ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে অস্ট্রিয়া ও তুরস্কে বৈঠক

ইরানের বিতর্কিত পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে গতকাল বুধবার অস্ট্রিয়া ও তুরস্কে পৃথক আলোচনা শুরু হয়েছে। তবে এসব আলোচনায় অগ্রগতি হওয়ার সম্ভাবনা খুব কম বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা। অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ) ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় পর্যবেক্ষকদের প্রবেশ এবং পারমাণবিক কর্মসূচিসংক্রান্ত নথিপত্র ও সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞানীদের সঙ্গে পর্যবেক্ষকদের কথা বলার অনুমতি দেওয়ার ওপর জোর দিয়েছে। এদিকে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে গতকাল ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক প্রধান ক্যাথরিন অ্যাস্টন ও ইরানের প্রধান আলোচক সাইদ জলিলির মধ্যে আলোচনা হয়। ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে গত মাসে কাজাখস্তানে ছয় জাতির সঙ্গে তেহরানের ব্যর্থ আলোচনার পর অ্যাস্টন-সাইদ গতকাল আবারও আলোচনায় বসলেন।পশ্চিমা বিশ্বসহ অনেকেই ইরানকে এ কর্মসূচি ত্যাগ করার জন্য চাপ দিচ্ছে। কিন্তু ইরান দাবি করছে, শান্তিপূর্ণ কাজে ব্যবহারের জন্যই তারা এ কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে। কর্মসূচি বন্ধ করার কোনো ইচ্ছা তাদের নেই। আইএইএ অভিযোগ করেছে, ২০০৩ সাল থেকে ইরানের বিজ্ঞানীরা আণবিক বোমা তৈরির জন্য গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে। এ-সংক্রান্ত ‘বিশ্বাসযোগ্য’ তথ্য-প্রমাণ তাঁদের কাছে রয়েছে। তবে ইরান বলছে, মার্কিন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা (সিআইএ) ও ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের মতো বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থার ভুল প্রতিবেদনের ভিত্তিতে আইএইএ তেহরানের বিরুদ্ধে আণবিক অস্ত্র তৈরির অভিযোগ করছে। ইরান আণবিক বোমা তৈরি করছে বলে আইএইএ ২০১১ সালে ওই প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এরপর ইরানের ওই বিতর্কিত কর্মসূচি নিয়ে নয় দফা আলোচনা হয়েছে। কিন্তু কোনো আলোচনায় ফল বের করে আনা সম্ভব হয়নি। অস্ট্রিয়ায় আলোচনা শুরুর আগে আইএইএর প্রধান পরিদর্শক হারম্যান ন্যাকার্টস সাংবাদিকদের বলেন, ‘অনেক বিষয়ে মতের অমিল আছে। কিন্তু আমরা আলোচনার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ। এ সমস্যা সমাধানের ব্যাপারে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।’ হারম্যান ন্যাকার্টস বলেন, ‘মতের অমিল কমিয়ে আনার ব্যাপারে আমরা কঠোর পরিশ্রম করব।’ এ আলোচনায় ইরানের নেতৃত্ব দিচ্ছেন আলী আজগর সুলতানি। বৈঠক শুরুর আগে তিনি এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। লন্ডনভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের বিশ্লেষক মার্ক ফিটজপ্যাট্রিক বলেন, এটা স্পষ্ট যে এ আলোচনায় কোনো ফল আসবে না। ইরানের পক্ষ থেকে সমঝোতায় না এলে কোনো ফল সম্ভব নয়। আর ইরানের আসন্ন নির্বাচনের আগে তেহরান তার অবস্থান পরিবর্তন করবে বলে মনে হয় না। তবে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আব্বাস আরাকচি বলেন, নির্বাচন কোনো বাধা নয়। দুই বৈঠকে কিছু অগ্রগতি হবে বলে তারা আশাবাদী।

No comments

Powered by Blogger.