সিরিয়ায় রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের প্রমাণআছে

মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা দাবি করেছেন, সিরিয়ায় বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে সরকারি বাহিনীর রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের প্রমাণ যুক্তরাষ্ট্রের হাতে এসেছে। তবে এ ব্যাপারে বিস্তারিত খতিয়ে দেখা গুরুত্বপূর্ণ। ওয়াশিংটন সফররত তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের সঙ্গে বৈঠকের পর গত বৃহস্পতিবার ওবামা এ কথা বলেন। সিরিয়ায় রক্তপাত বন্ধে রাশিয়ার প্রস্তাবিত শান্তি সম্মেলনের প্রক্রিয়ার প্রেক্ষাপটে এই দুই ন্যাটো মিত্রের শীর্ষ নেতারা বৈঠক করলেন। এ সময় তাঁরা সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের পদত্যাগের ওপর জোর দেন। এর আগে স্থানীয় বাসিন্দাদের বরাত দিয়ে বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছিল, বাশার বাহিনী হেলিকপ্টার থেকে উত্তর সিরিয়ার একটি শহরে বিষাক্ত গ্যাসভর্তি কৌটা ফেলেছে। বাশার সরকারের পক্ষ থেকে অবশ্য শুরু থেকেই রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের অভিযোগ নাকচ করা হচ্ছে। গত মার্চে উত্তরাঞ্চলীয় শহর খান আল আসালে রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারে ২৭ জনের মৃত্যুর অভিযোগ ওঠে। এ জন্য বাশার বাহিনী ও বিদ্রোহীরা পরস্পরকে দায়ী করে। গত মার্চ এবং চলতি মাসেও রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে সিরিয়ার সরকারি বাহিনীর বিরুদ্ধে। যুক্তরাষ্ট্র সম্প্রতি হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলেছে, এটাই সিরিয়ায় হস্তক্ষেপের সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে ‘চূড়ান্ত’ নির্ধারক হয়ে উঠতে পারে। এরদোয়ানের সঙ্গে বৈঠকের পরে ওবামা বলেছেন, সিরিয়া প্রশ্নে কূটনৈতিক ও সামরিক—দুই দরজাই খোলা রয়েছে। তিনি বলেন, ‘সিরিয়ার অভ্যন্তরে রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের প্রমাণ আমরা পেয়েছি। এ বিষয়টি আমাদের বন্ধু, মিত্র ও প্রতিবেশীদের জন্য চরম হুমকি।’ তবে ওবামা এ-ও বলেন, এ অভিযোগের ব্যাপারে আরও সুনির্দিষ্ট তথ্য জরুরি। ওবামার আগে এরদোয়ান দাবি করেন, তাঁরাও সিরিয়ায় রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের প্রমাণ পেয়েছেন। ওবামা-এরদোয়ান বৈঠকের মধ্যেই সিআইএর পরিচালক জন ব্রেনান সিরিয়া সংকট নিয়ে আলোচনার জন্য ইসরায়েল পৌঁছেছেন। এদিকে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলাঁদ বলেছেন, প্রেসিডেন্ট বাশারকে আর সমর্থন না দেওয়ার বিষয়ে রাশিয়াকে বোঝাতে হবে। এ জন্য আরও বড় ধরনের উদ্যোগ প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি। শান্তি সম্মেলন চান বান কি মুন: জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন চান, যত দ্রুত সম্ভব রাশিয়ার প্রস্তাবিত শান্তি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হোক। গতকাল শুক্রবার রাশিয়ায় দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভের সঙ্গে বৈঠকের পর বান কি মুন বলেন, ‘শান্তি সম্মেলন নিয়ে অনেক প্রত্যাশা রয়েছে। তাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তা হওয়া উচিত।’ রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে গতকালই বৈঠক করার কথা রয়েছে বান কি মুনের।
ক্ষুব্ধ রাশিয়া: রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ বলেছেন, সিরিয়ায় রাশিয়ার অস্ত্র সরবরাহ নিয়ে আন্তর্জাতিকভাবে কেন কথা হচ্ছে তা ‘বোধগম্য নয়’। তিনি বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যম কেন উত্তেজনা সৃষ্টির চেষ্টা করছে তা বোধগম্য নয়। সিরিয়ায় অস্ত্র সরবরাহের বিষয়টি তো আমরা গোপন করছি না। এতে আন্তর্জাতিক বা আমাদের নিজস্ব আইনও লঙ্ঘিত হচ্ছে না। তাহলে এত কথা কেন?’

No comments

Powered by Blogger.