বালাকোটের বছরে ভারতীয় বিমান বাহিনীর ক্ষয়ক্ষতি: ১০টি ঘটনায় ১১টি বিমান বিধ্বস্ত, ২২ জনের মৃত্যু

ভারতীয় বিমান বাহিনীর জন্য ২০১৯ সালটি এরই মধ্যে রক্তাক্ত বছর হিসেবে উঠে এসেছে। এ পর্যন্ত তাদের ২২ জন বিমান সেনা নিহত হয়েছে এবং প্রায় ১০টি বিধ্বস্তের ঘটনায় ১১টি বিমান ধ্বংস হয়েছে।

সর্বসাম্প্রতিক দুর্ঘটনাটি ঘটেছে আসামের তেজপুরের কাছে। উড্ডয়নের পরপরই সু-৩০ এমকেআই বিমানটি একটি ধানক্ষেতে ভূপাতিত হয়।

দু্জন পাইলট বিধ্বস্ত হওয়ার আগে বিমান থেকে বের হতে পারলেও তাদের একজন গুরুতর আহত হয়েছেন এবং ভবিষ্যতে আর কখনও বিমান ওড়াতে পারবেন না তিনি।

২০১৯ সালে ভারতীয় বিমান বাহিনী পাকিস্তানের বালাকোটে সফল বিমান হামলা চালিয়েছে। তবে বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার এ সব ঘটনায় সেটা বিমান বাহিনীর জন্য বড় আঘাত নিয়ে এসেছে।

ভূপাতিত হওয়ার তালিকা

বছরের শুরুতে ২৮ জানুয়ারি উত্তর প্রদেশের কুশিনগর জেলায় একটি জাগুয়ার জঙ্গি বিমান বিধ্বস্ত হয়। গোরাখপুর বিমান বাহিনীর স্টেশান থেকে উড্ডয়নের কয়েক মিনিট পরেই সেটা বিধ্বস্ত হয়। পাইলট কোনরকমে বেঁচে যান।

পরের মাস ফেব্রুয়ারিতে সফল বালাকোট হামলা হলেও এই মাসেই দুর্ঘটনা ঘটেছে সবচেয়ে বেশি।

১ ফেব্রুয়ারি আপগ্রেডকৃত মিরেজ ২০০০ বিমান বিধ্বস্ত হয়। এতে দুজন পাইলটই নিহত হয়।

১২ ফেব্রুয়ারি একটি মিগ-২৭ বিমান রাজস্থানের জয়সালমিরের কাছে বিধ্বস্ত হয়। পাইলট প্রাণে বেঁচে যান।

১৯ ফেব্রুয়ারি অ্যারো ইন্ডিয়া শো শুরুর একদিন আগে বেঙ্গালুরুর ইয়েলাহাঙ্কা বিমান ঘাঁটির কাছে ভারতীয় বিমান বাহিনীর অ্যারোবেটিক টিম সুরিয়া কিরনের দুটো হক বিমান বিধ্বস্ত হয়।

দুজন পাইলট প্রাণে বাঁচলেও একজন এতে নিহত হয়।

২৬ ফেব্রুয়ারি ভারতীয় বিমান বাহিনী সফলভাবে বালাকোটে বিমান অভিযান চালায়।

তবে পরদিন ২৭ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানী বিমান বাহিনীর হামলার মুখে পড়ে তারা। পাকিস্তানী বিমান বাহিনী একটি মিগ-২১ বিমান গুলি করে ভূপাতিত করে।

তবে আরও দুঃখের বিষয় হলো বিমান হামলার স্থান থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দূরে নিজেদের একটি এমআই-১৭ ভি৫ কপ্টারকে শত্রুপক্ষের বিমান ভেবে গুলি করে ভূপাতিত করেছে বিমান বাহিনী। এতে কপ্টারে থাকা ছয়জন বিমান সেনার সবাই মারা যায়।

পরের মাস মার্চে বিমান বাহিনী দুটো বিমান হারিয়েছে। ৮ মার্চ রাজস্থানের বিনাকের জেলায় পাখির গায়ে ধাক্কা লাগার পর একটি মিগ-২১ বিধ্বস্ত হয়। দুর্ঘটনা থেকে পাইলট প্রাণে বেঁচে গেছেন।

৩১ মার্চ জোধপুরের কাছে আরেকটি মিগ-২৭ বিমান বিধ্বস্ত হয়। ইঞ্জিনে সমস্যা বুঝতে পেরে আগেই বিমান ছেড়েছিলেন পাইলট।

তিন মাস পরে ৩ জুন আসামের জোরহাট থেকে উড্ডয়নের ৩৩ মিনিট পর একটি এএন-৩২ পরিবহন বিমান বিধ্বস্ত হয়।

কয়েক দিনের অনুসন্ধানের পর বিমানের ধ্বংসাবশেষ পাওয়া যায় এবং আরোহী ১৩ জনকে মৃত ঘোষণা করা হয়।

No comments

Powered by Blogger.