ইসলামাবাদ সফরের জন্য শর্ত জুড়ে দিলেন কারজাই

পাকিস্তানের ইসলামাবাদ সফরের আমন্ত্রণের জবাব দিয়েছেন আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই। দুই দেশের ক্রমবর্ধমান হিমশীতল সম্পর্কের উন্নয়নে যেকোনো ধরনের উচ্চপর্যায়ের বৈঠকের বিষয়ে তিনি গতকাল সোমবার কিছু শর্ত জুড়ে দিয়েছেন। পাকিস্তানের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা সারতাজ আজিজ গত রোববার কাবুল সফরে যান। ১২ বছর ধরে আফগানিস্তানে চলমান সংঘাতের অবসানে তালেবান জঙ্গিদের সঙ্গে একটি শান্তিচুক্তিতে পৌঁছার বিষয়ে কাবুলকে ইসলামাবাদের সহায়তার বার্তা পৌঁছে দেন তিনি। পাকিস্তানের শীর্ষ এই কূটনীতিক আফগান প্রেসিডেন্টের কাছে প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের ব্যক্তিগত আমন্ত্রণ পৌঁছে দেন। হামিদ কারজাইয়ের সঙ্গে বৈঠকের পাশাপাশি তিনি আফগান পররাষ্ট্রমন্ত্রী জালমাই রসুলের সঙ্গেও বৈঠক করেন। আফগান প্রেসিডেন্টের দপ্তর থেকে গতকাল জানানো হয়, কারজাই ইসলামাবাদ সফরের ওই আমন্ত্রণ ‘নীতিগতভাবে’ গ্রহণ করেছেন। তবে তিনি বলেছেন, উচ্চপর্যায়ের একটি প্রতিনিধিদল তখনই পাকিস্তান সফরে যাবে, যখন আলোচ্যসূচি সুনির্দিষ্ট করা হবে; প্রাথমিক প্রস্তুতিগুলো সারা হবে; এবং ‘সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে আন্তরিক ও কার্যকর লড়াই এবং শান্তি প্রক্রিয়ার বিষয়টি আলোচ্যসূচির শীর্ষে রাখা হবে।’ আফগানিস্তানে টেকসই শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য পাকিস্তানের সহায়তাকে অপরিহার্য মনে করে পশ্চিমারা। তবে তালেবান এবং অন্যান্য ইসলামি জঙ্গিদের কার্যক্রম নিয়ে প্রতিবেশি দেশ দুটির পারস্পরিক আস্থা না থাকায় সম্পর্কে অনেক দূরত্ব তৈরি হয়েছে। যদিও জঙ্গি সমস্যা নিয়ে উভয় দেশই অতিষ্ঠ। কাবুল ও ইসলামাবাদের কূটনৈতিক সম্পর্কের এই টানাপোড়েনের মধ্যে আজিজই পাকিস্তানের নতুন সরকারের সবচেয়ে জ্যেষ্ঠ সদস্য, যিনি আফগানিস্তান সফর করলেন। আফগানিস্তানের অনেকেই মনে করেন, তালেবানকে নিয়ন্ত্রণ করে পাকিস্তান। গেল সপ্তাহে কারজাইয়ের চিফ অব স্টাফ করিম খুররম দাবি করেছিলেন, পাকিস্তান বা যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় তালেবান আফগানিস্তানকে ভাঙার চক্রান্ত করছে। শান্তি আলোচনার জন্য কাতারে তালেবানের লিয়াজোঁ অফিস খোলা ছিল ওই চক্রান্তেরই অংশ। তবে পাকিস্তান তালেবানকে নিয়ন্ত্রণ করে এ ধরনের ধারণাকে ভিত্তিহীন আখ্যা দিয়ে কূটনীতিক আজিজ বলেন, মিলিশিয়াদের সঙ্গে তাঁদের কেবল কিছুটা যোগাযোগ রয়েছে মাত্র। মার্কিন নেতৃত্বাধীন বিদেশি বাহিনী আগামী বছর আফগানিস্তান থেকে বিদায় নেবে। এ ছাড়া আগামী বছরের এপ্রিলে দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হবে। এ অবস্থায় সেখানে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা অপরিহার্য হয়ে উঠেছে। এএফপি।

No comments

Powered by Blogger.