একই দিন ধাক্কা খেল কংগ্রেস ও বিজেপি

ভারতে সাধারণ নির্বাচনের প্রাক্কালে একই দিনে কংগ্রেস ও বিজেপি জোর ধাক্কা খেল। উত্তর প্রদেশের সাহারানপুরের কংগ্রেসের প্রার্থী ইমরান মাসুদকে গতকাল শনিবার ভোরে রাজ্য পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। অন্যদিকে জনতা দল (সংযুক্ত) থেকে বিতাড়িত নেতা বিহারের রাজ্যসভার সদস্য সাবির আলীর বিজেপিতে যোগদান নিয়ে দলটি বেকায়দায় পড়েছে। দলের নেতাদের প্রবল আপত্তির মুখে অবশ্য তাঁকে দলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত বাতিল করা হয়। সাহারানপুরের কংগ্রেসের প্রার্থী ইমরান মাসুদকে শনিবার ভোরে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, নির্বাচনী সভায় তিনি বক্তৃতায় হিংসা ছড়াতে প্ররোচনা দিয়েছেন। রাজ্য পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজি-আইনশৃঙ্খলা) অমরেন্দ্র সেনেগার জানান, ইমরানের বিরুদ্ধে ভারতীয় ফৌজদারি দণ্ডবিধি ও জনপ্রতিনিধিত্ব আইনের নানা ধারায় হিংসায় প্ররোচনার অভিযোগ আনা হয়েছে। ইমরান অবশ্য বলেছেন, তিনি কোনো অপরাধ করেননি। বিজেপি বা মোদির কাছে ক্ষমা বা দুঃখ প্রকাশও করবেন না। বরং মোদির বিরোধিতা করে তিনি শতবার কারাগারে যেতে প্রস্তুত। ইমরানকে বক্তৃতায় বলতে শোনা যায়, ‘আমি রাস্তার লোক। নিজের মানুষের জন্য জীবন দিতে প্রস্তুত। মরতে বা মারতে আমি ভয় পাই না। মোদি ভাবেন, এটা গুজরাট। কিন্তু গুজরাটে মাত্র ৪ শতাংশ মুসলমান, এখানে (উত্তর প্রদেশে) ৪২ শতাংশ। ওকে কুচিকুচি করে কেটে ফেলব।’ গ্রেপ্তারের পর ইমরানকে ১৪ দিনের জন্য কারা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
দলীয় প্রার্থী গ্রেপ্তার হওয়ায় ওই আসনে কংগ্রেসের নির্বাচনও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় কংগ্রেস দোলাচলে। এ ঘটনায় কংগ্রেসের সহসভাপতি রাহুল গান্ধী সাহারানপুরের জনসভা বাতিল করে দিতে বাধ্য হন। কংগ্রেস বলেছে, তারা হিংসা বরদাস্ত করে না। অথচ দলের রাজ্য শাখার পক্ষে বলা হচ্ছে, যে ভিডিওটি দেখানো হয়েছে, তা অনেক পুরোনো। এর সঙ্গে নির্বাচনের কোনো সম্পর্ক নেই। অন্যদিকে বিজেপির নতুন সংকটের পেছনে দায়ী একটি সিদ্ধান্ত ও তার বিরোধিতা করে দলের শীর্ষ নেতা মুখতার আব্বাস নাকভির একটি টুইট। মোদির খোলামেলা প্রশংসা করায় বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার সম্প্রতি রাজ্যসভার সদস্য সাবিরকে দল থেকে বহিষ্কার করেন। রাজ্য নেতৃত্বের সুপারিশে রাজনাথ সিং ও নরেন্দ্র মোদি বিতাড়িত এই নেতাকে দলে নেন। এর পরই দলের সহসভাপতি মুখতার আব্বাস নাকভি টুইট করেন, ‘সন্ত্রাসবাদী ইয়াসিন ভটকলের বন্ধু সাবির দলে এল, এবার শিগগিরই দাউদ ইব্রাহিমও যোগ দেবে।’ নাকভিকে সমর্থন করে বিবৃতি দিতে থাকেন আরএসএসের মুখপাত্র রাম মাধব, এস গুরুমূর্তি, বিজেপির নেতা বলবীর পুঞ্জ, শাহনাওয়াজ হুসেন, কলরাজ মিশ্রসহ অনেকেই। প্রত্যেকেরই অভিযোগ, সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের সঙ্গে সাবিরের সম্পৃক্ততা রয়েছে। প্রবল বিরোধিতার মুখে গতকাল বিকেলে দলের মুখপাত্র রবিশঙ্কর প্রসাদ জানান, সাবিরের সদস্যপদ বাতিল করা হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.