টানা ৭২ ঘণ্টা অবরুদ্ধ জাবি ভিসি by রিয়াজুল ইসলাম দীপু

টানা চতুর্থ দিনের মতো নিজ কার্যালয়ে অবরুদ্ধ রয়েছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন।
অন্যান্য দিনের মতো বই পড়ে, মুঠোফোনে পরিচিতদের সঙ্গে কথা বলে আর মিডিয়া কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে সময় কাটছে তার। এদিকে বেলা ১১ টার দিকে সংবাদ সম্মেলন করেন সাধারণ শিক্ষক ফোরাম। শিক্ষক ফোরামের সদস্য সচিব অধ্যাপক কামরুল আহছান জানান, ভিসি বার বার আমাদের আন্দোলনকে কতিপয় শিক্ষকদের আন্দোলন বলছেন। অথচ ইতিমধ্যে আমাদের আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ ও ভিসির পদত্যাগ দাবি করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪০০ শিক্ষক। এর মধ্যে শিক্ষক সিনেট সদস্য ৩২ জনের মধ্যে ২৯ জন রয়েছে। নির্বাচিত সিনেট ৬ জনের মধ্যে ৫ জন রয়েছে। বিভিন্ন অনুষদের ৬ জন  ডীনের মধ্যে ৫ জন স্বাক্ষর করেছেন। ১৫ জন হল প্রভোস্টের ১২ জন রয়েছেন। ৩৪ জন বিভাগীয় সভাপতির মধ্যে ২৫জন আমাদের সঙ্গে আছেন। অথচ কিছু স্বার্থবাদী শিক্ষক ছাড়া ভিসির পক্ষে অন্য কোন শিক্ষক নেই। বেলা ১২ টার দিকে শতাধিক শিক্ষক ভিসি পদত্যাগ দাবিতে কালো পতাকা ধারণ করেন। এ সময় ভিসির বিরুদ্ধে মাইকে নানা বিরুপ মন্তব্য করেন শিক্ষকরা। জানা যায়, বেলা ৪ টার দিকে আন্দোলনকারী শিক্ষকদের সঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন। শিক্ষক ফোরামে ১৫-১৭ জন প্রতিনিধি শিক্ষামন্ত্রীর সাথে আলোচনার জন্য  ১ টার দিকে রওনা হবেন। এদিকে আবারও পদত্যাগ করবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন ভিসি। তিনি বলেন, আমি একজন নির্বাচিত ভিসি। আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ না হওয়া পর্যন্ত আমি পদত্যাগ করব না। এসময় তিনি শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবনের কথা বিবেচনা করে শিক্ষকদের ক্লাসে ফিরে যাওয়ার অনুরোধ জানান।
আন্দোলনকারী শিক্ষকদের পক্ষে ৪০০ জন শিক্ষক বিবৃতি দিয়েছেন আপনার পক্ষের সংখ্যা তো অনেক ক্ষুদ্র। এমন প্রশ্নের জবাবে উপাচার্য জানান, আমি শিক্ষকদের গ্রপিং এ বিশ্বাস করি না। কে আমার পক্ষে রয়েছেন না বিপক্ষে রয়েছে তাতে আমার কিছু যায় আসে না। আমি আমার নৈতিক অবস্থানে ঠিক রয়েছি। উল্লেখ্য শিক্ষক লাঞ্ছনার বিচার, ভর্তি পরীক্ষায় অনিয়ম, মিডিয়াতে বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে অশালীন ও আপত্তিকর বক্তব্য, জীববৈচিত্র ধ্বংস, অযোগ্য প্রর্থীকে শিক্ষক নিয়োগের প্রচেষ্টা, অমুক্তিযোদ্ধার সন্তানকে মুক্তিযোদ্ধার কোটায় ভর্তিসহ বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির সুনির্দিষ্ট ১২টি অভিযোগে ভিসির পদত্যাগের এক দফা দাবিতে শিক্ষক সমিতি আন্দোলনে নামলে হাইকোর্টের একটি রিট আবেদনের মাধ্যমে সে আন্দোলনের ওপর রুল জারি করা হয়। এ অবস্থায় ৩০শে জুলাই থেকে শিক্ষক সমিতি প্রশাসনিক ভবন থেকে অবরোধ তুলে নিলেও শিক্ষকদের নবগঠিত প্লাটফর্ম ‘সাধারণ শিক্ষক ফোরাম’ তার পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন করছে।

No comments

Powered by Blogger.