ফিলিস্তিনে নতুন প্রজন্মের নতুন ইন্তিফাদা by ডেভিড হার্স্ট

জেরুসালেমের ওল্ড সিটিতে ছুরিকাঘাতে দুই অতি উগ্র ইহুদিকে হত্যা করার কয়েক দিন আগে মোহাম্মদ হালাবি তার ফেসবুক ওয়ালে তার প্রেসিডেন্টকে লক্ষ্য করে কিছু কথা লিখেছিলেন। জাতিসঙ্ঘে দেয়া মাহমুদ আব্বাসের বক্তৃতায় আল-আকসা কম্পাউন্ডে চরমপন্থীদের প্রবেশ করার সুযোগ দেয়ার জন্য ইসরাইলকে অভিযুক্ত করা নিয়ে মন্তব্য করেছিলেন তিনি।
মোহাম্মদ হালাবি লিখেছিলেন : ‘সুন্দর বক্তৃতা মি. প্রেসিডেন্ট, তবে আমরা কিন্তু পূর্ব ও পশ্চিম জেরুসালেম স্বীকার করি না। আমরা মাত্র একটা জেরুসালেমকেই চিনি, সেটা অবিভক্ত এবং এর প্রতিটি অংশই পবিত্র। ক্ষমা করবেন মি. প্রেসিডেন্ট, তবে আকসায় নারীদের ওপর এবং খোদ আল আকসার ওপর যা ঘটছে তা শান্তিপূর্ণভাবে বন্ধ করা যাবে না। আমরা অপদস্ত হওয়ার জন্য বেড়ে উঠিনি।’
১৯ বছর বয়স্ক এই তরুণের বক্তব্য ছিল পরিষ্কার : কথা চালাচালির দিন শেষ। তিনি বললেন, তৃতীয় ইন্তিফাদা ইতোমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে।
হালাবি তার প্রজন্মের কথাই বলছেন। তাবায় দ্বিতীয় অসলো চুক্তি স্বাক্ষরের এক বছর পর তিনি জন্মগ্রহণ করেন। ওই চুক্তির বলেই পশ্চিম তীর ও গাজার জন্য অন্তর্বর্তী স্বশাসিত ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠিত হয়। চার বছর বয়সে হালাবি একটি ব্যাপকভিত্তিক চুক্তি হতে দেখেছেন, যার মাধ্যমে শান্তির বিনিময়ে ইসরাইলের ভূখণ্ড ছেড়ে দেয়ার কথা বলা হয়েছিল। হালাবির বয়স যখন সাত বছর, তখন পশ্চিম তীরকে বিভক্ত করে অচ্ছুৎদের এলাকায় (বান্টুস্তান) পরিণত করার প্রাচীর নির্মাণ শুরু করে ইসরাইল। তার আট বছর বয়সে ইয়াসির আরাফাত ইন্তেকাল করেন, পরিণতিতে ইসরাইলের ভাষায় ‘দুই মুখো’ ফিলিস্তিনি নেতার হাত থেকে তারা (ইহুদি রাষ্ট্রটি) মুক্তি পায়। তার স্থলাভিষিক্ত হন মাহমুদ আব্বাস, যার মুখ একটি এবং যিনি অসহিষ্ণুভাবে সহিংসতার বিরোধী।
হালাবির প্রজন্মকে শান্তি দেখতে পাওয়ার কথা। পশ্চিম তীরের অর্থনীতি চাঙা করার জন্য টনি ব্লেয়ার ও সালাম ফায়েদের নেয়া পরিকল্পনা থেকে উপকৃত হওয়ার কথা। কিন্তু এর বদলে প্রজন্মটি দেখছে ছয় লাখ বসতি স্থাপনকারী, ফিলিস্তিনি পূর্ব জেরুসালেমের ধীরে ধীরে অদৃশ্য হতে থাকা, বিক্ষোভ বন্ধ করার দায়িত্বে নিয়োজিত একটি ফিলিস্তিনি নিরাপত্তা বাহিনী এবং আল-আকসা মসজিদ কমপ্লেক্সে ইসরাইলি ইহুদিদের (যারা প্রথমে নিজেদের পর্যটক হিসেবে পরিচিত করে থাকে) দৈনন্দিন সীমালঙ্ঘন। চূড়ান্ত ফয়সালার বদলে হালাবির প্রজন্ম সব আশার পুরোপুরি ধূলিসাৎ হওয়া দেখতে পাচ্ছে।
