নিজামীর রায়- আসলে দড়ি পড়েছে চালাকের গলায়

যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে দলীয় নেতাদের রায় ঘোষণার তারিখ থাকলেই হরতাল ডেকে বসে জামায়াতে ইসলামী। আর রায়ে ফাঁসির ঘোষণা থাকা মাত্র সে হরতালকে সর্বাত্মক বিক্ষোভে পরিণত করতে ঝাঁপিয়ে পড়ে তারা। এর ব্যতিক্রম হয়নি কখনও। আন্তর্জাতিক নেতৃবৃন্দের সফরের সময় এমনটিই দেখা গেছে বেশি। তাতে জামায়াত ইসলামীর সহিংস রাজনীতির পরিচয় বিদেশীরা প্রত্যক্ষ করেছেন সরাসরি। আর ব্যাপারটা সরকারের পক্ষে গেছে বিশেষভাবে। কারণ বিদেশী অতিথি বা প্রতিনিধি দলের সামনে জামায়াতকে মৌলবাদী জঙ্গি সংগঠন হিসেবে তারা ভালভাবে পেরেছেন তুলে ধরতে। সেই সঙ্গে তাদের সঙ্গে জোটবাঁধা বিএনপি তথা ১৯ দলকেও চিহ্নিত করতে পেরেছেন জঙ্গিবাদের মদতদাতা হিসেবে। ২৫শে জুন সুষমা স্বরাজের সফর ঘিরে দেখা দেয় একই পরিস্থিতি। তা-ও আবার জামায়াত ইসলামীর শীর্ষ নেতা, দলের আমির মতিউর রহমান নিজামীর রায় ঘোষণার দিনক্ষণ। আগে তো রায় ঘোষণার ব্যাপার ছিল দলের নেতাদের, এবার খোদ দলের প্রধান নেতা। ফলে ধারণা করাই যায় এবার জামায়াতের হরতাল বিক্ষোভ কতখানি কি সহিংস সন্ত্রাসী রূপ ধারণ করতে পারে! তাতে সুষমা স্বরাজ দেখতেন ‘উগ্র সাম্প্রদায়িক এক ঘোরতর ইসলামী জঙ্গি গোষ্ঠী’র বীভৎস ভয়াল রূপ! কিন্তু তা হলো না। এবার ব্যাপারটার মোড় ঘুরে যায় অন্য দিকে। ২৩শে জুন ১৯ দলীয় জোটের সভায় জামায়াতকে বলা হয় এ সপ্তাহে হরতাল না দিয়ে পরের সপ্তাহে দিতে। দলীয় প্রধানের জীবন-মরণ প্রশ্ন- তাই এমন একটি প্রস্তাব মেনে নেয়া সহজ ছিল না তাদের পক্ষে। কিন্তু বৃহত্তর স্বার্থের কথা ভেবে রাজি হন তারা। সরে যান হরতাল বা অন্য কোন প্রতিবাদ কর্মসূচি থেকে। ১৯ দলীয় জোটের সভার এ সিদ্ধান্তের খবর সরকারের হাইকমান্ডে পৌঁছতে দেরি হয় না। হরতাল হচ্ছে না। বিক্ষোভ ইত্যাদিও হচ্ছে না। তারপরই কাশিমপুর কারাগারে অসুস্থ হয়ে পড়েন মতিউর রহমান নিজামী। উচ্চ রক্তচাপ জনিত সমস্যা দেখা দেয়। ডাক্তারদের নিবিড় পর্যবেক্ষণ শুরু হয়। তারপর কারা কর্তৃপক্ষ চিঠি পাঠায় ট্রাইব্যুনালে। রায় অপেক্ষমান ঘোষণা করা হয়। রায় ঘোষণার দিনে এ ঘটনা সম্পর্কে সন্দিহান হয়ে পড়ে কোন কোন মহল। তারা অভিযোগ জানান। বলেন মতিউর রহমান নিজামীকে ‘অসুস্থ করা’ হয়েছে। কাশিমপুর কারাগার থেকে যাকে কেন্দ্রীয় কারাগার পর্যন্ত আনা গেল- তাকে আদালত পর্যন্ত ওইটুকু পথ আনা যাবে না? আগে তো অন্য অপরাধীকে হুইল চেয়ারে করেও আনা হয়েছে। গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র এমরান এইচ সরকার অভিযোগ করেন সমঝোতার। সরকার নাকি সমঝোতা করেছে জামায়াতের সঙ্গে! তবে তেমন কোন সমঝোতার কথা উড়িয়ে দিয়ে কেউ কেউ বলছেন, আসলে দড়ি পড়েছে অতি চালাকের গলায়।
হঠাৎ ‘অসুস্থ’ নিজামীর রায় ফের অপেক্ষমাণ
আদালত থেকে আমাদের বিশেষ প্রতিনিধি জানান, জামায়াতে ইসলামীর আমীর মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার রায় ঘোষণা করা হয়নি। অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে কারাকর্তৃপক্ষ তাকে ট্রাইব্যুনাল হাজির না করার পর গতকাল মামলাটি নতুন করে রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রেখেছে ট্রাইব্যুনাল। নিজামীর অনুপস্থিতিতে রায় ঘোষণার আইনি প্রশ্নে শুনানি শেষে সংক্ষিপ্ত ঘোষণায় ট্রাইব্যুনাল ১-এর চেয়ারম্যান বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম বলেন, আমরা