স্লোভেনিয়া মুসলিম শরণার্থীদের নিতে চাইছে না

যুদ্ধের বিভীষিকা থেকে বাঁচতে তাঁরা উত্তর ইউরোপে যেতে চান।
তাঁরা প্রায় ২ হাজার ৭০০ জন। অধিকাংশই সিরীয়, আর
কয়েকজন আফগান। গ্রিসের সরকারি ফেরিতে চড়ে তাঁরা
দেশটিতে পৌঁছান। পাইরিয়াস বন্দর থেকে গতকাল তোলা ছবি। এএফপি
ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত (ইইউ) মধ্য ইউরোপীয় দেশ স্লোভেনিয়া যুদ্ধপীড়িত দেশ সিরিয়ার মুসলিম শরণার্থীদের নিতে অস্বীকার করেছে। স্লোভেনিয়া সরকার মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের বাদ দিয়ে সিরিয়া থেকে আসা ২০০ খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বী শরণার্থীকে নিতে চাইছে। ভূমধ্যসাগর দিয়ে ইতালি ও গ্রিসে আসা লক্ষাধিক শরণার্থীর মধ্যে ৪০ হাজার শরণার্থীকে ইইউভুক্ত দেশগুলোতে পুনর্বাসনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। গত জুন মাসে ইইউর সভায় নেওয়া ওই সিদ্ধান্তের আলোকেই স্লোভেনিয়ার ২০০ শরণার্থীর পুনর্বাসিত হওয়ার কথা। স্লোভেনিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইভান মেটিনক গতকাল বৃহস্পতিবার দেশটির রাজধানী লুবলিয়ানায় মুসলিম শরণার্থীদের নিতে অপারগতার কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা সিরিয়ার মুসলিম শরণার্থীদের নেওয়ার বিরুদ্ধে নই। আমরা ধর্মবিদ্বেষীও নই। তবে আমাদের দেশে কোনো মসজিদ না থাকার কারণে মুসলিম শরণার্থীদের সমস্যায় পড়তে হবে।’
স্লোভেনিয়ার এই যুক্তিকে ইইউ ও জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশন একধরনের বৈষম্য বলে আখ্যায়িত করেছে। গত মার্চ ও এপ্রিল মাসে ছোট ছোট নৌযানে করে ভূমধ্যসাগর হয়ে গ্রিস ও ইতালিতে পাড়ি দিতে গিয়ে এক হাজারের বেশি শরণার্থীর মৃত্যু হয়। এসব ঘটনায় ইউরোপের মানবাধিকার সংগঠনগুলোর সমালোচনার মুখে পরে ইইউ। এই অবস্থায় সংঘাত ও দাঙ্গাপীড়িত আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো থেকে আসা মানুষদের পুনর্বাসনের সিদ্ধান্ত নেয় ইইউ। এর পাশাপাশি অভিবাসনপ্রার্থীদের মৃত্যু রুখতে বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণের নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়। পাচারকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ ছাড়াও অভিবাসীদের পরিকল্পিতভাবে পুনর্বাসনে ইউরোপজুড়ে পাঁচ হাজার স্থান নির্ধারণের সিদ্ধান্ত হয়। ইইউভুক্ত দেশে ইউরোপীয় শরণার্থীদের নেওয়ার বিরুদ্ধে বিভিন্ন দেশে বিক্ষোভ ও শরণার্থীশিবিরে হামলার ঘটনা ঘটেছে। হাঙ্গেরি বলকান অঞ্চলের শরণার্থী ও অভিবাসীদের ঠেকাতে দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় সার্বিয়া সীমান্তে চার মিটার উঁচু বেড়া নির্মাণ করছে। ইইউর পরিসংখ্যান দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে, গত বছর ইউরোপে ৬ লাখ ২৭ হাজার মানুষ রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা করেছিলেন।

No comments

Powered by Blogger.