‘আসামে বিদেশি তৈরির কারখানা খোলা হয়েছে’

প্রথম আলো, ০৯ জুন ২০১৯: আসামে বিদেশি তৈরির কারখানা খোলা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে সারা আসাম সংখ্যালঘু ছাত্র সংস্থা (আমসু)।
আমসুর সভাপতি রেজাউল করিম সরকারের অভিযোগ, আসামে ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল ও বর্ডার পুলিশ এখন বেআইনি বিদেশি বানানোর কারখানা হয়ে উঠেছে। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, সংখ্যালঘুদের বেছে বেছে বিদেশি বানানোর ষড়যন্ত্র চলছে।
রাজ্যের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা তরুণ গগৈয়ের অভিযোগ, আসামের এনআরসি প্রক্রিয়ায় লাখ লাখ মানুষ হারাতে চলেছেন তাঁদের বৈধ নাগরিকত্ব। এনআরসির রাজ্য সমন্বয়ক প্রতীক হাজেলা নিরপেক্ষ ভূমিকা পালনে ব্যর্থ বলেও দাবি করেন তিনি।
৩১ জুলাই প্রকাশিত হবে আসামের এনআরসির পূর্ণাঙ্গ তালিকা। রাজ্যের ৩ কোটি ২৯ লাখ ৯১ হাজার ৩৮৪ জন নাগরিকের মধ্যে ৪০ লাখ ৭ হাজার ৭০৭ জনের নাম খসড়া তালিকায় বাদ পড়েছে।
বাদ পড়া লোকজনের মধ্যে সংযোজনের জন্য আবেদন জমা পড়েছে ৩১ লাখ। তাই ৯ লাখ নাগরিকের নাম বাদ পড়বে, তা অবধারিত। তা ছাড়া খসড়া তালিকায় নাম থাকলেও পরবর্তী সময় অনেকের নামে আপত্তি জানিয়ে অভিযোগ করা হয়েছে। ভুয়া আপত্তির হাত থেকে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সাবেক মন্ত্রী বা বর্তমান সাংসদেরাও বাদ যাচ্ছেন না।
দেশ ছাড়ার আতঙ্ক গ্রাস করেছে সংখ্যালঘুদের মনে। বিদেশি বাছতে রাজ্য সরকার ১ হাজার ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল গঠন করছে। গড়ে তোলা হচ্ছে নতুন বন্দিশালাও। তাই বংশপরম্পরায় আসামে বসবাসকারী বাঙালিরা পড়েছেন গভীর সমস্যায়।
নাগরিকত্ব প্রমাণ করতে না পেরে বর্ডার পুলিশের চাকরি খুইয়ে সম্প্রতি কারাগারে যেতে হয় সাবেক সেনা মহম্মদ সানাউল্লাহকে। পরে গুয়াহাটি হাইকোর্টের রায়ে জামিনে মুক্তি পান তিনি। সানাউল্লাহ ৩০ বছর ভারতীয় সেনাবাহিনীতে দক্ষতার সঙ্গে চাকরি করে পান রাষ্ট্রপতি পদক। অবসরের পরে যোগ দিয়েছিলেন আসামের বর্ডার পুলিশে।
সানাউল্লাহ ছাড়া পেলেও আসামের ৬টি বিদেশি বন্দিশালায় ৯৮৬ জন ‘বিদেশি’ এখনো জেল খাটছেন। তাঁদের বেশির ভাগই ভাষিক (বাঙালি) ও ধর্মীয় (মুসলিম) সংখ্যালঘু। ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালে নাগরিকত্ব প্রমাণে ব্যর্থ হয়ে সাজা পেয়েছেন তাঁরা।
সানাউল্লাহ ছাড়া পেলেও আসামের ৬টি বিদেশি বন্দিশালায় ৯৮৬ জন ‘বিদেশি’ এখনো জেল খাটছেন। ছবি: সংগৃহীত

No comments

Powered by Blogger.