তারপর এটা (মৃত্যু বা আহত হওয়ার সংখ্যা কিংবা সারা দেশে ছুরিকাঘাত করার প্রবণতার চেয়ে বেশি) যা তৈরি করেছে, তাকে বলা যায় ইন্তিফাদা (আরবি ভাষায় যার অর্থ আন্দোলন বা ঝাঁকুনি দেয়া)। নতুন প্রজন্মটি দখলদারদের ঝাঁকি দেয়ার চেষ্টা করছে। নতুন প্রজন্মটি তাদের পূর্বপুরুষদের সংগ্রামকে নতুন করে আবিষ্কার করেছে। পরবর্তী সপ্তাহ, মাস কিংবা বছরের পর বছর ধরে যা ঘটবে, সেটাই হবে তাদের সংগ্রাম।
এই স্ফুলিঙ্গ যে কারণে হয়েছে তা হলো আল-আকসা। এটা একটা প্রতীক। জেরুসালেমের সাম্প্রদায়িক রাজনীতির এসিড বৃষ্টিতে যার একেবারে প্রতিটি পাথর আক্রান্ত হয়েছে। ইহুদিদের কাছে ‘টেম্পল মাউন্ট’ হিসেবে পরিচিত স্থাপনাটিতে ইহুদিদের প্রবেশের ওপর ‘চিফ রাব্বানিয়াতে’র নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও আল-আকসার স্থিতিবস্থা বদলে যাচ্ছে। পবিত্র স্থাপনাগুলো পরিচালনার দায়িত্বে নিয়োজিত জর্ডান-নিয়ন্ত্রিত ইসলামি প্রতিষ্ঠান ‘ওয়াকফ’ এখন আর প্রবেশ ফি সংগ্রহ করছে না বা ইসরাইল-নিয়ন্ত্রিত গেট দিয়ে অমুসলিমদের সেখানে প্রবেশ করা বন্ধও করতে পারছে না।
ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপ সম্প্রতি উল্লেখ করেছে, ‘ওয়াকফ ইহুদিদের প্রার্থনা বন্ধ করতে পুলিশের সাথে কাজ করা অব্যাহত রাখলেও এখন আর ইহুদি গ্র“পগুলোর আকার নির্ধারণ কিংবা তাদের প্রবেশ ফি নির্ধারণ করতে পারছে না; উত্তেজনা সৃষ্টি করতে পারে বলে বিবেচিত বিশেষ অ্যাক্টিভিস্টদের প্রবেশে ভেটো দিতেও আর পারছে না। ইসরাইল প্রায়ই ১০, ৩০ এমনকি ৫০ জনের গ্র“পকেও, তাদের অনেকে সেনাবাহিনীর ইউনিফর্ম পরেও থাকে, প্রবেশের সুযোগ দিচ্ছে, যা আগে নিষিদ্ধ ছিল।’
২০১২ সালে নেসেট সদস্য, উপমন্ত্রী এবং মন্ত্রীরা পুরো এলাকার ওপর ইসরাইলি সার্বভৌমত্ব দাবি করে ছবি তোলেন। হালাবির প্রজন্মের কাছে এটা কেবল একটা ধর্মীয় ইস্যু নয়। আল-আকসা হলো জাতীয় পরিচিতির প্রতীক। ইসরাইল রাষ্ট্রের প্রবলভাবে গুঁড়িয়ে দেয়া একটি পরিচিতির শেষ প্রতীক হিসেবে এটা দাঁড়িয়ে আছে। এটা ধার্মিক ও সেকুলার উভয় ধরনের ফিলিস্তিনিদের ঐক্যবদ্ধ করে। ধর্মীয় পরিচিতি নিয়ে আল-আকসায় প্রবেশকারীদের ইহুদিদের ওপর প্রথম যেসব ফিলিস্তিনি আক্রমণ করেছিলেন তারা ছিলেন সেকুলার বিপ্লবী গ্র“প ’পপুলার ফ্রন্ট অব দি লিবারেশন অব প্যালেস্টাইন’-এর (পিএফএলপি) সদস্য। জাতীয়-ধর্মীয় পরিচিতি-সংবলিত ইহুদিদের সীমালঙ্ঘন থেকে আল-আকসাকে রক্ষা করা একটা অস্তিত্বমূলক ইস্যু। এটা ফিলিস্তিনিদের বলে : ‘আমরা যদি এর জন্য লড়াই না করি, তবে আমরা হয়তো এটাকেও হারাব।’
