লেসোথোয় সামরিক অভ্যুত্থান পালিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী

আফ্রিকার দেশ লেসোথো’তে সামরিক অভ্যুত্থান ঘটেছে। সেনাবাহিনী হত্যা করতে পারে এমন আশঙ্কায় পালিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকায় আশ্রয় নিয়েছেন সে দেশের প্রধানমন্ত্রী টমাস থাবানে। সেনাবাহিনী রাস্তায় রাস্তায় টহল দিচ্ছে। ঘিরে রেখেছে গুরুত্বপূর্ণ সরকারি প্রতিষ্ঠান। তবে তারা সামরিক অভ্যুত্থানের কথা অস্বীকার করেছে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি। এতে আরও বলা হয়, দক্ষিণ আফ্রিকা চারদিক থেকে ঘিরে রেখেছে লেসোথোকে। এর প্রধানমন্ত্রী সেখানে পালিয়ে গিয়ে বলেছেন, তিনি জীবন নিয়ে সন্দিহান। তাকে হত্যা করা হতে পারে। তাই তিনি পালিয়ে গিয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকায়। ১৯৬৬ সালে স্বাধীনতা অর্জন করে এ দেশটি। তারপর থেকে বিভিন্ন সময়ে সেখানে দেখা দিয়েছে সামরিক অভ্যুত্থান। এই দেশে জোট সরকারের নেতৃত্বে ছিলেন প্রধানমন্ত্রী থাবানে। কিন্তু জোটের ভিতরকার দ্বন্দ্বের জেরে গত জুনে তিনি পার্লামেন্ট অধিবেশন স্থগিত করেন। অভিযোগ আছে, এ জন্য তিনি তার সরকারকে খর্ব করেছেন। তবে এমন অভিযোগ মানতে নারাজ থাবানে। তিনি বলেন, সেনাবাহিনী তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছে যে, তার সরকার অকার্যকর। এ কারণে সেখানে সামরিক অভ্যুত্থান ঘটেছে। তিনি বলেন, আমাকে জনগণ ক্ষমতাচ্যুত করেনি। আমাকে ক্ষমতাচ্যুত করেছে সেনাবাহিনী। সেনাদের এমন কর্মকাণ্ড অবৈধ। আমি শনিবার সকালে দক্ষিণ আফ্রিকায় চলে এসেছি। যদি লেসোথোতে আমার জীবন বিপদে না পড়ে এমন নিশ্চয়তা দেয়া হয় তাহলে আমি দেশে ফিরবো। কিন্তু আমাকে হত্যা করা হবে এমন আশঙ্কা থাকলে আমি দেশে ফিরবো না। ওদিকে লেসোথোর রাজধানী মাসিরু থেকে বিবিসির সাংবাদিক বাসিলডন পেটা বলেন, অভ্যুত্থান ঘটে স্থানীয় সময় রাত তিনটায়। ভোরে গুলির শব্দ শোনা যায়। তবে দিনশেষে রাজধানী দৃশ্যত শান্ত। লোকজন বাড়িতে অবস্থান করছে। তবে মিডিয়ায় খবর চেপে যাওয়া হয়েছে। সবকিছু দেখে মনে হচ্ছে, এটা একটি সামরিক অভ্যুত্থান। প্রধানমন্ত্রীকে ক্ষমতাচ্যুত করতেই তা করা হয়েছে। সেনাদের ক্ষমতা দখল ছাড়া আর কোন উদ্দেশ্য আছে বলে মনে হয় না। কোন হত্যাকাণ্ডের খবরও পাওয়া যায় নি। এ ঘটনাকে রক্তপাতহীন একটি সামরিক অভ্যুত্থান বলাই ঠিক হবে। তবে পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে। কি ঘটতে যাচ্ছে কেউ তা বলতে পারছে না। অন্য এক সূত্রে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী সেনাপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল কেনেডি তাইকামোলিকে সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেছিলেন। এরই প্রেক্ষিতে এ ঘটনা ঘটলো। সেনাবাহিনী বলেছে, সেনাপ্রধান এখনও দায়িত্বে বহাল আছেন। সেনাবাহিনী গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারকে সমর্থন করে। তবে সেনা মুখপাত্র মেজর নাতেলি নতোই সামরিক অভ্যুত্থানের কথা অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেছেন, অভ্যুত্থানের মতো কিছু ঘটে নি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। সেনাবাহিনী তাদের ব্যারাকে ফিরে গেছে। গতকাল সকালের দিকে মাসিরুর রাস্তায় সেনাদের দেখা গেছে। এ সময় গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। রেডিও স্টেশনের সম্প্রচার বন্ধ করে দেয়া হয়। টেলিফোন লাইন কেটে দেয়া হয়। পরে তা সচল হয়। দেশটির ক্রীড়াবিষয়ক মন্ত্রী থেসেলি মাসেরিবানে বলেছেন, সেনাবাহিনী রাষ্ট্রীয় বাসভবন ঘিরে রেখেছে।

No comments

Powered by Blogger.