প্রধানমন্ত্রীর এই অতি উৎসাহের উদ্দেশ্য কী by সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বীর প্রতী

ইংরেজি ৪টি শব্দের আদ্যাক্ষর- এ, বি, সি ও ডি- দিয়ে লেখাটি শুরু করছি। ‘এ’ দিয়ে হয় অ্যাভয়েড, যার বাংলা অর্থ পরিহার করা। ‘বি’ দিয়ে হয় বাইপাস, যার বাংলা অর্থ পাশ কাটিয়ে যাওয়া বা এড়িয়ে যাওয়া। ‘সি’ দিয়ে হয় কনফিউশন, যার বাংলা অর্থ বিভ্রান্তি বা ধোঁয়াশা। ‘ডি’ দিয়ে হয় ডেঞ্জার, যার বাংলা অর্থ বিপদ। এই চারটি ইংরেজি শব্দকে উপলক্ষ করে, বর্তমান রাজনৈতিক অঙ্গনকে সম্পৃক্ত করে দু-চারটি কথা বলতে চাই। ২০১১ সালের প্রথম ৬ মাস বাংলাদেশের সংবিধান সংশোধন করার নিমিত্তে সংবিধান সংশোধনী কমিটি চিন্তাভাবনা করেছিল। ওই সময়কার সংবিধানে লিপিবদ্ধ তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি সংক্রান্ত বিধানগুলো নিয়ে এবং তার বাস্তবায়ন কেমন হয়েছে বা হয়নি এ বিষয়গুলো নিয়ে সেই সংবিধান সংশোধন কমিটি ব্যস্ত ছিল, আগ্রহী ছিল, পরিশ্রম করেছে- এ কথা অনেকেই বলেন। সেই কমিটি তাদের কাজের চূড়ান্ত পর্যায়ে কী সুপারিশ দিয়েছিল বা দেয়নি, সেটি চাক্ষুষ দেখার সুযোগ আমার হয়নি। তবে গত ৩১ অক্টোবর ডেইলি স্টার পত্রিকায় প্রকাশিত ড. বদিউল আলম মজুমদারের কলাম থেকে আমি এর সারমর্ম পড়েছি। তিনি হুবহু উদ্ধৃত করে পাঠকদের জানিয়েছেন, ওই সংবিধান সংশোধনী কমিটির কোন কোন সদস্য কোন কোন প্রসঙ্গে কী বলেছেন। ড. বদিউল আলম মজুমদারের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক আলাপচারিতার মাধ্যমে জানতে পারলাম, তিনি যে কথাগুলো পত্রিকায় লিখেছেন, সেগুলোর উপযুক্ত দালিলিক প্রমাণ তার কাছে রয়েছে। অর্থাৎ তিনি কান-কথার ওপর ভিত্তি করে ওই কলামটি লেখেননি। বাংলাদেশে বিদ্যমান আইন অনুযায়ী জনস্বার্থে অনেক তথ্যই নাগরিকরা পেতে পারেন। এই মর্মে তথ্য অধিকার আইন দেশে চালু আছে।
কথাগুলো বললাম এজন্য যে, সংবিধান সংশোধনী কমিটি কী সুপারিশ নিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে গিয়েছিল এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কী নির্দেশনা দিয়ে ওই কমিটিকে ফেরত পাঠিয়েছিলেন, সেটি ড. বদিউল আলম মজুমদারের লেখায় রয়েছে। ওই কলাম পড়ার পর আমার বিন্দুমাত্র সন্দেহ নেই যে, প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত আগ্রহ বা জেদ বা যে কোনো গোপন রাজনৈতিক পরিকল্পনার কারণেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি বাতিল করা হয়েছে। ড. বদিউল আলম মজুমদারকে ধন্যবাদ।
৮ নভেম্বর আরেকটি দৈনিকে প্রকাশিত এক কলাম পড়ে বিষয়টি আরেকটু পরিষ্কার হয়েছে। ওই কলামের শিরোনাম ছিল ‘আওয়ামী লীগ অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করে তৃপ্তি পায়’। এ কলামের লেখক ছয়বারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য ড. কর্নেল অলি আহমদ বীরবিক্রম (অব.) এমপি। বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের সাক্ষী হিসেবে যাদের মানা যায়, তাদের অন্যতম কর্নেল অলি আহমদ বীরবিক্রম। তিনি বৃহত্তর চট্টগ্রাম জেলার চন্দনাইশ থানার সন্তান। নিজের এলাকায় অত্যন্ত সুপরিচিত শিক্ষানুরাগী একজন ব্যক্তি হিসেবে তিনি সাফল্যের যথেষ্ট স্বাক্ষর রেখেছেন। দীর্ঘ সংসদীয় জীবনে তিনি