ব্যবসার প্রতিযোগিতায় টিকতে জ্ঞানমুখী হওয়ার তাগিদ -ব্র্যান্ড ফোরামের নলেজ সেন্টার উদ্বোধন

বর্তমানের প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে ব্যবসা-বাণিজ্যসহ সবকিছুর জন্যই মানুষের জন্য রয়েছে মাত্র দুটি বিকল্প সম্ভাবনা। একটি হচ্ছে, সবকিছু হারিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া। অন্যটি হলো, জয়ী হতে বদলানো। এ জন্য জ্ঞানের ভাণ্ডার সমৃদ্ধ করে পরিবর্তন আনতে হবে ব্যবসা-বাণিজ্যসহ সবকিছুরই প্রথাগত চিন্তাভাবনায়।
আর এই বিবেচনা সামনে রেখে বাণিজ্য, বিপণন, ব্র্যান্ড, কৌশল ও সৃষ্টিশীলতা বিষয়ে জ্ঞানভাণ্ডার (নলেজ সেন্টার) চালু করেছে বাংলাদেশ ব্র্যান্ড ফোরাম। গুলশানে ফোরামের নিজস্ব কার্যালয়ে গতকাল শনিবার এ নলেজ সেন্টারের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানিবিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী। ব্র্যান্ড ফোরামের প্রধান উপদেষ্টা ফারহাত আনোয়ার এ সময় নলেজ সেন্টার প্রতিষ্ঠার বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বলেন, ‘এ ধরনের একটি সেন্টার প্রতিষ্ঠা আরও অনেক আগেই হওয়ার দরকার ছিল।’ তবে দেরিতে হলেও বেসরকারি উদ্যোগে তা হওয়ার জন্য তিনি খুশি। এ সেন্টার সৃষ্টিশীলতাসহ ব্যবসা-বাণিজ্যে একে অপরের কাজে লাগবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, সম্ভাবনাময় বাংলাদেশের উন্নতির পথে অন্যতম অন্তরায় হচ্ছে অজ্ঞানতা। যে বিষয়ে যিনি যা-ই করতে যান না কেন, প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ব্যবসা-বাণিজ্য ও পণ্য তৈরিতে অনেক সময়ই তাঁদের পক্ষে সম্ভব হয় না। এই বিবেচনা থেকে এ দেশের মানুষের উপকারের জন্যই নলেজ সেন্টার ধারণার সূত্রপাত।
তরুণদের প্রশিক্ষণ, সেমিনার, নেতৃত্ব সম্মেলন (লিডারশিপ সামিট), মাসিক ব্যবসায় প্রকাশনা, ব্র্যান্ড পুরস্কার, কলা ও সংস্কৃতিকে বিশ্বমানে নিয়ে যাওয়া, স্থানীয় উদ্যোক্তাদের সাফল্যগাথা তুলে ধরা, স্থানীয় তত্ত্বের উন্নয়ন ও নতুন নতুন তত্ত্ব দেওয়া, স্থানীয় বাজার বোঝা ও ভোক্তাদের অধিকার সংরক্ষণে কাজ করবে নলেজ সেন্টার।
ব্র্যান্ড ফোরামের প্রধান উপদেষ্টা ফারহাত আনোয়ার বলেন, ‘দেশে ভালো ব্যবসায় থাকলেও মহত্ ব্যবসায়ী খুব বেশি নেই। প্রতিভাবান লোক থাকা সত্ত্বেও সেই প্রতিভার কোনো মূল্যায়ন করা হয় না। কথা দিয়ে তা না রাখাটাই অনেকের অভ্যাস। অন্যদিকে পণ্য উত্পাদন ও বিপণনে ভোক্তাকে তেমন মর্যাদা দেওয়া হয় না। এসবের পরিবর্তন আজ জরুরি।’
ফারহাত আনোয়ার জানান, স্থানীয় কোম্পানিকে বিশ্বমানে উন্নীতকরণ, দীর্ঘ মেয়াদের জন্য ব্যবসা-বাণিজ্যকে প্রসারিত করা, ব্যবসায়ের পাশাপাশি সমাজে সুনাগরিক হিসেবে প্রতিষ্ঠা ও সমাজের প্রতি দায়িত্ব পালনের বিষয়টিও নলেজ সেন্টার প্রতিষ্ঠার অন্যতম কারণ।
নলেজ সেন্টারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ইউনিলিভারের ব্র্যান্ড অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের পরিচালক নওশাদ করিম চৌধুরী, কোকাকোলা ফারইস্টের কান্ট্রি হেড দেবাশীষ দে, এসিআইয়ের নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ আলমগীর, রহিমআফরোজের পরিচালক মুনাওয়ার মিসবাহ মঈন, ব্র্যান্ড ফোরামের উপদেষ্টা প্রিমা আন্দালিব, রুবাবা দৌলা প্রমুখ।
নলেজ সেন্টারের সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে—গ্রামীণফোন, এক্সেসটেল, অ্যাডভান্স ডেভেলপমেন্ট টেকনোলজিস, প্রথম আলো, সুবাস্তু ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড, কোহিনূর কেমিক্যাল, ইব্রাহীম টেক্সটাইল, গ্যালারি অ্যাপেক্স, রহিমআফরোজ, বিইওএল, নাভানা গ্রুপ, এসএসডি-টেক, অটবি, ট্রান্সকম লিমিটেড ও পারটেক্স গ্রুপ।

No comments

Powered by Blogger.