হালাবিকে উত্তেজিত হওয়ার দরকার নেই। তাকে ফাতাহ বা হামাসের কাছ থেকে নির্দেশ পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে হয় না। তিনি নিজের সিদ্ধান্তে কাজ করেন, ঠিক যেমন করেন পশ্চিম তীর, গাজা বা ইসরাইলে বসবাসকারী হাজার হাজার ফিলিস্তিনি।
প্রথম ও দ্বিতীয় উভয় ইন্তিফাদাতেই ফিলিস্তিনি নেতারা বিস্মিত হয়েছিলেন। প্রথমটা শুরু হয়েছিল ফিলিস্তিনি শ্রমিকদের বহনকারী দু’টি ভ্যানকে ইসরাইলি সেনাবাহিনীর ট্রাক গুঁড়িয়ে (তাতে দুই ফিলিস্তিনি শ্রমিক নিহত হয়েছিল) দেয়াকে কেন্দ্র করে। দ্বিতীয়টির শুরু হওয়ার পেছনে ইন্ধন দিয়েছিলেন ওই সময়ে বিরোধী দলে থাকা অ্যারিয়েল শ্যারন। এক হাজার ইসরাইলি পুলিশ অফিসার নিয়ে তিনি আল-আকসা কম্পাউন্ডে প্রবেশ করে ১৯৬৭ সালের ‘ছয় দিনের যুদ্ধে’ ইসরাইলি সৈন্যদের পূর্ব জেরুসালেম দখল করার পর সম্প্রচারিত বাক্যগুলো পুনরাবৃত্তি করে বলেছিলেন : ‘টেম্পল মাউন্ট আমাদের হাতে।’ কিন্তু কয়েক দিনের মধ্যেই নেতৃত্ব তাদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে নির্দেশ দেয়া শুরু করেন।
১৯৮৭ সালের ইন্তিফাদায় ‘ইউনিফাইড ন্যাশনাল লিডারশিপ’-এর পক্ষ থেকে ‘ইস্তেহার নম্বর ২’ রচনাকারী জামাল জাকুত এর উদ্দেশ্য সম্পর্কে আমাদেরকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন : ‘এটা (সংগঠনটি) আমাদেরকে ইন্তিফাদা, এর নেতৃত্ব এবং এর তৃণমূল পর্যায়ের কার্যক্রমকে পিএলও’র বিকল্প নয়, বরং এর অবিচ্ছেদ্য অংশ বিবেচনা করে।’ বর্তমানে আব্বাসের নেতৃত্বে পিএলও এটা জানতে চায় না, আর ঠিক এ কারণেই তারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে হিমশিম খাচ্ছে।
জনমত জরিপবিদ এবং রাজনীতিবিজ্ঞানী খলিল শিকাকি সাম্প্রতিক এক জরিপে দেখেছেন, ৪২ শতাংশ ফিলিস্তিনি বিশ্বাস করে যে, কেবল সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমেই স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব, আর ৫৭ শতাংশ এখন আর দুই রাষ্ট্র সমস্যার সমাধান সম্ভব বলে বিশ্বাস করে না। দুই-তৃতীয়াংশ প্রেসিডেন্ট পদে আব্বাসের স্থানে অন্য কাউকে চায়।
নতুন প্রজন্ম ফাতাহ এবং হামাস উভয়কে অবজ্ঞা করে নিজেরাই সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। কেউ যদি এর চিত্রটি ধারণ করেন, তবে দেখতে পাবেন যে জিন্স ও কুফিয়েহ পরিহিতা একটি মেয়ে হামাসের সবুজ মস্তাকাবরণ এবং মুখোশ পরিহিত কোনো ছেলের হাতে পাথর তুলে দিচ্ছে। এই প্রতিবাদে সেকুলার ও ধর্মানুরাগী তরুণ সবাই এক হয়ে গেছে। যে তরুণই ছুরি ধরে আছে কিংবা পাথর ছুড়ছে, সে-ই তাদের নিজস্ব নেতা।