বিভিন্ন দায়িত্ব সাফল্যের সঙ্গে পালন করেছেন। ২০০৬ সালের অক্টোবরে তিনি লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি নিয়ে নবযাত্রা শুরু করেন এবং এ দলের কার্যরত প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান তিনি। কর্নেল অলি আহমদের নাম এবং তার কলামের রেফারেন্স এজন্য নিলাম যে, তার লেখাটিতে সংবিধান সংশোধনী প্রসঙ্গে বক্তব্য এসেছে। আমরা উভয়েই উভয়ের কলামগুলো পড়ি, ত্র“টি-বিচ্যুতি নিয়ে কথা বলি। যেহেতু রাজনীতিতে আমি তুলনামূলক নবীন এবং তিনি ৩৩ বছরের অধিককাল রাজনীতিতে সক্রিয়, তাই আমি মাঝেমধ্যে তার কাছে রাজনৈতিক ইতিহাস, প্রেক্ষাপট এবং বিভিন্ন বিষয়ে জানতে চাই বা সেসব নিয়ে আলোচনা করি। তার কলামে সংবিধান সংশোধনী প্রসঙ্গ যতটুকু উঠে এসেছে. তার থেকে বেশি তথ্য তিনি মৌখিকভাবে আমাকে বলেছেন।
যা হোক, সংবিধান সংশোধনী প্রসঙ্গে কমিটি যাই করুক বা না করুক, বাস্তবতা হল সংসদে পঞ্চদশ সংশোধনী এসেছে এবং এর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি বাতিল করা হয়েছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি বিলুপ্ত হওয়ার পর থেকে বিরোধী দল যতবারই এর পক্ষে কথা বলতে চেয়েছে, ততবারই সরকার বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছে। আমি ইংরেজি অক্ষর ‘এ’ অ্যাভয়েড দিয়ে এটাই বোঝাতে চাচ্ছি যে, এ মুহূর্তে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একজন রাজনীতিক হিসেবে একটি কৌশল বেছে নিয়েছেন এবং সেই কৌশলটি হল, তত্ত্বাবধায়ক ইস্যুটিকে তিনি অ্যাভয়েড করতে থাকবেন যতক্ষণ পর্যন্ত সম্ভব হয়। এ নিয়ে আলোচনা, ফয়সালা সবকিছুকেই তিনি অ্যাভয়েড বা পরিহার করে যাবেন। ইংরেজি অক্ষর ‘বি’ বা বাইপাস শব্দটি দিয়ে বোঝাতে চাচ্ছি যে, যখনই বিরোধী দল এ বিষয়টিকে সামনে আনতে চায়, তখনই সরকার তথা প্রধানমন্ত্রী এটিকে বাইপাস করে চলেন। কোনোভাবেই মূল প্রশ্নের উত্তরটি তিনি দেন না। তিনি কোনো সময়ই উত্তর দেন না ১৯৯৫-৯৬ সালে কেন ১৭৩ দিন হরতাল দিয়েছিলেন, কেন তিনি সংসদীয় কমিটির সুপারিশের বিরুদ্ধে গেলেন, কেন তিনি এরশাদ সাহেবের মার্শাল ল’ (২৪ মার্চ ১৯৮২) আসায় খুশি হয়েছিলেন অথবা কেন তিনি ওয়ান-ইলেভেন সরকার তার ও তার দলের আন্দোলনের ফসল বলে ওই সরকারকে জনসমক্ষে স্বীকৃতি দিয়েছিলেন। বিরোধী দলের এই মুহূর্তের মূল প্রশ্ন বা বক্তব্য হচ্ছে, ‘সংবিধান সংশোধনী করেছেন আপনাদের (সরকারি দলের) প্রয়োজনে, আপনাদেরই স্বার্থকে সামনে রেখে। জাতির স্বার্থকে সামনে রেখে নয়। শুধু তাই নয়, তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি নিয়ে যদি আপনাদের এতই অনীহা থাকে, তাহলে আপনারা কেন বিরোধী দলে থাকাবস্থায় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে ১৭৩ দিন হরতাল দিয়েছেন? ওই সময় আপনারা কেন সর্বদলীয় সরকার ব্যবস্থাকে পরিহার করেছিলেন?’ ইত্যাদি প্রশ্নের উত্তর কোনো মঞ্চে বা টেলিভিশন ভাষণে প্রধানমন্ত্রী দেন না। তিনি বিষয়টিকে বাইপাস করেন বা এড়িয়ে যান। আর এসব কারণেই জাতি আজ কনফিউজ বা বিভ্রান্তিতে রয়েছে। এটি দেশ ও জাতির জন্য কোনোভাবেই কাম্য নয়।