ব্যাংকিংখাত নিয়ে দুশ্চিন্তার কারণ নেই: গভর্নর

চট্টগ্রামের নাসিরাবাদ এলাকায় হিউম্যান রিসোর্সেস
অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউটের
ভিত্তিপ্রস্তর অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর
আতিউর রহমান। ছবি: জুয়েল শীল, চট্টগ্রাম
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আতিউর রহমান বলেছেন, বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাত অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি শক্তিশালী অবস্থানে আছে। এটি এখন যেকোনো ধরনের চাপ নেওয়ার ক্ষমতা অর্জন করেছে। ব্যাংকিং খাত নিয়ে দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই।
আজ বুধবার চট্টগ্রামের নাসিরাবাদ এলাকায় হিউম্যান রিসোর্সেস অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউটের ভিত্তিপ্রস্তর অনুষ্ঠানে আতিউর রহমান এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ ব্যাংক এ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটি তৈরি করবে।
অনুষ্ঠানে গভর্নর বলেন, ব্যাংকের বিনিয়োগ তখনই বাড়বে, যখন অবকাঠামোগুলোর উন্নতি হবে। কিন্তু আমরা যতটা দেখছি, বিনিয়োগ যদি যথেষ্ট না হয়ে থাকে, তাহলে কী করে গত ছয় বছর ধরে আমাদের দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৩ শতাংশের মতো হচ্ছে। আমার মনে হয় বিনিয়োগ হচ্ছে সব জায়গা থেকে, সে জন্য চোখে পড়ছে না। আমাদের বিনিয়োগ বাড়ছে কৃষিতে, এসএমইতে, তথ্যপ্রযুক্তিতে, ই-কমার্সে, বিনিয়োগ বাড়ছে নানা কর্মকাণ্ডে। উৎপাদনশীল খাতে কিভাবে আরও প্রবৃদ্ধি আনা যায় সে জন্য আমরা বিনিয়োগের দিকে নজর দিচ্ছি এবং বাড়াচ্ছি।
অনুষ্ঠানে গভর্নর বলেন, সবুজ আর্থিক খাত হিসেবে সারা পৃথিবীর কাছে আমরা রোল মডেল হতে চাই। সে কারণে যে সমস্ত শিল্প প্রতিষ্ঠান ও কারখানা নিজেদের গ্রিন করতে চেষ্টা করবেন, বায়ো গ্যাস, বায়োপ্ল্যান্ট, সোলার এগুলো নিয়ে কাজ করবেন তাদের জন্য ২০০ মিলিয়ন ডলারের নতুন পাইপলাইন খুলতে যাচ্ছি।
নানা প্রতিকূলতা সত্ত্বেও খেলাপি ঋণের হার এক অঙ্কে নামিয়ে আনা গেছে উল্লেখ করে আতিউর রহমান বলেন, বর্তমানে ব্যাংকিং খাতে কোনো তারল্য সংকট নেই। বরং বেশি তারল্য হয়ে পড়েছে বলে আমাদের সমালোচনা করা হয়। ব্যাংক তার কৌশল মতো কাজ করছে। কতটুকু তারল্য রাখবেন, কতটা বিনিয়োগ করবেন, এটি ব্যাংকের বিষয়। এবং ব্যাংক স্থিতিশীল রাখার জন্য তারা উদ্যোগ নিচ্ছেন।
বাংলাদেশ ব্যাংক চট্টগ্রামের নির্বাহী পরিচালক মিজানুর রহমান জোদ্দারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আবু হেনা মো. রাজী হাসান, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম, বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ম. মাহফুজুর রহমান, প্রকল্প পরামর্শক ইকরামুল হক, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী মোহাম্মদ শফিউল আলম, চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. আবদুল জলিল মণ্ডল, জনতা ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক আবু নাসের চৌধুরী প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে বক্তারা আশা করেন, চট্টগ্রামে স্থাপিত হতে যাওয়া এ প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ভবিষ্যতে মানবসম্পদ উন্নয়ন ও নেতৃত্ব তৈরিতে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে। আন্তর্জাতিকমানের এ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের কারণে দেশের পরিচিতি আরও বাড়বে।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ১০ একরের ওপর স্থাপিত এ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে একটি মাল্টি পারপাস হল, থিয়েটার সম্মেলন হল, ছোট বড় আটটি সম্মেলন কক্ষ, ২০টি ক্লাসরুম, হোস্টেল, অ্যাপার্টমেন্ট ও ডরমিটরি তৈরি করা হবে। এ ছাড়া আরও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা থাকবে। আগামী তিন বছরের মধ্যে এর নির্মাণকাজ শেষ হবে।

No comments

Powered by Blogger.