এটা ইসরাইলের জন্য নজিরবিহীন বিপদ সৃষ্টি করেছে। তারা আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারীদের গ্রেফতার বা গুপ্তভাবে হত্যা করে এবং চূড়ান্ত পর্যায়ে যুদ্ধবিরতির আলোচনা করতে পারে। কিন্তু তারা একজন তরুণকে তাদের বেপরোয়া সিদ্ধান্ত গ্রহণ থেকে বিরত রাখতে পারে না। পাইকারি শাস্তি হিসেবে কোনো বাড়ি গুঁড়িয়ে দেয়া কিংবা অন্যান্য পদক্ষেপ গ্রহণ করা হলে তাতে আন্দোলনকারীরা কেবল আরো বেশি ক্ষিপ্ত হয়।
এই ইন্তিফাদার আরো কয়েকটি অনন্য বৈশিষ্ট্য রয়েছে। প্রথম ও দ্বিতীয় ইন্তিফাদা চালানো হয়েছিল পশ্চিম তীর ও গাজা থেকে। ১৯৪৮ সাল থেকে ইসরাইলে বসবাসকারী ফিলিস্তিনি জনগণ দ্বিতীয় ইন্তিফাদার শুরুতে প্রতিবাদে অংশ নিয়েছিল, কিন্তু সেটা ছিল স্বল্পস্থায়ী। ১৯৭৬ সালের ‘ল্যান্ড ডে’র পর থেকে ’৪৮-এর ফিলিস্তিনিরা কখনো গণ-আন্দোলনের সামনের কাতারে ছিল না। ১৯৭৬ সালের ৩০ মার্চ উত্তরের ত্রিভুজ অঞ্চলের হাজার হাজার ফিলিস্তিনি একটি বিশাল এলাকাকে প্রকাশ্যে ঘোষিত ‘জুদাইকরণের’ নীতির অংশ হিসেবে দখল করার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছিল।
অবশ্য বর্তমানে কোনো প্রাচীর বা বিভক্তি সৃষ্টিকারী প্রতিবন্ধকতা গণ-আন্দোলনকে দমাতে পারছে না। গত সপ্তাহে যেখানে আক্রমণ হয়েছে, পূর্ব জেরুসালেম, আফুলা, তেল আবিবের ওই সব এলাকার ওপর পিএলও’র কোনো ধরনের নিয়ন্ত্রণ নেই। আরো কিছু ব্যাপারও রয়েছে। এই প্রথম কোনো ইন্তিফাদায় ফিলিস্তিনিরা হস্তক্ষেপ করার জন্য কোনো প্রতিবেশী আরব দেশের জন্য অপেক্ষা করছে না। সম্ভবত এটা সময়ের নিদর্শন কিংবা ইসরাইলের নিজের সীমান্ত ঘিরে সৃষ্ট বিশৃঙ্খলা।
এখন পর্যন্ত ইন্তিফাদার ব্যাপারে ইসরাইলের প্রতিক্রিয়া হলো ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর প্রতি আস্থা হারানো এবং আরো বেশি কট্টরপন্থী নেতাদের প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করা। রোববার ইয়েদিয়ত আরহরেনট দৈনিকে প্রকাশিত জরিপে দেখা যায়, সাম্প্রতিক আক্রমণ প্রতিরোধে নেতানিয়াহুর ভূমিকায় ৭৩ শতাংশ লোক অসন্তুষ্ট। কে এই কাজ করতে সবচেয়ে ভালো হবেন, এই প্রশ্নের জবাবে সবচেয়ে বেশি ভোট পেয়েছেন যে দু’জন তারা উভয়েই উগ্র জাতীয়তাবাদী। সবচেয়ে বেশি ভোট পেয়েছেন সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যাভিগডর লিবারম্যান, দ্বিতীয় স্থান পেয়েছেন বসতি স্থাপনপন্থী শিক্ষামন্ত্রী ন্যাটতালি বেনেট। পররাষ্ট্রমন্ত্রী থাকাকালে লিবারম্যান ফিলিস্তিনি জনসংখ্যাকে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের জন্য উত্তর ইসরাইলে সরিয়ে দেয়ার জন্য ‘স্ট্যাটিক ট্রান্সফার’ পরিকল্পনা এগিয়ে নেয়ার জন্য আইনজীবীদের বলেছিলেন।