কারা-কর্তৃপক্ষের চিঠি পেয়েছি। উভয় পক্ষের আইনজীবীদের বক্তব্যও শুনেছি। এই পরিস্থিতিতে তার অনুপস্থিতিতে রায় দেয়া আমরা যুক্তিসঙ্গত মনে করছি না। এ কারণে  আজ আমরা রায় দিচ্ছি না। দ্রুত কারা কর্তৃপক্ষের কাছে তার স্বাস্থ্য পরীক্ষার পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন চাইছি। মামলাটি সিএভি (রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ) রাখা হচ্ছে। ট্রাইব্যুনালের অন্য দুই সদস্য ছিলেন- বিচারপতি মো. জাহাঙ্গীর হোসেন এবং বিচারপতি আনোয়ারুল হক। এ নিয়ে মামলাটি তৃতীয়বারের মতো রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখা হলো। এর আগে গত ১৩ই নভেম্বর এবং ২৪শে মার্চ মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখা হয়। সর্বশেষ মঙ্গলবার জানানো হয় বুধবার এ মামলার রায় ঘোষণা করা হবে। এ রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে গতকাল সকাল থেকে ট্রাইব্যুনাল এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়। কিন্তু সকাল ১০টার দিকে অসুস্থতার কারণে নিজামীকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা যাচ্ছে না জানিয়ে কারা কর্তৃপক্ষের দেয়া চিঠি ট্রাইব্যুনালে এসে পৌঁছায়। বেলা ১১টার দিকে আসামির অনুপস্থিতিতে রায় ঘোষণা প্রশ্নে ট্রাইব্যুনালে শুনানি হয়। এ সময় রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন প্রসিকিউটর মোহাম্মদ আলী। তিনি বলেন, বিষয়টি ট্রাইব্যুনালের এখতিয়ার। অন্তর্নিহিত ক্ষমতাবলে ট্রাইব্যুনাল এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত দিতে পারে। অন্যদিকে, মতিউর রহমান নিজামীর পক্ষে শুনানি করেন এডভোকেট মিজানুল ইসলাম। তিনি বলেন, নিজামী এ মামলার বিচারিক কার্যক্রম চলাকালে একদিনও অনুপস্থিত থাকেননি। সুতরাং তার অনুপস্থিতিতে রায় হওয়ার কোন সুযোগ নেই। সংক্ষিপ্ত শুনানি শেষে সিদ্ধান্তের কথা জানায় ট্রাইব্যুনাল। ওদিকে, নিজামীকে চিকিৎসকের পরামর্শে কারাগারে মেডিকেল সুবিধায় পূর্ণ বিশ্রামে রাখা হয়েছে বলে সাংবাদিকদের জানান ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার ফরমান আলী। তিনি জানান, সোমবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন নিজামী। তিনি মারাত্মক উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন। এ অবস্থায় রাতেই নিজামীকে জেল কর্তৃপক্ষের নিজস্ব চিকিৎসক ডেকে পরীক্ষা করানো হয় ও চিকিৎসা দেয়া হয়। অবস্থার উন্নতি না হলে সকাল ৮টায় তাকে আরও একবার চিকিৎসক দেখেন এবং পূর্ণ বিশ্রামে রাখার পরামর্শ দেন। চিকিৎসকের পরামর্শেই মতিউর রহমান নিজামীকে ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়নি বলে জানান ফরমান আলী। একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় হত্যা, লুট, ধর্ষণ এবং বুদ্ধিজীবী হত্যার মতো ১৬টি অভিযোগে ২০১২ সালের ২৮শে মে জামায়াতের এই শীর্ষ নেতার বিচার শুরু হয়। ২০১৩ সালের ১৩ই নভেম্বর বিচারপতি এটিএম ফজলে কবীরের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখেন। তবে ৩১শে ডিসেম্বর বিচারপতি এটিএম ফজলে কবীর অবসরে চলে যাওয়ায় তখন আর এ মামলার রায় ঘোষণা করা হয়নি। বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম চেয়ারম্যান হওয়ার পর এ মামলার যুক্তি-তর্ক নতুন করে শোনা হয়। দ্বিতীয় দফা যুক্তিতর্ক শেষে গত ২৪শে মার্চ মামলাটি নতুন করে রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখা হয়। দশ ট্রাক অস্ত্র মামলায় চট্টগ্রামের একটি আদালত এর আগে সাবেক শিল্পমন্ত্রী নিজামীর বিরুদ্ধে মৃত্যুদ-ের রায় ঘোষণা করেছিল। ২০১৩ সালের ২১শে জানুয়ারি মাওলানা আবুল কালাম আযাদের বিরুদ্ধে সর্বপ্রথম যুদ্ধাপরাধ মামলার রায় ঘোষণা করা হয়। তার অনুপস্থিতিতে ঘোষিত ওই রায়ে তাকে মৃত্যুদ- দেয়া হয়। