পোলার্ড-স্মিথের দিন

ডেভন স্মিথের কি মন খারাপ? সেঞ্চুরি করেছেন। দলও জিতেছে ৪৪ রানে। মন খারাপের প্রশ্ন আসছে কেন?
প্রশ্নটা আসছে তাঁর সেঞ্চুরিতে দল জিতেছে বলেই। ৩৬তম ম্যাচে এসে স্মিথ পেলেন ক্যারিয়ারের প্রথম ওয়ানডে সেঞ্চুরি। বাংলাদেশের বিশ্বকাপ উন্মাদনায় বিষ ছিটিয়ে যাওয়া ওয়েস্ট ইন্ডিজও কোয়ার্টার ফাইনালের পথে এগিয়ে গেল আরেক ধাপ। কিন্তু ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কারটি স্মিথের হাতে উঠল না। এই আফসোস? মোটেই না। আফসোস থাকবে কেন? ম্যাচসেরার পুরস্কারটি তো অন্য কেউ নন, পেয়েছেন সতীর্থ কাইরন পোলার্ড।
আর স্মিথ নিজে বিচারক থাকলেও কি ম্যাচসেরার পুরস্কারটি সন্তুষ্ট মনে সতীর্থ পোলার্ডের হাতেই তুলে দিতেন না? সকালে আভাস-ইঙ্গিত দিয়েও যে কাল মোহালিতে আরেকটি আইরিশ রূপকথা হলো না, তার প্রধানতম কারণ তো পোলার্ডই।
কাল সকালেই একটা দুঃসংবাদ সঙ্গী হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজের। তলপেটের সমস্যার কারণে খেলতে পারলেন না ওপেনার ক্রিস গেইল। গেইলের অনুপস্থিতিতে ডেভন স্মিথের সঙ্গে ওপেন করতে নামেন শিবনারায়ণ চন্দরপল। গেইলকে হারানোর ভয় হোক কিংবা আয়ারল্যান্ডের বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিং, ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুই ওপেনার শুরুটা করেন খুবই ধীরগতিতে। প্রথম ১০ ওভারে রান মাত্র ২৮! আরেকটি আইরিশ রূপকথা রচনার আভাস।
এই আভাস পোলার্ড মাঠে নামার আগ পর্যন্তই ছিল। স্মিথ-চন্দরপলের উদ্বোধনী জুটি ভাঙে ৮৯ রানে গিয়ে। ৬২ বলে ৩৫ চন্দরপলকে দিয়ে এই জুটি ভাঙেন কেভিন ও’ব্রায়েন। তিন বল পর লারার ‘ক্লোন’ ড্যারেন ব্রাভোও আউট (০)। সারওয়ানও ফিরে যান দ্রুতই। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৩২ ওভারে ১৩০/৩! কত দূর আর যেতে পারত ওয়েস্ট ইন্ডিজ, বড়জোর ২২০-২৩০!
এরপরই পোলার্ড-ঝড়। আর তাতেই ওয়েস্ট ইন্ডিজ পেল ২৭৫ রানের পুঁজি। ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়ল আয়ারল্যান্ড! ব্যাটিং-অর্ডারে প্রমোশন পেয়ে পাঁচে নামা পোলার্ড হাফ সেঞ্চুরি করেন ৩৫ বলে। শেষ পর্যন্ত মাত্র ৫৫ বলে ৯৪। ৫ ছক্কা, ৮ চার।
পোলার্ড-প্রতাপে শুরুতে ঝিমানো স্মিথের ব্যাটও দুরন্ত হয়ে ওঠে। চতুর্থ উইকেটে তাঁরা মাত্র ১০.৩ ওভারে গড়েন ৮৮ রানের জুটি। এর ৫৪-ই পোলার্ডের।
১০৭ রান করা স্মিথের আফসোস না থাকতে পারে, পোলার্ডের নিশ্চয়ই আছে। আর একটা ছক্কা হলে তো জয় ও ম্যাচসেরার পুরস্কারের সঙ্গে পেতেন ক্যারিয়ারের প্রথম ওয়ানডে সেঞ্চুরির তৃপ্তিও।
২৭৬ রানের চ্যালেঞ্জের পথেও অবশ্য ভালোই লড়ে যাচ্ছিল আয়ারল্যান্ড। ৮৬ রানে ৩ উইকেট হারানোর পরও তাদের স্বপ্ন দেখাচ্ছিল এড জয়েস ও উইলসন জুটি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পারেননি তাঁরা। পারেনি আয়ারল্যান্ড। আটকে যায় ২৩১ রানে। ২০০৭ বিশ্বকাপ ইংল্যান্ডের হয়ে খেলা জয়েস ৮৪ আর উইলসন করেন ৬১ রান।

No comments

Powered by Blogger.