থেমে গেল স্বপ্নের চরকা

চরকায় সুতো কেটে কেটে তাঁতী যেমন আপন মনে কাপড় বুনেন, সিঙ্গাপুরকে তেমনি স্বপ্ন বোনা শিখিয়েছিলেন লি কুয়ান ইউ। আধুনিক, উন্নত, পরিচ্ছন্ন সবুজ সিঙ্গাপুর গড়ার রূপকার ও কর্মকার হয়েছিলেন তিনি। জীর্ণ, ঘুমন্ত, কাঙাল দ্বীপবাসীকে তৃতীয় বিশ্ব থেকে বের করে প্রথম সারির বিশ্বসেরা রাষ্ট্রের নাগরিক বানিয়েছেন তিনি। সোমবার ৯১ বছর বয়সে থেমে গেছে সেই স্বপ্নের চরকা জাতিস্রষ্টার জীবনকুষ্ঠি (১৯২৩-২০১৫)
১৯২৩ : ১৬ সেপ্টেম্বর সিঙ্গাপুরে এক চীনা ধনী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা লি চিন কুন একটি তেল কোম্পানির ম্যানেজার। মা চুয়া জিম নিও।
১৯৩৬-৪২ : রাফেলস ইন্সটিটিউশনে লেখাপড়া করেন। পুরো দ্বীপাঞ্চলের মধ্যে তিনি পরীক্ষায় প্রথম হন।
১৯৪২ : ১৫ ফেব্রুয়ারি জাপান সিঙ্গাপুর আক্রমণ করে। ১৮-২২ ফ্রেব্রুয়ারি জাপানি সৈন্যরা ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ চীনা সিঙ্গাপুরি সৈন্য হত্যা করে। এ বর্বরতা কাছ থেকে পর্যবেক্ষণ করেন লি কুয়ান।
১৯৪৩-৪৪ : জাপানের ইংরেজি প্রচারপত্র হোবুদুর সম্পাদক হিসেবে কাজ করেন।
১৯৪৬ : সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়ার মধ্যে সিনিয়র ক্যামব্রিজ পরীক্ষায় প্রথম হয়ে বৃত্তি নিয়ে লন্ডনের স্কুল অব ইকনোমিক্সে পড়তে যান।
১৯৪৭-৪৯ : ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে আইনে পড়েন।
১৯৪৭ : ২৩ ডিসেম্বর ক্যামব্রিজ ছাত্রী কোয়া গিওক চু-কে গোপনে বিয়ে করেন।
১৯৫০ : ব্যারিস্টার হয়ে সিঙ্গাপুর ফিরে যান।
১৯৫৫ : স্ত্রী ও ছোটভাইকে নিয়ে নিজস্ব ’ল ফার্ম গঠন করেন।
১৯৫৯ : সিঙ্গাপুরের প্রথম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন। তার দল ৫১ আসনের ৪৩টিতে জয়ী হয়।
১৯৬০ : দুর্নীতিবিরোধী কঠোর আইন পাস ও স্বচ্ছ-কার্যকর সরকার প্রতিষ্ঠা করেন।
১৯৬১ : বিদেশী বিনিয়োগে শিল্পোন্নত সিঙ্গাপুর গড়তে অর্থনৈতিক উন্নয়ন বোর্ড গঠন করেন।
১৯৬৫ : ৯ আগস্ট সিঙ্গাপুর পৃথক হয়ে যায়।
১৯৯০ : প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে সরে দাঁড়ান।
১৯৯০-২০০৪ : সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করেন।
২০০৪ : লির বড় ছেলে লি সিয়েন লুং প্রধানমন্ত্রী হন।
২০১০ : ২ অক্টোবর লির স্ত্রী কোয়া গিওক চু মারা যান।
২০১১ : মন্ত্রিসভার উপদেষ্টা থেকে পদত্যাগ করে নির্বাচিত এমপি হয়ে কাজ করেন।
২০১৩ : ফেব্রুয়ারি মাসে অসুস্থ হয়ে পড়েন।
২০১৫ : ৫ ফেব্রুয়ারি হাসপাতালে ভর্তি হন। মারাত্মক নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত লিকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। ২৩ মার্চ তিনি ইন্তেকাল করেন।

No comments

Powered by Blogger.