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রায় অনুযায়ী জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লার মৃত্যুদ- এরই মধ্যে কার্যকর হয়েছে। দলটির নায়েবে আমীর মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মামলাটি আপিল বিভাগে রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রয়েছে। এছাড়া ট্রাইব্যুনালের রায়ে দ-িত হয়েছেন জামায়াতের সাবেক নেতা গোলাম আযম, বর্তমান নেতা আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, মুহাম্মদ কামারুজ্জামান, বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও দলটির সাবেক মন্ত্রী আবদুল আলীমের। পলাতক অবস্থায় মৃত্যুদ-ের রায় হয়েছে আশরাফুজ্জামান খান ও চৌধুরী মইনুদ্দিনের বিরুদ্ধে।
রায় না হওয়ায় ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া
মতিউর রহমান নিজামীর বিরুদ্ধে রায় ঘোষণা না করায় হতাশা প্রকাশ করেছেন বিশিষ্টজনেরা। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভাইস চ্যান্সেলর (ভিসি) অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন বলেন, নিজামীর মামলার রায় ঘোষণার বিষয়টি পিছিয়ে দেয়া খুবই দুঃখজনক। উনি (নিজামী) যদি গাজীপুর থেকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে আসতে পারেন তাহলে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ট্রাইব্যুনালে আসতে পারবেন না কেন? রায়  পেছানোর প্রতিক্রিয়ায় সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু বলেন, নিজামী যদি সত্যিই এত অসুস্থ হয়ে থাকেন তাহলে কিছু বলার নেই। বিচার কার্যক্রমে সরকারের আন্তরিকতা ও স্বচ্ছতার বিষয়টি সরকারকেই নিশ্চিত করতে হবে জানিয়ে তিনি বলেন, এই অসুস্থতার যথাযথ প্রমাণ সংশিষ্ট কোন গ্রহণযোগ্য চিকিৎসকের মাধ্যমে গণমাধ্যমের সামনে তুলে ধরা উচিত। এ ব্যাপারে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান ইসমত কাদির গামা বলেন, মুক্তিযুদ্ধবিরোধী জামায়াত নেতা নিজামীর মামলার রায়ে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদ-ের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আমরা আন্দোলন করে আসছি। আজ (মঙ্গলবার) রায় ঘোষণা হবে শুনে এখানে (ট্রাইব্যুনাল এলাকা) এসেছি। কিন্তু হঠাৎ অসুস্থতার কারণ  দেখিয়ে রায় পিছিয়ে যাওয়া অনাকাঙিক্ষত ও দুঃখজনক।
‘নিজামীর রায় না হওয়া সরকারি ষড়যন্ত্রেরই অংশ’: গণজাগরণ মঞ্চ
বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার জানান, মানবতাবিরোধী অপরাধে জামায়াতে ইসলামীর আমীর মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর রায় হঠাৎ স্থগিত হওয়াকে সরকারের ষড়যন্ত্রের অংশ বলে মন্তব্য করেছেন গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ডা. ইমরান এইচ সরকার। রায়ের দিন নিজামীকে অসুস্থ বানিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে নতুন করে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ২০১০ সাল