ওসামার সন্ধানদাতা সেই চিকিৎসকের আইনজীবীকে হত্যা

আল কায়দার সাবেক প্রধান ওসামা বিন লাদেনকে খুঁজে বের করতে যুক্তরাষ্ট্রকে সহায়তাকারী পাকিস্তানি চিকিৎসক শাকিল আফ্রিদির আইনজীবীকে হত্যা করেছে অস্ত্রধারীরা। দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় পেশোয়ার নগরীতে মঙ্গলবার এ ঘটনা ঘটে। তালেবানের অন্তত দুটি গোষ্ঠী সামিউল্লাহকে হত্যার দাবি করেছে।
মঙ্গলবার বাড়ি ফেরার পথে গাড়িতে থাকা সামিউল্লাহ আফ্রিদিকে গুলি করে অজ্ঞাত বন্দুকধারীরা। পরে তিনি মারা যান।
জঙ্গিদের হুমকির মুখে ২০১৩ সালে সামিউল্লাহ পাকিস্তান থেকে চলে যায়। গত বছর তিনি দেশে ফিরে আসেন এবং তিনি ওই চিকিৎসকের আইনজীবী হিসেবে আর কাজ করছেন না।
খাইবারের আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকায় জঙ্গিগোষ্ঠী লস্কর-ই-ইসলামিকে সহযোগিতার অভিযোগে দোষী প্রমাণিত হওয়ায় শাকিলকে ৩৩ বছর কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
২০১১ সালের ২ মে পাকিস্তানের অ্যাবোটাবাদের একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে মার্কিন নেভি সিলের সদস্যরা লাদেনকে হত্যা করে। ওই এলাকায় শাকিল একটি ভুয়া টিকাদান কর্মসূচি পরিচালনা করেছিলেন। ওই এলাকার বাসিন্দাদের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহের উদ্দেশ্যে ওই তিনি কর্মসূচিটি চালান। তিনি যুক্তরাষ্ট্র লাদেনের অবস্থান সম্পর্কে তথ্য দিয়েছিলেন।
অনেকেই মনে করেন, লাদেনকে খোঁজার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ’কে সহযোগিতার কারণেই শাকিলকে ওই শাস্তি দেয়া হয়েছে।
সামিউল্লাহ গত বছর বলেছিলেন, ‘মানবাধিকার বিবেচনায় আমি এই মামলাটি লড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। তবে এখন আমার নিজের জীবন রক্ষার দিকেই মনোযোগ দিতে হবে। এটার গুরুত্বই বেশি।’ বিবিসি।
আরও ৯ জনের ফাঁসি : পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের বিভিন্ন জেলে বুধবার সকালে আরও ৯ জনের ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে। একদিন আগে মঙ্গলবার দেশটিতে ১২ জনের ফাঁসি কার্যকর হয়।
১৬ ডিসেম্বর ২০১৪ সালে পোশেয়ারে সেনাবাহিনী পরিচালিত একটি স্কুলে জঙ্গি হামলায় শিক্ষার্থীসহ প্রায় ১৫০ জন নিহত হওয়ার পর এ পর্যন্ত দেশটিতে ৪৮ দোষীর ফাঁসি দেয়া হল।
ডনের খবরে বলা হয়, লাহোরে একজন, জাহাঙে দু’জন, ফায়সালাবাদে দু’জন, রাওয়ালপিন্ডিতে দু’জন, মিনাওয়ালিতে একজন ও অ্যাটকে একজনের ফাঁসি কার্যকর করা হয়।
দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র ওই ফাঁসি কার্যকরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। গত ডিসেম্বর মাসে মৃত্যুদণ্ডের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেয়ার পর পর দু’দিনে বিপুলসংখ্যক দোষীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হল। পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, জঙ্গিবাদের উত্থান ঠেকাতে এই পথে হাঁটছে দেশটির সরকার। অবশ্য এ জন্য সর্বদলীয় সমর্থন পেয়েছে নওয়াজ শরিফের সরকার।
এদিকে জঙ্গিবাদের মোকাবিলায় পাকিস্তান সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যেসব মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের আপিল আবেদন খারিজ হয়েছে, সেসব জঙ্গির ফাঁসি কার্যকর করা হবে।
তবে, মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, পাকিস্তানে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ অনেক ক্ষেত্রেই নির্ভরযোগ্য নয়। ডন।

No comments

Powered by Blogger.