বুলবুল ললিতকলা একাডেমি ভোটকেন্দ্র হাজি সেলিম, গোলাগুলি–সংঘর্ষ by গোলাম মর্তুজা

বুলবুল ললিতকলা একাডেমি কেন্দ্র থেকে হাজি সেলিমকে
সরিয়ে নিচ্ছেন তাঁর লোকজন। তিনি কেন্দ্রে ঢোকার
পর আ.লীগ-সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী ও বিদ্রোহী প্রার্থীর
মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয় l ছবি: সুমন ইউসুফ
পুরান ঢাকার ওয়াইজঘাটের (৩৭ নম্বর ওয়ার্ড) বুলবুল ললিতকলা একাডেমি ভোটকেন্দ্রে আওয়ামী লীগ-সমর্থিত ও বিদ্রোহী প্রার্থীর লোকজনের সংঘর্ষে একজন গুলিবিদ্ধসহ কয়েকজন আহত হয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার ভোট চলাকালে স্থানীয় সাংসদ হাজি সেলিম সেই কেন্দ্রে ঢুকলে এই সংঘর্ষ বাধে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।
৩৭ নম্বর ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্রার্থী আবদুর রহমান মিয়াজী (ঘুড়ি মার্কা) ও মো. শাহাবুদ্দীনের (ঠেলাগাড়ি মার্কা) লোকজনের মধ্যে সকাল থেকেই উত্তেজনা চলছিল। এই দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের পরে পোগোজ স্কুল কেন্দ্রে সকালে ভোট গ্রহণ বন্ধ হয়ে যায়। সুরিটোলা প্রাথমিক বিদ্যালয়েও এই দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে।
বুলবুল ললিতকলা একাডেমি কেন্দ্র নিয়ে সোমবার রাত থেকেই উত্তেজনা চলছিল। ঘুড়ি মার্কার প্রার্থীর পক্ষ নিয়ে সাংসদ হাজি সেলিম সোমবার রাতে বুলবুল ললিতকলা একাডেমি কেন্দ্রে এলে সেখানে হইচই হয়। সাংসদ কেন্দ্রে না ঢুকেই ফিরে যান।
এরপর গতকাল বেলা পৌনে দুইটার দিকে দুই পক্ষের উত্তেজনার মধ্যেই হাজি সেলিম লোকজন নিয়ে বুলবুল ললিতকলা একাডেমি কেন্দ্রে ঢোকেন। এ সময়ই কেন্দ্রে বোমা বিস্ফোরণ ও গুলির শব্দ শোনা যায়। এরপরই বিদ্রোহী প্রার্থী শাহাবুদ্দীনের লোকজন কেন্দ্র থেকে বেরিয়ে অভিযোগ করেন, হাজি সেলিম তাঁদের বের করে দিয়ে ঘুড়ি মার্কার পক্ষে জাল ভোট দেওয়াচ্ছেন। শাহাবুদ্দীনের কর্মী নার্গিস আক্তার, মেরি ও সাজু বেগম অভিযোগ করেন, হাজি সেলিম তাঁদের মারধর করেছেন।
কেন্দ্রসংলগ্ন রাস্তায় দুই পক্ষের প্রার্থীরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এ সময় আগ্নেয়াস্ত্র কোমরে গুঁজে একদল তরুণকে দৌড়াতে দেখা যায়। এদের কয়েকজন গুলিও ছোড়ে। এদের গোলাগুলির সময় লিটন নামের এক ব্যবসায়ী গুলিবিদ্ধ হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
পরে পুলিশ এসে ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। এ সময় পুলিশেরও একটি মাইক্রোবাস ভাঙচুর করে বিবদমান কর্মীরা।
এদিকে এ সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ছবি তুলতে গেলে একটি অনলাইন গণমাধ্যমের ফটো সাংবাদিককে এক পুলিশ কর্মকর্তা অস্ত্র উঁচিয়ে বলেন, ‘ছবি তুললে গুলি করব।’
বেলা দুইটার দিকে হাজি সেলিম কেন্দ্র ছেড়ে চলে যান। এর পরও উভয় পক্ষের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা চলতে থাকে। কেন্দ্রে প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয়। আড়াইটার পরে কেন্দ্রে ভোট দিতে আসার জন্য প্রার্থীদের লোকজন ডাকাডাকি শুরু করেন। তবে এরপর কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি ছিল না বললেই চলে।
কেন্দ্রে ঢুকে মারধর ও জাল ভোটের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে হাজি সেলিম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি কিছু দেখিনি। আমি জানি না।’

No comments

Powered by Blogger.