দিন শুরু না হতেই এলো রাত

দিন শুরু না হতেই নেমে এলো রাত- ভৌতিক ব্যাপার নয়, কারণটা প্রাকৃতিক। ইন্দোনেশিয়ার বিস্তীর্ণ এলাকায় বুধবার পূর্ণ সূর্যগ্রহণ হয়েছে। প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের বেশকিছু অঞ্চলেও এদিন সূর্যগ্রহণের ‘ছিঁটেফোঁটা’ পড়েছে। এ সময় মুসলিম সম্প্রদায়ের অনেকে ইবাদত-বন্দেগি করেন। বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠী তাদের আচার-অনুষ্ঠান পালন করে। বার্তা সংস্থা এএফপির খবরে বলা হয়েছে, স্থানীয় সময় ভোর ৬টা ১৯ মিনিট (গ্রিনিচ সময় ২৩টা ১৯ মিনিট) থেকে পৃথিবী ও সূর্যের মধ্যে যেতে শুরু করে চাঁদ। এর প্রায় ঘণ্টাখানেক পর চাঁদ সূর্যকে পুরোপুরি ঢেকে ফেলে, তখন দেশটির পশ্চিম অংশে পূর্ণ সূর্যগ্রহণের দেখা মেলে। মুহূর্তেই চারপাশে নেমে এলো রাতের অন্ধকার। বাংলাদেশ, নেপাল, থাইল্যান্ড, চীন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়াসহ এশিয়ার বিভিন্ন দেশ ও অস্ট্রেলিয়ার কিছু অংশের বাসিন্দারাও আজ আংশিক সূর্যগ্রহণ দেখেছেন। ধরণীর বুকে পূর্ণ ও আংশিক সূর্যগ্রহণের এমন সৌন্দর্য দেখার জন্য বিভিন্ন দেশের উৎসাহী মানুষ রাস্তায় নেমে আসে। দেশটির সুমাত্রা, বোর্নিও ও সুলাওয়েসিসহ কয়েকটি দ্বীপে সূর্য পুরোপুরি চাঁদের আড়ালে ঢাকা পড়ে যায়।
আর সে কারণে দিনের শুরুতেই এসব এলাকায় রাত নেমে আসে। বিশেষ করে মাবা, মালুকু দ্বীপগুলোতে প্রায় তিন মিনিট পর্যন্ত অন্ধকার অবস্থা বিরাজ করে। উল্লেখ্য, ইন্দোনেশিয়ায় একটি দীর্ঘ সময় ধরে থাকে সূর্যগ্রহণ। এছাড়া অন্য এলাকাগুলোতে প্রায় দুই মিনিট পর্যন্ত অন্ধকার ছিল। ইন্দোনেশিয়ার বেলিতুং প্রদেশের একটি সমুদ্র সৈকতে জড়ো হওয়া হাজার হাজার মানুষের মন্তব্যে ঘুরে ফিরে আসছিল একই কথা। তারা বলেন, এটা ‘জাদুকরী’ অভিজ্ঞতা। কেউ কেউ চলে যায় ছাদসহ উঁচু স্থানে। চোখে বিশেষ ধরনের চশমা পরে তারা সূর্যগ্রহণ দেখে। পূর্ণ সূর্যগ্রহণকে কেন্দ্র করে ইন্দোনেশিয়ার বিভিন্ন দ্বীপে পর্যটকদের ঢল নামে। এ উপলক্ষে তাই ছিল বিশেষ আয়োজন। ছিল মজার দৌড় ও ড্রাগন নৌকার প্রতিযোগিতাসহ নানা উৎসব। এই সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য সুদূর যুক্তরাষ্ট্র থেকে ইন্দোনেশিয়ার বেলিতুং দ্বীপে আসেন ৫২ বছর বয়সী পর্যটক ডেনিয়েল অরেঞ্জ। তিনি বললেন, ‘এটা অসাধারণ। সব মিলিয়ে সূর্যগ্রহণ দেখার ব্যাপারটা ছিল সুন্দর। এখানে অনেকে জড়ো হয়েছিলেন। যখন পূর্ণ সূর্যগ্রহণ হল, তখন সবাই উল্লাস করে উঠল।’

No comments

Powered by Blogger.