থাইল্যান্ডে চূড়ান্ত বিক্ষোভ আজ

থাইল্যান্ডে রোববার (আজ) সাধারণ নির্বাচন বন্ধ করতে রাজধানী ব্যাংককের ব্যস্ত পর্যটন এলাকা চায়নাটাউনে শনিবার সরকারের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত ও ব্যাপক বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে বিরোধী দলগুলো। এ অবস্থায় দেশটিতে আরও সহিংসতার আশংকা করা হচ্ছে। এদিকে বিরোধী দলগুলোর অব্যাহত আন্দোলনের মধ্যেও নির্বাচনের সিদ্ধান্তে অটল রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ইংলাক সিনাওয়াত্রা। বিরোধী দলগুলোর অভিযোগ নির্বাচনের নামে পুনরায় ক্ষমতা দখল করতে চাচ্ছে সরকার। এজন্য তারা এই নির্বাচন ঠেকানোর চেষ্টা করছে। নির্বাচনের একদিন আগে শনিবার ব্যাংককের সড়কগুলোতে শান্তিপূর্ণ অবরোধের ডাক দিয়েছেন বিরোধীদলীয় নেতা সুথেপ থাগসুবান। তিনি ভোটারদের ভোট দিতে বাধা দেবেন না বলেও জানিয়েছে। শুক্রবার রাতে সুথেপ বলেন, ‘আমাদের লোকজন ভোট কেন্দ্রের কাছে যাবে না। তারা রাস্তায় দাঁড়িয়ে শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ প্রদর্শন করবে। তবে কেউ যদি বাধা দিতে আসে তবে ঝামেলা বাধতে পারে।’ থাই সংবাদপত্রগুলো জানিয়েছে, নির্বাচনের দিন বিক্ষোভকারীরা দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ব্যালটপেপার সরবরাহ কেন্দ্রগুলো বিশেষ করে পোস্ট অফিসগুলোতে অবস্থান নেবে। ওই অঞ্চলে বিরোধী নেতা সুথেপ শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে।
এদিকে জাতিসংঘ থাইল্যান্ডে শান্তিপূর্ণভাবে ভোট অনুষ্ঠানের আহ্বান জানিয়েছেন। দেশটিতে গত নভেম্বর থেকে শুরু হওয়া রাজনৈতিক সহিংসতায় এরই মধ্যে ১০ জন প্রাণ হারিয়েছে। আহত হয়েছে আরও ৫৭৭ জন। গত নভেম্বর থেকে প্রধানমন্ত্রী ইংলাক সিনাওয়াত্রার পদত্যাগের দাবিতে অব্যাহত আন্দোলন শুরু করেছে থাইল্যান্ডের বিরোধী দলগুলো। বিক্ষোভের মুখে নতুন নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হয়। প্রধান বিরোধী দল ডেমোক্রেটিক পার্টি এ নির্বাচন বর্জন করেছে। তারা নির্বাচন বয়কট করায় রোববার ভোটগ্রহণ করা হলে ক্ষমতাসীন পুয়ে থাই পার্টির জয় প্রায় নিশ্চিত। এ কারণেই বিরোধীরা এ নির্বাচন বানচালে অনড়। তারা নির্বাচন প্রক্রিয়ায় সংস্কার চাইছে। এর আগে গত রোববার ব্যাংককে বিক্ষোভকারীদের বাধার মুখে ৫০টি কেন্দ্রের মধ্যে ৪৫টি কেন্দ্রেই আগাম ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়েছিল। বিক্ষোভকারীরা কাল মূল ভোটের দিনও ভোটারদের কেন্দ্রে যেতে বাধা দেবে বলে আগেভাগেই হুশিয়ারি দিয়ে রেখেছে। আইনশৃংখলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ভোটের দিন ব্যাংককে ১০ হাজার পুলিশ মোতায়েন করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে পাঁচ হাজার সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। এ সংখ্যা আরও বৃদ্ধি করা হবে।গত দুই দশক ধরে সাধারণ নির্বাচনে পরাজয়ের পর থাইল্যান্ডের সবচেয়ে পুরানো রাজনৈতিক দল ডেমোক্রেটিক পার্টির বিরুদ্ধে গণতন্ত্রের বিপরীতে অবস্থান নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। রোববারের বিতর্কিত নির্বাচন বর্জনের প্রেক্ষাপটে বিশেষজ্ঞরা এ অভিযোগ করছেন। দলটি চলমান সরকারবিরোধী বিক্ষোভে অংশ নিয়েছে। বিক্ষোভকারীরা একটি অনির্বাচিত ‘গণপরিষদ’র পথ প্রশস্ত করতে প্রধানমন্ত্রী ইংলাক সিনাওয়াত্রার পদত্যাগ চান। তারা আজকের নির্বাচন ব্যাহত করারও হুমকি দিয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.