মাঠ নিয়ে উদ্বিগ্ন বাফুফে

‘মেসি-তেভেজদের মাঠে বসে দেখব, তাই টিকিট কিনতে এসেছি’—আর্জেন্টিনা-নাইজেরিয়া প্রীতি ম্যাচের টিকিট হাতে পেয়ে নারায়ণগঞ্জের ব্যবসায়ী শরিফুল ইসলাম উচ্ছ্বাসভরে বলছিলেন কাল। আইএফআইসি ব্যাংকের মতিঝিল শাখার সামনে গতকাল বিকেলে গিয়ে অবশ্য খুব বেশি ভিড় চোখে পড়েনি। গত বিশ্বকাপ ক্রিকেটের টিকিট নিয়ে যতটা উন্মাদনা ছিল, ৬ সেপ্টেম্বর বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠেয় মেসিদের প্রীতি ম্যাচ নিয়ে তা ততটা দেখা গেল না। আইএফআইসি ব্যাংকের মতিঝিল, ধানমন্ডি, গুলশান, কারওয়ান বাজার, মিরপুর, উত্তরা, ইসলামপুর ও বসুন্ধরা শাখায় কাল থেকে শুরু হয়েছে টিকিট বিক্রি।
আইএফআইসি ব্যাংক মতিঝিল শাখার কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম দিন শেষে জানালেন, ‘৫০টি টিকিট বিক্রি হয়েছে।’ শুধু মতিঝিলে নয়, কোনো শাখাতেই কাল আশানুরূপ টিকিট বিক্রি হয়নি। আর্জেন্টিনা-নাইজেরিয়া ম্যাচের আয়োজক কমিটির চেয়ারম্যান আনোয়ারুল হক হেলাল এতে অবশ্য হতাশ নন, ‘এত তাড়াতাড়ি টিকিট নিয়ে উন্মাদনা হবে না। তা ছাড়া বৃষ্টি-বাদলের দিন বলেও হয়তো অনেকে টিকিট কিনতে আসেনি। আশা করছি, শেষ দিকে টিকিট নিয়ে কাড়াকাড়ি শুরু হয়ে যাবে।’ টিকিট বিক্রি নিয়ে আশাবাদী হলেও মাঠ খুব বেশি আশাবাদী করতে পারছে না বাফুফের কর্মকর্তাদের। আর মাত্র ২৬ দিন সময় হাতে আছে। অথচ মাঠের পরিচর্যা, ড্রেসিংরুম ও প্রেসবক্স সাজানো-গোছানোর জন্য দেনদরবার করেই চলেছেন জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সঙ্গে। বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের প্রশাসক মোহাম্মদ ইয়াহিয়া কাজে হাত দিতে উন্মুখ হয়ে বসে আছেন। কিন্তু এনএসসি থেকে অনুমতি মিলছে না বলে হতাশ, ‘এনএসসি থেকে আমি এখনো মাঠ পরিচর্যা করার অনুমতি পাইনি। মাঠের কাজও তাই শুরু করতে পারছি না। সময়স্বল্পতার কারণে হয়তো পুরোপুরি আন্তর্জাতিক মানের খেলার উপযোগী মাঠ তৈরি করতে পারব না।’ একই কথা বাফুফের মাঠ পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান বাবুলেরও, ‘আমরা বারবার এনএসসির কাছে তাগাদা দেওয়া সত্ত্বেও তারা বিষয়টাকে গুরুত্ব দিচ্ছে না। আমি গতকালও (পরশু) রহমান সাহেবকে মাঠ ও ড্রেসিংরুমের সংস্কারের কথা জানিয়েছি।’
ড্রেসিংরুমটাও আন্তর্জাতিক মানের নয় বলে ওটারও বিশেষ সংস্কারের প্রয়োজন। এ ব্যাপারে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) আবদুর রহমানের সঙ্গে বারবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয় মুঠোফোনে। তিনি ফোন ধরেননি। তাঁকে এসএমএস করে ফোন করা হয়েছে। তার পরও ফোন ধরেননি।
আগামী ১৫ অথবা ১৬ আগস্ট আর্জেন্টিনা এবং নাইজেরিয়ার পরিদর্শক দল ঢাকা আসবে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম পরিদর্শনে। সবকিছু দেখে ওই কর্মকর্তারা সন্তুষ্ট না হলে ভেন্যু নিয়ে সংশয়েই পড়ে যাবে বাফুফে। বাফুফের সহসভাপতি ও জাতীয় দল ব্যবস্থাপনা কমিটির চেয়ারম্যান বাদল রায় বিষয়টি নিয়ে বেশ চিন্তিত, ‘আমরা মনে করি, এটা বিশ্বকাপ আয়োজনের চেয়েও বড় একটা ব্যাপার। মাঠ দেখে তারা কী সিদ্ধান্ত দেবে, সেটা বড় কথা নয়, এটা তো আমাদের দেশের ভাবমূর্তিরও একটা ব্যাপার।’
সত্যিই তা-ই। কারণ, আর্জেন্টিনা ও নাইজেরিয়া যদি মাঠ দেখে খুশি না হয়, আর সে জন্য যদি নেতিবাচক কোনো সিদ্ধান্ত নেয় তারা এই প্রীতি ম্যাচের ব্যাপারে; সেই লজ্জা বাফুফের হবে না, হবে বাংলাদেশের!

No comments

Powered by Blogger.