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি কেন বাতিল করা হয়েছে? এ প্রশ্নের জবাবে কখনও বলা হচ্ছে, আদালত বলেছে দুই মেয়াদে তত্ত্বাবধায়ক থাকবে, বাকি সময় থাকবে না বলে বাতিল করা হয়েছে। কখনও বলা হচ্ছে, গণতান্ত্রিক চেতনা রক্ষায় বাতিল করা হয়েছে। কখনও বলা হচ্ছে, নির্বাচিত ব্যক্তিদের জড়িত রাখার জন্য বাতিল করা হয়েছে। কখনও বলা হচ্ছে, সবাইকে নিয়ে দেশ পরিচালনার জন্যই বাতিল করা হয়েছে, ইত্যাদি ইত্যাদি। সুতরাং বিষয়টি নিয়ে জাতি বিভ্রান্তি বা ধোঁয়াশার মধ্যে রয়েছে। বিভ্রান্তি ও ধোঁয়াশা মানে কনফিউশন। বাংলা ব্যাকরণে ধোঁয়ার সঙ্গে কুয়াশা সন্ধি করলে ধোঁয়াশা শব্দটি আসে। ধোঁয়ার মধ্যে মানুষের শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে কষ্ট হয় এবং কুয়াশার মধ্যে মানুষ একটি নির্দিষ্ট দূরত্বের পর আর কিছুই দেখতে পায় না। সুতরাং এই ধোঁয়াশা সৃষ্টির মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের সচেতন নাগরিকদের এমন একটি রাজনৈতিক প্লাটফর্মে নিয়ে গেছেন, যেখানে সবারই শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে এবং সেখান থেকে কোন দিকে যাবে সে পথও কেউ দেখতে পাচ্ছে না। সুতরাং এমন পরিস্থিতির কারণে একটি কঠিন অনিশ্চয়তা আর দিকভ্রান্তিতে পুরো জাতিই রাজনৈতিকভাবে অবরুদ্ধ হয়ে আছে। এই অবরুদ্ধ বা বন্দিদশা থেকে জাতি মুক্তি চায়। আর এই মুক্তির চাবিটি একমাত্র প্রধানমন্ত্রীর হাতেই রয়েছে। তিনি ইচ্ছে করলেই পুরো জাতিকে দিকভ্রান্তি, অনিশ্চয়তার হাত থেকে রক্ষা করতে পারেন।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অ্যাভয়েড ও বাইপাস করার ফলে জাতি কনফিউশনে আছে। এই তিনটির সম্মিলিত প্রভাবে আজকে বাংলাদেশে যে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিস্থিতি বিরাজ করছে, ইংরেজি ভাষায় তাকে ডেঞ্জারাস বলতে পারি। বর্তমানে জাতি বিপদের মধ্যে রয়েছে। পত্রিকার কলামে, টিভির টকশোতে অনেকেই বলেছেন, রাজনৈতিক এ বিপদ বা সংকট মোকাবেলায় দুই নেত্রীর আলোচনায় আসা উচিত। আমি অবশ্যই একে সাধুবাদ জানাই। তবে এখানে আমার একটি প্রশ্ন : আজকের এ পরিস্থিতির জন্য দুই নেত্রীই কি সমানভাবে দায়ী? যদি তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি বাতিল করা না হতো, তাহলে কি বিএনপি আন্দোলনে নামত? আমি বলতে চাচ্ছি, আজকের এই রাজনৈতিক সংকট সৃষ্টির জন্য শতকরা ৯০ ভাগই দায়ী বর্তমান ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। বাকি দশভাগ- দশজনের সঙ্গে কণ্ঠ মিলিয়ে আমি বলব- বিরোধী দল হয়তোবা দায়ী তাদের কৌশলগত ভুল-ভ্রান্তির জন্য। তবে বিরোধী শিবির সব সময়ই একটি শান্তিপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমে সমাধান প্রত্যাশা করে যাচ্ছে।
প্রফেসর ড. ইউনূসের একটি কথার উদ্ধৃতি দিয়ে বলতে চাই, জাতি শুধু শান্তিপূর্ণ নির্বাচনই চায় না, জাতি নির্বাচন-পরবর্তী সময়েও শান্তি চায়। কারণ এই প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে বেঁচে থাকতে হলে শান্তিপূর্ণ পরিবেশকে টিকিয়ে রাখতে হবে। বিচক্ষণতা আর বলিষ্ঠ পদক্ষেপ নিয়ে আমাদের এগুতে হবে।
এই কলাম যখন পাঠকের কাছে পৌঁছুবে, সে সময়ের মধ্যে যে কোনো রাজনৈতিক পরিবর্তন হয়ে যেতে পারে। কারণ পরিবেশ-পরিস্থিতি অতি দ্রুত বদলাচ্ছে। তাই আগামী ২৪ ঘণ্টা বা ৪৮ ঘণ্টা বা ৯৬ ঘণ্টা পর কী পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে, তা বলা মুশকিল। তবে প্রতিটি ঘটনার পেছনেই বক্তব্য থাকে, সমালোচনা থাকে।
