সবজি বেচে হাসপাতাল গড়লেন সুভাষিণী

লোকের বাড়ি বাসন মেজেছেন, সবজি বিক্রি করেছেন, দিনমজুরি করেছেন, লোকের জুতা পালিশ করেছেন দিনের পর দিন। মাথানত করেছেন, সারা জীবন মাথা উঁচু করে বাঁচবেন বলে। অবশেষ সফল হলেন। নিজের কষ্টার্জিত টাকা দিয়ে তিনি গড়ে ফেললেন একটি হাসপাতাল। অসাধারণ কীর্তিমান তিনি ভারতের অতি সাধারণ একজন নারী সুভাষিণী মিস্ত্রী। ১২ বছরে বিয়ে হয়ে যায় সুভাষিণীর। কোলে ৪ সন্তান। ২৩ বছরে মারা যান স্বামী। বিনা চিকিৎসায় স্বামীর মৃত্যুর শোক সামলাবেন, নাকি ৪ সন্তানকে মানুষ করবেন। তিনি লেখাপড়াও শেখেননি। ছোটখাটো চাকরি জুগিয়ে সংসার চালানোর পথও বন্ধ। কিছু একটা করতেই হবে... এমন স্থির করলেন!
চোখের সামনে আর কোনো ব্যক্তিকে যাতে বিনা চিকিৎসায় প্রাণ খোয়াতে না হয়, এ জন্য নিজেকে নিজে কথা দিলেন সুভাষিণী দেবী। মনে মনে পণ করলেন হাসপাতাল গড়বেন। সেই হাসপাতালে গরিবের চিকিৎসা হবে বিনা পয়সায়। সবজি বেচে, আয়ার কাজ করে, জুতা পালিশ করে যা পেতেন, তা থেকেই জমাতেন। অল্প অল্প করেই জমে যায় এক লাখ ভারতীয় মুদ্রা। সেই টাকায় হংসপুকুরে এক একর জমি কিনলেন। নিজের মাথা গোঁজার জন্য নয়, গরিবের চিকিৎসার জন্য। বড় ছেলে ততদিনে øাতক হয়েছে। দুই ছেলের লেখাপড়ার খরচ দিতে পারছিলেন না বলে মেজ ছেলে অজয়কে অনাথ আশ্রমে দিয়েছিলেন সুভাষিণী। অজয় ততদিনে ডাক্তার হয়েছে। সুভাষিণী অজয়কেই বললেন, ৪০ বছর ধরে লালন করে আসা স্বপ্নটির কথা। শুরু হল ছোট্ট একটা কুঁড়েঘরে গরিব রোগীদের চিকিৎসা। ১৯৯৬ সালে এর নাম দেয়া হয় হিউম্যানিটি হাসপাতাল।

No comments

Powered by Blogger.