সুবর্ণচরে গণধর্ষণ: নির্যাতিতার ডিএনএ টেস্টের অনুমতি

গণধর্ষণের ঘটনায় গ্রেপ্তার ১০ জনের মধ্যে ৭ জনের রিমান্ড চলছে। বহিষ্কৃত আওয়ামী লীগ নেতা রুহুল আমিন এখনো মুখ খোলেনি। মুরাদের ৭ দিনের রিমান্ড চেয়েছে ডিবি পুলিশ। মামলার তদন্তকারী পরিদর্শক জাকির হোসেন মানবজমিনকে জানান, আগামী ১০ই জানুয়ারি ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন শুনানি ধার্য রয়েছে। নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার চরজুবলী ইউনিয়নের মধ্যম বাগ্যা গ্রামে ভোটের দিন রাতে গৃহবধূ গণধর্ষণের ঘটনায় এ পর্যন্ত ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতরা হচ্ছে- মধ্য বাগ্যা গ্রামের রুহুল আমিন (৪০), সোহেল (৩৫), হানিফ (৩০), স্বপন (৩৫), মুরাদ (২৫), বেচু (২৫), কুড়াইল্যা বাসু (৪০), আবুল (৪০), মোশাররফ (৩৫), সালাউদ্দিন টোকাই (৩৫)।
সুবর্ণচর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট ওমর ফারুক জানান, সুবর্ণচরে পৈশাচিকতার দায় নিতে হবে রুহুল আমিনকে। জঘন্যতম এ ঘটনায় তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এমপি একরামুল করিম চৌধুরী এ বিষয়ে জিরো টলারেন্সে রয়েছেন।
তার চিকিৎসাসহ নিরাপত্তা দেয়ার জন্য প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছেন। ৩০ ডিসেম্বর ভোট দেয়াকে কেন্দ্র করে সুবর্ণচরের চরবাগ্যায় গণধর্ষণের দ্রুত চার্জশিট দাখিল করে বিচারের দাবি জানিয়েছেন নোয়াখালীতে ১১১ জন আইনজীবী।
রিমান্ডে ৭ আসামিকে ডিবি অফিসে আনার ৪৫ ঘণ্টা পরও মুখ খোলেনি। তদন্তকারী কর্মকর্তার আবেদনের প্রেক্ষিতে ডিএনএ টেস্ট করে প্রোফাইল সংরক্ষণ করার জন্য জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নবনিতা গুহ এর আদালত আদেশ দিয়েছেন। এ ঘটনায় দ্রুততম সময়ে চার্জশিট দাখিল করে দ্রুত বিচার নিশ্চিত করার জন্য নোয়াখালী আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট আবদুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফাজ উদ্দিন, সাবেক সভাপতি বি.ইউ.এম কামরুল ইসলাম, সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট আবদুর রহিম, সাবেক সহসভাপতি কাজী মির হোসেন, এনায়েত উল্যাসহ ১১১ জন আইনজীবী যৌথ বিবৃতি দিয়েছেন। নোয়াখালী সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাছের মাহমুদ জনির তত্ত্বাবধানে ডিবি পুলিশের ইন্সপেক্টর ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আসামিদের কখনও মুখোমুখি কখনও এককভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করছে বলে সূত্র জানিয়েছেন।
এ ঘটনায় মামলার আসামিদের গ্রেপ্তার এবং তদন্তের কার্যাবলীর ব্যাপারে তদারকি ও দিকনির্দেশনা দিতে চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি ফারুখ আহমেদ সোমবার সন্ধ্যায় পুনরায় নোয়াখালী আসেন এবং জেলার উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি রিমান্ডে থাকা আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের ব্যাপারে দিকনির্দেশনা দেন বলে ডিআইজি সোমবার রাত ৮টায় সাংবাদিকদের জানান। তিনি বলেন, সরকারের উচ্চ মহল ও নির্বাচন কমিশন এ ব্যাপারে সব সময় খোঁজ খবর রাখছেন এবং অধিক গুরুত্ব দিচ্ছেন। ডিআইজি আরো জানান, যত দ্রুততম সময়ে সম্ভব এ চাঞ্চল্যকর মামলার তদন্ত শেষ করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হবে এবং এ মামলাটি যেন দ্রুত বিচার আইনে বিচার হয় পুলিশের পক্ষ থেকে এ চেষ্টা করা হবে।
নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. খলিলুর রহমান জানান, চার সদস্যের মেডিকেল টিম মঙ্গলবার দুপুরে রোগীকে দেখেছেন, রোগীর সঙ্গে কথা বলেছেন। পরীক্ষা নিরীক্ষার কাগজপত্র ও রিপোর্ট পর্যালোচনা করেছে এবং আরো কয়েকটি নতুন পরীক্ষা করানোর জন্য বলেছেন। এসব পরীক্ষার কিছু কিছু জেনারেল হাসপাতালে করা যাবে আর কিছু পরীক্ষা নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতাল সড়কের অত্যাধুনিক প্রাইম হাসপাতালে করতে হবে। সব রিপোর্ট পাওয়ার পর মেডিকেল বোর্ড সিদ্ধান্ত নেবে নির্যাতিতাকে আরো উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় রেফার করতে হবে কিনা।

No comments

Powered by Blogger.