এই মেসি চাপও জিততে জানেন

২৪ বছরের এইটুকু কাঁধে কত বড় প্রত্যাশার পাহাড়! সবচেয়ে যে জিনিসটায় অনভ্যস্ত তিনি, সেই সমালোচনাও শুনতে হয়েছে। যে ছবিটা তাঁর কাছে একেবারেই অচেনা—শুনতে হয়েছে দর্শকদের দুয়ো। কিন্তু লিওনেল মেসি চাপে ভেঙে পড়েননি। হতাশার অন্ধকার থেকে তেড়েফুঁড়ে বেরিয়ে এসেছেন, মেঘের আড়াল থেকে যেভাবে বেরিয়ে আসে সূর্য।
কাল মেসির খেলা দেখে মুগ্ধ সবাই। সবচেয়ে বেশি মুগ্ধ সার্জিও বাতিস্তা। কোচ হিসেবে খেলোয়াড়দের সবচেয়ে কাছে থেকে দেখেন। দেখেন বলেই জানেন, প্রতিটি সমালোচনা কীভাবে রক্তাক্ত করেছে মেসির হূদয়। বাইরে থেকে বালক বালক চেহারার মেসি ভেতরে ভেতরে এত শক্ত, সেটাও জানা হয়ে গেল বাতিস্তার।
কাল ম্যাচের পর বাতিস্তা বলেছেন, ‘ও দুর্দান্ত খেলল। এই ম্যাচের আগে আমরা দলগত আর খেলোয়াড়দের প্রত্যেকের মানসিক অবস্থা নিয়ে অনেক কথা বলেছি। আমাদের আত্মবিশ্বাস ফিরে পাওয়া জরুরি ছিল। মেসিই দেখিয়ে দিল, এমন পরিস্থিতিতে কীভাবে ঘুরে দাঁড়াতে হয়। ও কখনোই হার মানতে চায় না।’
মেসি নিজে কী বলছেন? ‘এখন আমাদের জন্য অন্য এক কোপা শুরু হলো। আজ আমাদের যাঁরা সমর্থন দিয়েছেন তাঁদের প্রত্যেককে ধন্যবাদ জানাই। এত দিন আপনাদের এই ভালোবাসার অভাব আমরা তীব্রভাবে অনুভব করেছি। করডোবার (ম্যাচের ভেন্যু) মানুষের প্রতি আমি এবং আমরা কৃতজ্ঞ।’ সমালোচকদের দিয়েছেন ছোট্ট জবাব, ‘আর্জেন্টিনার ভালো আমাদের চেয়ে বেশি আর কেউই চায় না।’
বাতিস্তা আশাবাদী, এখন থেকে নতুন আর্জেন্টিনাকে দেখবে সবাই, ‘শুধু ব্যক্তিগতভাবেই নয়, দলগতভাবেও খেলোয়াড়েরা আসলে ভালো খেলেছে। কখনো কখনো সেটি ছিল দুর্দান্ত। প্রথম দুই ম্যাচে খুব ভালো খেলিনি আমরা। এ অবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে দলটা তাদের মানসিক শক্তি দেখিয়ে দিয়েছে। খেলোয়াড়দের সবার দৃষ্টিভঙ্গিও ছিল ইতিবাচক।’
চাপের মুখেই দলটা সেরা খেলা বের করে আনতে পেরেছে দেখেই কোচ সবচেয়ে খুশি, ‘আমরা সবাই জানতাম, এটা আমাদের জন্য ফাইনাল ম্যাচ। সৌভাগ্যবশত গোলও পেয়েছি আমরা। সেই মানের ফুটবল খেলেছি, যেটা আমরা খেলতে চাইছিলাম।’
সব মিলে ৩টি গোল করে টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়ে গেছেন সার্জিও আগুয়েরো। তাঁর কথা, ‘এই জয়টা আমাদের ভীষণ দরকার ছিল। এটি আমরা দারুণ উপভোগ করছি। আমরা খুব, খুবই ভালো খেলেছি। আমরা গোলের দেখা পেয়েছি, যেটা আগের ম্যাচগুলোতেও পাওয়া উচিত ছিল। তবে সবচেয়ে বড় কথা, আমরা আজ দারুণ ফুটবল খেলেছি।’

No comments

Powered by Blogger.