তবে ইসরাইলিরাও আইনকে নিজের হাতে তুলে নিতে উৎসাহিত হয়েছে। এর মধ্যেই তারা হয়ে পড়েছে ব্যাপকভাবে অস্ত্রে সজ্জিত সমাজ। ২০১৩ সালে বেসামরিক ইসরাইলিদেরকে প্রায় এক লাখ ৬০ হাজার এবং সংগঠনগুলোকে এক লাখ ৩০ হাজার আগ্নেয়াস্ত্র লাইসেন্স দেয়া হয়েছে, আরো অনেককে দেয়ার প্রক্রিয়া চলছে। জেরুসালেমে মেয়র নির বারকাত প্রকাশ্যেই এ কাজে উৎসাহ দেখাচ্ছেন। জেরুসালেমে তিনি এবং তার দেহরক্ষী রাস্তায় এক ইহুদি ছুরিকাঘাতকারীকে পঙ্গু করে দিয়েছেন। এরপর বারকাতকে ফিলিস্তিনিদের এলাকা বির হানিনায় অ্যাসাল্ট রাইফেল হাতে দেখা যায়। সতর্ক দাঙ্গাবাজেরা এর মধ্যেই জেরুসালেমের রাস্তায় রাস্তায় ফিলিস্তিনি শ্রমিকদের পাকড়াও করার জন্য আত্মপ্রকাশ করেছে। ফিলিস্তিনি পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের যেখানে কাজ করার জন্য মোতায়েন করা হবে, সেখানে তাণ্ডব চালানোর পরিকল্পনা করছে।
এসব মিলিয়েই দীর্ঘ ও রক্তাক্ত সংগ্রামের পথ তৈরি করেছে, যাতে উভয়পক্ষের অসংখ্য নির্দোষ লোকের প্রাণ কেড়ে নেবে। আপনি যদি চান তবে দেখতে পাবেন, ইসরাইল পদার্থবিজ্ঞানীদের ফাঁকি দিতে পারা প্রজন্মকে (স্থায়ী গতির রহস্য) আবিষ্কার করে ফেলেছে। প্রতিবারই নিরাপত্তা বাহিনী একটি ইন্তিফাদা দমন করার জন্য নিজেকে ধন্যবাদ দেয় এবং আরেকটির আত্মপ্রকাশ ঘটে। প্রতিবারই আরেকটি প্রজন্মের ব্যক্তিগত হতাশা, আশাহীনতা এবং অমর্যাদার অভিজ্ঞতা থেকে মশালটি আবার প্রজ্ব¡লিত হয়।
এই বিজয়, দমন ও প্রতিরোধের বৃত্ত থেকে বের হওয়ার একটি মাত্র পথ আছে। ইহুদি ইসরাইলিদের উচিত নিজেদের আয়নায় দেখা, তারা এখন যে ভূখণ্ডে বাস করছে সেখানকার লোকদের সাথে সমমর্যাদায় মিলেমিশে যাওয়া। একমাত্র কারণে এবং হ্যাঁ, কেবল একটি মাত্র কারণে। ফিলিস্তিনিরা এক প্রজন্ম থেকে অন্য প্রজন্ম এখানে এসেছে থাকার জন্য।
ডেভিড হার্স্ট মিডল ইস্ট আইয়ের এডিটর-ইন-চিফ। তিনি গার্ডিয়ানের আন্তর্জাতিক বিষয়ে প্রধান সংবাদদাতার দায়িত্ব পালন করেছেন। এ ছাড়া সাবেক অ্যাসোসিয়েট ফরেন এডিটর, ইউরোপিয়ান এডিটর, মস্কো ব্যুরো চিফ, ইউরোপিয়ান করেসপন্ডেন্ট, আয়ারল্যান্ড করেসপন্ডেন্ট হিসেবেও কাজ করেছেন। তিনি গার্ডিয়ানে যোগ দেয়ার আগে স্কটসম্যানেও কাজ করেছেন।
লেখাটি ভাষান্তর করেছেন মোহাম্মদ হাসান শরীফ

No comments

Powered by Blogger.