পরবর্তী দালাই লামাকে অবশ্যই চীন থেকে বাছাই করতে হবে; এত ভারতের হস্তক্ষেপ করা উচিত নয়: চীন

দালাই লামার পরবর্তী উত্তরসূরী নির্ধারণের বিষয়টি চীনে বসে সিদ্ধান্ত নিতে হবে এবং ভারত এ ব্যাপারে কোন ধরনের হস্তক্ষেপের চেষ্টা করলে সেটা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উপর প্রভাব ফেলবে। চীনা কর্তৃপক্ষ এ কথা জানিয়েছে।
বিষয়টির স্পর্শকাতরতার দিকে ইঙ্গিত করে সিনিয়র চীনা কর্মকর্তা এবং বিশেষজ্ঞরা বলেছেন যে, দালাই লামার উত্তরসূরী নির্ধারণের বিষয়টি অবশ্যই চীন সরকার কর্তৃক অনুমোদিত হতে হবে এবং এই বাছাইয়ের প্রক্রিয়াটি চীনের মধ্যেই সম্পন্ন হতে হবে, যেটা ২০০ বছরের একটা ঐতিহাসিক প্রক্রিয়া।
তিব্বত স্বায়ত্বশাসিত অঞ্চলের সরকারের ডিরেক্টর জেনারেল ওয়াং নেং শেং বলেছেন, “দালাই লামার উত্তরসূরী নির্ধারণের বিষয়টি ঐতিহাসিক, ধর্মীয় ও রাজনৈতিক ইস্যু। দালাই লামার উত্তরসূরি নির্ধারণের প্রক্রিয়ার সাথে ঐতিহাসিক প্রতিষ্ঠান ও আনুষ্ঠানিকতা জড়িত”।
তিনি আরও বলেন, “বর্তমান দালাই লামাকে চীন স্বীকৃতি দিয়েছিল এবং তার উত্তরসূরীকেও অবশ্যই ‘সোনালী পাত্র বাছাইয়ের’ মধ্য দিয়ে হতে হবে এবং সেটা চীনেই হতে হবে। দালাই লামার উত্তরসূরি বাছাই তার ইচ্ছামতো হবে না বা অন্য দেশে বসবাসরত কোন গ্রুপের ইচ্ছে মতো হবে না”।
ওয়াংয়ের মতের সমর্থন করে বেইজিং-ভিত্তিক থিঙ্ক ট্যাঙ্ক চায়না টিবেটোলজি রিসার্চ সেন্টারের ডিরেক্টর ঝা লুও বলেছেন, চীনের ভেতরে পরবর্তী দালাই লামাকে বাছাই করার বিষয়ে ভারত কোন ধরনের নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি দেখালে সেটা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উপর প্রভাব ফেলবে।
তিব্বতে স্থানীয় অধিবাসীদের উত্থানচেষ্টার বিরুদ্ধে চীনের ষাঁড়াশি অভিযানের পর ১৯৫৯ সালে ১৪তম দালাই লামা ভারতে পালিয়ে যান। ভারত তাকে রাজনৈতিক আশ্রয় দেয় এবং তখনই ভারতের হিমাচল প্রদেশের ধর্মশালাতে তিব্বতের প্রবাসী সরকার গঠিত হয়।
দালাই লামার বয়স এখন ৮৪ বছর এবং গত কয়েক বছর ধরে তার উত্তরসূরী বাছাইয়ের বিষয়টি ব্যাপকভাবে আলোচিত হয়ে আসছে।
ঝা-এর টিমটি চীন সরকারকে তিব্বত ইস্যু নিয়ে উপদেশ দিয়ে থাকে। চীনের বাছাই করা পরবর্তী দালাই লামাকে স্বীকৃতি দিতে ভারত যদি অস্বীকার করে, তাহলে কি হতে পারে, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “এটা হবে একটা বড় ধরনের রাজনৈতিক মতপার্থক্য যেটা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উপর প্রভাব ফেলবে এবং কোন বিবেচক রাজনৈতিক নেতা এটা করবে না”।
তিনি আরও বলেন, “যেহেতু দালাই লামার উত্তরসূরী নির্ধারণের বিষয়টি চীনের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যূ, সে কারণে চীনের কোন বন্ধুপ্রতীম দেশই এ ব্যাপারে নাক গলাবে না”।

No comments

Powered by Blogger.