বার্সার রাতটা হলো মেসিরও

পুরো ম্যাচে মেসি ‘মেসি’র মতো খেললেন শেষ পাঁচ মিনিট। আর তাতেই ছারখার হারকিউলিস। গোলের জন্য হাহাকার করতে থাকা মেসি দুই মিনিটের (৮৭ ও ৮৯) মধ্যে পেয়ে গেলেন দুই গোল। হারকিউলিসকে তাদের মাঠে ৩-০ গোল হারিয়ে বার্সেলোনা শুধু প্রতিশোধই নিল না, এই জয় দিয়ে ছুঁয়ে ফেলল রিয়াল মাদ্রিদের স্বর্ণযুগের এক রেকর্ড। এ নিয়ে স্প্যানিশ লিগে টানা ১৫ জয় তুলে নিল বার্সেলোনা। আলফ্রেডো ডি স্টেফানোর রিয়াল যে কীর্তি গড়েছিল ১৯৬০-৬১ মৌসুমে।
বার্সেলোনার সামনে এখন ডি স্টেফানোদের ছাপিয়ে যাওয়ার সুযোগ। মাদ্রিদেরই আরেক দল অ্যাটলেটিকোর বিপক্ষে আগামী শনিবার তাদের পরের ম্যাচ।
হারকিউলিস অবশ্য হুংকারই ছেড়েছিল। ম্যাচের আগে নেলসন ভালদেস বলেছিলেন, বার্সেলোনাকে হারানো অবশ্যই সম্ভব। প্রথম বিভাগে নবাগত দলটির প্রেরণা ছিল গত বছরের ১১ সেপ্টেম্বর, যেদিন বার্সেলোনাকে তাদেরই মাঠে হারিয়ে এসেছিল ২-০ গোলে।
পরশু ফিরতি ম্যাচেও ভালদেস ভয়ই পাইয়ে দিয়েছিলেন বার্সাকে। একের পর এক আক্রমণ করেও বার্সা যখন হারকিউলিসের রক্ষণদেয়ালে চিড় ধরাতে পারছে না, সেই সময় আকস্মিক পাল্টা-আক্রমণে ভালদেসের হেড সুবিধাজনক জায়গায় পেয়েছিলেন ডেভিড ত্রেজেগে। কিন্তু বল জালে ঢোকাতে পারেননি। সেই স্নায়ুর পরীক্ষা পেরিয়ে বার্সাকে পেদ্রো তাঁর ১২তম লিগ গোল করে এগিয়ে দেন ৪৩ মিনিটে।
তবে প্রথমার্ধটি হতাশায়ই কাটে বার্সার। সবচেয়ে হতাশার নাম ছিলেন মেসি নিজেই। যেন নিজের ছায়া হয়ে ছিলেন। এমন কিছু ভুল করেছেন, যেটি মেসির সঙ্গে বেমানান। অবশ্য ভাগ্যও কিছুটা বঞ্চিত করেছে তাঁকে। মেসি নিজেও একসময় ধৈর্য হারিয়ে ফেলেছিলেন। ভাষ্যকারেরাও বলছিলেন, আজকের দিনটা মেসির নয়।
কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধের শেষে হারকিউলিস ১০ জনের দলে পরিণত হওয়ার সুযোগ কাজে লাগিয়ে ঝলসে ওঠেন মেসি। বক্সের ডান প্রান্তে জটলায় বল পেয়ে কোনাকুনি শটে বল ঢুকিয়ে দেন জালে। হারকিউলিস ওই গোলেই হারিয়ে ফেলে সব শক্তি। তার ওপর দানি আলভেজের ক্রসে হারকিউলিসের কফিনে শেষ পেরেক ঠোকেন মেসি।
লিগে মেসির ২১তম গোলটি ছিল কোচ পেপ গার্দিওলার অধীনে বার্সার ৪০১তম গোল। রিয়ালের রোনালদো মাত্র এক গোলে এগিয়ে মেসির চেয়ে। মৌসুমে অবশ্য ৩২ ম্যাচে ৩৭ গোল করে মেসিই এগিয়ে। পয়েন্ট টেবিলে রিয়ালের চেয়ে সাত পয়েন্ট এগিয়ে গিয়েছিল বার্সাও। কাল রাতে অবশ্য রিয়াল ব্যবধান কমানোর সুযোগ পেয়েছিল ওসাসুনার বিপক্ষে।
যেটি মেসির সবচেয়ে বাজে ম্যাচের একটি হয়ে উঠতে যাচ্ছিল, শেষ পর্যন্ত তাতে পেদ্রোকে ছাপিয়ে নায়ক তিনি। ‘মাত্র ২৩ বছর বয়সে ও ক্লাবের হয়ে ১৬৪টি গোল করল। বার্সার সর্বকালের সর্বোচ্চ গোলদাতার তালিকায় ও এখনই চার নম্বরে। এভাবে খেলতে থাকলে ও তো সব রেকর্ড গুঁড়িয়ে দেবে’—সহাস্য শংসাবাণীটি গার্দিওলার। তবে মেসির দ্বিতীয় গোলটির আগ পর্যন্ত যে আতঙ্কে ছিলেন, বার্সা কোচ সেটি অস্বীকার করতে পারেননি, ‘বিরতির আগে ১-০-তে এগিয়ে যাওয়ায় উপকার হয়েছে। কিন্তু এটা সব সময়ই বিপজ্জনক স্কোরলাইন। একটা ভুলও আপনাকে বিপদে ফেলতে পারে। তবে ফারিনোসের লাল কার্ড (দ্বিতীয়ার্ধের ৮৫ মিনিটে) আমাদের অনেক কাজে দিয়েছে।’
লাল কার্ড দিয়ে অভিষেক হলো মার্কো ফন বোমেলের, তার পরও রবিনহো ও ইব্রাহিমোভিচের গোলে সিরি ‘আ’তে কাতানিয়ার বিপক্ষে ২-০ গোলে জিতেছে এসি মিলান। বুন্দেসলিগায় ভেরডার ব্রেমেনকে ৩-০ গোলে হারিয়ে তিনে উঠে এসেছে বায়ার্ন মিউনিখ।

No comments

Powered by Blogger.