থেকে নিজামীর বিচারকার্য শুরু হয়েছে। চার বছর হয়ে গেলেও রায় ঘোষণা করা হয়নি। এমনকি গত ৬ মাসে যুদ্ধাপরাধ মামলার কোন আসামির রায় দেয়া হয়নি। এগুলো বিচারের দীর্ঘসূত্রতাকে প্রমাণ করে। ইমরান আরও বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করতে সরকারের আন্তরিকতার অভাব লক্ষ্য  করা যাচ্ছে। মুখপাত্র বলেন, সাধারণত রায়ের আগের দিন জামায়াত-শিবির কর্মসূচি দেয়। এবার তাদের নীরবতার কারণে আমরা আশঙ্কা করছিলাম যে আজ রায় হবে না। শেষ পর্যন্ত আমাদের আশঙ্কা সত্যি হয়েছে। গতকাল সকালে রায় স্থগিত হওয়ার ঘোষণা এলে তাৎক্ষণিক বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ থেকে এসব কথা বলেন ডা. ইমরান এইচ সরকার। এদিকে নিজামীর রায়কে ঘিরে গতকাল সকাল থেকে আবারও সক্রিয় হয়ে ওঠে শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চ। এর আগেই বিভিন্ন কারণে গণজাগরণ মঞ্চের মধ্যে ভাঙন ধরে। তিনটি অংশে বিভক্ত হয়ে পড়েন আন্দোলনকারীরা। গতকাল রায়কে কেন্দ্র করে মঞ্চের তিন অংশের নেতাকর্মীরা আলাদা আলাদাভাবে শাহবাগে অবস্থান করেন। সকাল ১০ থেকে প্রজন্ম চত্বরে অবস্থান নেন মঞ্চের মুখপাত্র ডা. ইমরান এইচ সরকারের নেতৃত্বাধীন অংশ। তারা জাতীয় জাদুঘরের পূর্ব পাশে তাদের নেতাকর্মী নিয়ে স্লোগানে মুখর থাকেন। বাংলাদেশ ছাত্রমৈত্রীর সভাপতি ও নবগঠিত শাহবাগ মুভমেন্টের মুখপাত্র বাপ্পাদিত্য বসুর নেতৃত্বে পশ্চিম পাশে একটি অংশ এবং সরকার সমর্থক হিসেবে পরিচিত কামাল পাশা চৌধুরীর অংশ উত্তর পাশে অবস্থান নেয়। সকাল থেকেই রায় না হওয়া নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়। দুপুর সাড়ে ১২টায় রায় না হওয়ার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা এলে প্রথমে মুখপাত্র ডা. ইমরান এইচ সরকারের নেতৃত্বে একটি বিক্ষোভ মিছিল শাহবাগ থেকে শুরু হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি ঘুরে আবার শাহবাগে গিয়ে সমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হয়। এরপর একে একে বাপ্পাদিত্য বসু নেতৃত্বাধীন ‘শাহবাগ মুভমেন্ট’ ও মঞ্চের কামাল পাশা চৌধুরীর অংশও বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে। এ সময় বাপ্পাদিত্য বসু বলেন, নিজামীকে নিয়ে সরকারি মহল থেকে নানা ষড়যন্ত্র হচ্ছে। কিন্তু রায়ের ক্ষেত্রে কোন প্রকার আপস চলবে না। গণজাগরণ মঞ্চ সব ষড়যন্ত্র রুখে দিয়ে নিজামীসহ সব যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির রায় কার্যকর করে তারপর ঘরে ফিরে যাবে। কামাল পাশা চৌধুরী বলেন, নিজামী অসুস্থতার কথা বলে ভান করছে আর সে সুযোগ নিয়ে রায়কে পিছিয়ে দেয়া হয়েছে। কোন আসামি অসুস্থ থাকলে তার রায় দেয়া যাবে না, এটা  কোন  ধরনের আইন তা আমাদের বোধগম্য নয়। আমরা চাই ট্রাইব্যুনাল নিরপেক্ষ থেকে অবিলম্বে নিজামীসহ সব যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসির রায় কার্যকর করবে। অন্যদিকে সন্ধ্যা ৬টায় শাহবাগ মুভমেন্ট পুনরায় রায় না হওয়ার প্রতিবাদে আরেকটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিল শেষে শাহবাগে নিজামীর কুশপুত্তলিকা দাহ করেন তারা। এছাড়া সন্ধ্যা ৭টায় শাহবাগ থেকে মশাল মিছিল বের করেন ডা. ইমরান এইচ সরকার সমর্থকরা। মিছিলটি শাহবাগ থেকে শুরু হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে আবার শাহবাগে ফিরে যায়।

No comments

Powered by Blogger.