দলটি ৫১ আসনের মধ্যে ৪৩টিতেই জয়লাভ করে। কিন্তু লি তার দলের নেতাকর্মীদের ব্রিটেন কারামুক্তি না দিলে সরকার গঠন করতে অস্বীকার করেন। ১৯৬৩ সালে লি’র নেতৃত্বে সিঙ্গাপুর নবগঠিত ফেডারেশন অব মালয়েশিয়ায় যোগ দেয়। কিন্তু একপর্যায়ে সিঙ্গাপুরে চাইনিজ ও মালয়দের মধ্যে জাতিগত দাঙ্গা শুরু হয়। এরই ধারাবাহিকতায় লি ১৯৬৫ সালে ঘোষণা দেন সিঙ্গাপুরকে অবশ্যই ফেডারেশন ত্যাগ করতে হবে। সিঙ্গাপুর স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আÍপ্রকাশ করে এবং লি হন এর প্রথম প্রধানমন্ত্রী। ১৯৯২ সাল পর্যন্ত তিনি পিএপির নেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এএপি।

No comments

Powered by Blogger.