‘প্রধানমন্ত্রীকে প্রমাণ করতে হবে তিনি আসলেই পরিবেশবান্ধব’

সুন্দরবনে কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন বাতিল করে প্রধানমন্ত্রীকে প্রমাণ করতে হবে তিনি সত্যিই পরিবেশবান্ধব। কারণ পরিবেশ রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের জন্য তাকে চ্যাম্পিয়নস অব দি আর্থ পুরস্কার দেয়া হয়েছে। সুন্দরবনে এ প্রকল্পের বাস্তবায়ন হলে সুন্দরবনসহ দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের পরিবেশ বিপর্যয় হবে। শনিবার দুপুরে খুলনার শহীদ হাদিস পাকে অনুষ্ঠিত গণতান্ত্রিক বাম মোচার ‘সুন্দরবন ধ্বংসকারী’ রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প বাতিলের দাবিতে আয়োজিত সমাবেশে বক্তারা এসব কথা বলেন। সমাবেশে গণ সংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জুনায়েদ সাকী বলেন, “সুন্দরবন আমাদের সম্পদ। পরিবেশ মন্ত্রণালয় লোক দেখানো একটি পরিবেশ সুরক্ষা প্রতিবেদন করেছে। তাতে দেখানো হয়েছে রামপালে এ বিদ্যুৎ প্রকল্প হলে পরিবেশ তথা সুন্দরবনের কোনো ক্ষতি হবে না। আমরা এ পরিবেশ সুরক্ষা প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করছি। এ বিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য সুন্দরবনের নদীপথে যে কয়লার আমদানি করা হবে তাতে বনসহ এর জীববৈচিত্র্য মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হবে। পরিবেশের এ ক্ষতির কথা চিন্তা করে ভারত নিজের দেশে এ প্রকল্প থেকে পিছিয়ে এসেছে। অথচ তারা আমাদের দেশের পরিবেশ নষ্ট করে এ প্রকল্প বাস্তবায়নের চেষ্টা করছে।” জুনায়েদ সাকী আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী পরিবেশ সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার জন্য চ্যাম্পিয়ন অব দি আর্থ পুরস্কার পেয়েছেন। সুন্দরবনের পাশ থেকে এ বিদ্যুৎ প্রকল্প বাতিল করে প্রধানমন্ত্রীকে প্রমাণ করতে হবে তিনি আসলেই পরিবেশ সুরক্ষায় কাজ করছেন। আর তা না হলে বাংলাদেশের মানুষ প্রধানমন্ত্রীকে পরিবেশ ধ্বংসকারী হিসেবে আখ্যায়িত করবে। গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পাটির সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মিশু বলেন, ইউনেসকো থেকে শুরু করে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংগঠন রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র না করার পক্ষে মতো দিয়েছে। সেখানে স্বৈরাচারী সরকার দেশের জনগণ ও আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলোর কথায় কান না দিয়ে এনটিপি ও ভারতের স্বার্থ রক্ষায় মরিয়া হয়ে উঠেছেন। লংমার্চের পথে পথে যে হয়রানির শিকার হয়েছেন—এমনটা উল্লেখ করে মিশু বলেন, ‘মানিকগঞ্জ ও মাগুরায় আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালানো হয়েছে। খেতে দেওয়া হয়নি। পথে পথে বিভিন্ন জায়গায় আমাদের অবরুদ্ধ করে রাখার চেষ্টা করা হয়েছে। এতে সরকারের স্বৈরতান্ত্রিকতা ফুটে উঠেছে। স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে গণতন্ত্র এনেছি এ কারণে আমরা জানি স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে কীভাবে কথা বলতে হয়।’ সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, বিপ্লবী ওয়ার্কাস পার্টির খুলনা জেলার সমন্বয়কারী গোলাম মোস্তফা, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ-মার্কসবাদী) খুলনা জেলা সমন্বয়কারী বিপ্লব কান্তি মণ্ডল, সমাজতান্ত্রিক দলের কেন্দ্রীয় নেতা ইয়াসিন মিয়া প্রমুখ। সমাবেশ থেকে রোড মার্চের ওপর হামলা, লাঠিপেটা ও বাঁধা প্রদানের প্রতিবাদে আগামী ২০ অক্টোবর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের এবং পাঁচ নভেম্বর দেশব্যাপী সুন্দরবন সংহতি দিবস পালনের ঘোষণা দেয়া হয়। বিকেল পাঁচটায় সমাবেশ শেষ করে লংমার্চটি বাগেরহাটের কাটাখালির উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। সেখানে সমাবেশ শেষে রোডমার্চের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘোষণা করা হবে।

No comments

Powered by Blogger.