যা হোক, আমরা যদি আগামীর বাংলাদেশকে ভালো একটি অবস্থানে নিয়ে যেতে চাই, তাহলে অবশ্যই আমাদের একটি যুগোপযোগী বাস্তবধর্মী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে। সিদ্ধান্ত নিতে হবে, আমরা কি ‘এক্সক্লুসিভ’ রাজনীতি করব নাকি ‘ইনক্লুসিভ’? ইনক্লুসিভ রাজনীতি বলতে বোঝাতে চাচ্ছি সবাইকে নিয়ে দেশের জন্য কাজ করা, সব দল ও মতকে যথাযথ মর্যাদা দিয়ে যথাস্থানে সবার অংশগ্রহণের সুযোগ করে দেয়া। আর এক্সক্লুসিভ রাজনীতি বলতে বোঝাতে চাচ্ছি, কোনো কোনো ব্যক্তিকে বাদ দিয়ে নির্দিষ্ট কিছু ব্যক্তিকে নিয়ে দেশের জন্য কাজ করা। সুতরাং যে কোনো একটি নীতিগত সিদ্ধান্ত আমাদের নিতেই হবে। সিদ্ধান্তটি নিতে হবে ভেবেচিন্তেই। কারণ সিদ্ধান্তটি এমন হতে হবে যাতে করে বিশ্বে এর কোনো নেতিবাচক প্রভাব না পড়ে। বিশেষত আমাদের পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্রগুলোর কথা মাথায় রেখেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। কারণ বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে আমাদের কূটনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে। আমরা এমন কোনো সিদ্ধান্ত নেব না, যার জন্য বিশ্বে তার নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।
আমার এই কলামের শেষ অনুচ্ছেদে আমি সরাসরি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী প্রসঙ্গে লিখব। আমার অনুভূতি হচ্ছে, বিতর্কিত পরিবেশ ও পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী দুটি কাজ করছেন। প্রথম কাজ হচ্ছে, বিরোধী শিবিরের ওপর মামলা-হামলাসহ তীব্র আক্রমণ চালানো এবং দ্বিতীয় কাজ, তার নির্বাচনমুখী কার্যক্রম দুর্বার গতিতে চালিয়ে যাচ্ছেন। একদিকে টেলিভিশনের পর্দায় হরতালের দৃশ্য, পুলিশের গোলাগুলির দৃশ্য, আগুন লাগার দৃশ্য ইত্যাদি দেখছি, অপরদিকে সরকারি দলের লোকেরা আনন্দ-উল্লাসের মধ্য দিয়ে মনোনয়নপত্র কিনছেন- সেই দৃশ্য দেখছি। ইংরেজি প্রবাদ ‘হোয়েন রোম ইজ বার্নিং, নিরো ইজ প্লেইং দি ফ্লুট’, মানে প্রায় ২০০০ বছর আগে রোম শহর আক্রমণ করে শহরে আগুন লাগিয়ে দেয়ার পর সম্রাট নিরো বাঁশি বাজিয়ে তৃপ্তি পাচ্ছিলেন। বাংলাদেশের পরিস্থিতি এ মুহূর্তে তা-ই। যুগপৎ যে দুটি কাজ প্রধানমন্ত্রী চালিয়ে যাচ্ছেন, সেই দুটি কাজ করার পেছনে বা চালিয়ে যাওয়ার পেছনে যে চারটি শক্তি কাজ করছে, সেগুলো হল : এক. ক্ষমতায় থেকে যাওয়ার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অন্তরে লালিত দুর্দমনীয় ইচ্ছা, দুই. ক্রমান্বয়ে দুই-তিন বছর ধরে দলীয় রাজনৈতিক স্বার্থ দ্বারা সাজানো প্রশাসনিক শক্তি, তিন. প্রতিবেশী রাষ্ট্রকে প্রায় বিনা শর্তে দেয়া আকাশচুম্বী সুযোগ-সুবিধাগুলোর বিনিময়ে অধিকতর পাওয়া এবং তাদের পক্ষ থেকে তার প্রতি সীমাহীন শুভেচ্ছা ও সমর্থন, চার. বিগত পাঁচ বছরে বিভিন্ন প্রশ্নবিদ্ধ উপায়ে ও নিয়মে উপার্জিত হাজার হাজার হাজার কোটি টাকার নির্বাচনী তহবিল।
মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বীর প্রতীক : কলাম লেখক; চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি

No comments

Powered by Blogger.