বাঁচানো গেল না সার্জেন্ট কিবরিয়াকে

শেষ পর্যন্ত বাঁচানো গেল না সার্জেন্ট গোলাম কিবরিয়াকে। শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রক্ত দেয়ার জন্য সহকর্মীদের ছিল উপচে পড়া ভিড়। বিকালে হেলিকপ্টারে করে ঢাকায়ও নেয়া হয়। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে চলে নিবিড় চিকিৎসা। কিন্তু সকল মায়া ত্যাগ করে তিনি গতকাল সকালে মারা যান। তার মৃত্যুতে বরিশাল পুলিশ প্রশাসনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। গত সোমবার সকাল থেকে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়কের কর্ণকাঠী জিরো পয়েন্ট এলাকায় দায়িত্ব পালন করছিলেন ট্রাফিক সার্জেন্ট গোলাম কিবরিয়া। বেলা সোয়া ১২টার দিকে পটুয়াখালীগামী যমুনা গ্রুপের বেপরোয়া গতির একটি কাভার্ডভ্যানকে (ঢাকা মেট্রো উ-১২-২০৫৪) থামার সংকেত  দেন তিনি।
কাভার্ডভ্যানটি ট্রাফিকের সংকেত অমান্য করে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে।
এ সময় সার্জেন্ট কিবরিয়া একটি মোটরসাইকেলে ধাওয়া করে কাভার্ডভ্যানটির সামনে গিয়ে ফের তাকে থামার সংকেত দেন। তখন কাভার্ডভ্যানচালক জলিল মিয়া সার্জেন্ট কিবরিয়াকে চাপা দিয়ে পালিয়ে যায়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। জানা যায়, তার দুই পায়ের ৪টি স্থান ভেঙে যায় এবং মূত্রথলি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তার রক্তের প্রয়োজন হওয়ায় ওয়্যারলেস বার্তা পেয়ে হাসপাতালে অগণিত সহকর্মী হাজির হন। কিন্তু কিবরিয়ার অবস্থার অবনতি হওয়ায় বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে বিকাল সোয়া ৫টার দিকে একটি বিশেষ এয়ার এম্বুলেন্সে ঢাকার উদ্দেশে নিয়ে যাওয়া হয়। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে কিবরিয়াকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এর পরপরই তাকে জরুরি বিভাগের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। তবে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছিলেন চিকিৎসকরা। রাতেই বরিশালের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ তাকে দেখতে হাসপাতালে ছুটে যান। গতকাল সকালে চিকিৎসারত অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
এদিকে খবর পেয়ে পার্শ্ববর্তী ঝালকাঠির নলছিটি থানা পুলিশ ধাওয়া করে চালক জলিল সিকদারসহ কাভার্ডভ্যানটি আটক করে। কাভার্ডভ্যানচালক মো. জলিল মিয়ার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। সোমবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে বন্দর থানায় বরিশাল  মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের পরিদর্শক মো. রবিউল ইসলাম বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন।

No comments

Powered by Blogger.