সিটি করপোরেশন এলাকায় ২৩ হাজার টন বর্জ্য অপসারণ

আজ বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা প্রথম আলো​কে এই তথ্য জানান। পশুর হাট ছাড়াও রাজধানীর প্রধান সড়ক ও অলিগলি থেকে বর্জ্য অপসারণ করা হয়েছে এবং হচ্ছে। নগরের মতিঝিল, কমলাপুর, গোপীবাগ বালুর মাঠ, ধোলাইখাল, ধূপখোলা, কারওয়ান বাজার, আগারগাঁও, বনানী-কাকলী প্রভৃতি এলাকা ঘুরে দেখা যায়, সিটি করপোরেশন ছাড়াও অনেক এলাকার বাসিন্দারা নিজ উদ্যোগে বর্জ্য পরিষ্কার করেছেন। আগের বছরগুলোর তুলনায় দুর্গন্ধও কম।

ডিএনসিসির বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রধান বিপন কুমার সাহা প্রথম আলোকে বলেন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায় দুপুর ১২টা পর্যন্ত নয় হাজার টনের মতো বর্জ্য অপসারণ করা হয়। সাড়ে পাঁচটার মধ্যে আরও দুই হাজার টনের মতো অপসারিত হয়। তিনি বলেন, মূলত ঈদের আগের দিন রাত থেকেই পশুর হাটগুলোতে বর্জ্য পরিষ্কারের কাজে হাত দেওয়া হয়। আনুষ্ঠানিকভাবে ঈদের দিন বেলা দুপুর দুইটা থেকে কাজ শুরু হয়।
দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রধান ক্যাপ্টেন রকিব উদ্দন ভূঁইয়া বলেন, মোট বর্জ্যের প্রায় ৭০ শতাংশ অর্থাৎ ১২ হাজার টনের মতো বর্জ্য অপসারণ করা হয়েছে।
দুই সিটি করপোরেশন থেকেই গতকাল সোমবার দুপুরে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘পশুর বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রম’ উদ্বোধনের সময় ঘোষণা করা হয়, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বর্জ্য অপসারণ শেষ করা হবে।
রাজধানীর কমলাপুরে বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ডিএসসিসির প্রশাসক ইব্রাহীম হোসেন খান ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বর্জ্য অপসারণের ঘোষণা দেন। এ সময় করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আনসার আলী খানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা উত্তম কুমার রায় জানান, কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাত হাজার কর্মী নিয়োজিত আছেন। পশু কোরবানির জায়গা স্যাভলন দিয়ে ধুয়ে সেখানে ব্লিচিং পাউডার ছিটানো হচ্ছে। বর্জ্য অপসারণে ৬০০ ভ্যান সার্ভিস আছে। সেখানে কাজ করছেন দুই হাজার ৪০০ কর্মী। এ ছাড়া ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নিয়ন্ত্রণকক্ষে ৯৫৫৬০১৪ নম্বরে ফোন করে যে কেউ বর্জ্য অপসারণের জন্য বিষয়টি জানালে তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপক রকিব উদ্দিন ভূঁইয়ার নেতৃত্বে ২৬ সদস্যের এক কমিটি বর্জ্য অপসারণের বিষয়ে তদারক করছে বলেও জানান উত্তম কুমার রায়।
অন্যদিকে উত্তর সিটি করপোরেশনের পাঁচটি অঞ্চলের সাতটি পশুর হাট থেকে বর্জ্য অপসারণ কাজ অনেকটা শেষ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রধান বিপন কুমার সাহা। হাটগুলো হচ্ছে আগারগাঁও, সোনারগাঁও জনপদ, বনানী-কাকলী, বারিধারা জে ব্লক, খিলক্ষেত, মিরপুরে বনরূপা এলাকার হাট।
আজ বেলা একটার দিকে বিমানবন্দর সড়কের পাশে বনানী এলাকার পশুর হাটে গিয়ে দেখা যায়, পে-লোডারের সাহায্যে মাটি থেকে বর্জ্য তুলে ডাম-ট্রাকে ভর্তি করা হচ্ছে। সেখানে প্রায় পাঁচটি ট্রাক আছে। সেখান থেকে বর্জ্য নেওয়া হবে উত্তরের বর্জ্য রাখার স্থান আমিনবাজার আবর্জনা ক্ষেত্রে। ময়লাবাহী ৩০০ গাড়ি করে উত্তরের নিয়মিত ও অনিয়মিত প্রায় সাড়ে সাত হাজার শ্রমিক দিয়ে কাজ করা হয়। এঁদের মধ্যে প্রতি ওয়ার্ডে ১০ জন করে শ্রমিক কাজ করছেন।
এদিকে সিটি করপোরেশন থেকে পরিষ্কার করার পর আবারও রাস্তায় পশু কোরবানি দিতে দেখা যায়। দুপুর দেড়টার দিকে পরিবাগ গার্ডেন সিটির কাছে রাস্তায় দেখা যায়, বড় আকারের একটি গরু কোরবানি দেওয়া হচ্ছে। রামকৃষ্ণ মিশন রোড, পূর্ব গোলাপবাগ প্রভৃতি এলাকা ঘুরেও এই দৃশ্য দেখা যায়।
হাজারীবাগ এলাকায় আজ দুপুরেও রাস্তায় বর্জ্য ও রক্ত দেখা যায়। রিসেন্ট ট্যানারির সামনের রাস্তায় পথচারীদের নাকে হাত দিয়ে চলতে দেখা যায়। দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ থেকে জানানো হয়, বারবার পশুর চামড়া আনা-নেওয়ার কারণে এসব রাস্তা আবর্জনাপূর্ণ থাকছে।

No comments

Powered by Blogger.