পাকিস্তান চাপের মুখে পড়বে

ওসামা বিন লাদেনের নিহত হওয়ার ঘটনাকে বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদের জন্য বড় ধরনের ধাক্কা হিসেবে বর্ণনা করেছে পাকিস্তান। তবে আল-কায়েদার এই শীর্ষ নেতা কীভাবে দেশটির একটি সামরিক স্থাপনার কাছাকাছি লুকিয়ে থাকতে সক্ষম হয়েছেন, তা ব্যাখ্যা করার জন্য পাকিস্তানকে নিশ্চিতভাবেই চাপের মুখে পড়তে হবে।
প্রথমত, ওসামা বিন লাদেন সীমান্তবর্তী কোনো পাহাড়ি এলাকায় লুকিয়ে ছিলেন না। তিনি লুকিয়ে ছিলেন পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদ থেকে সড়কপথে দুই ঘণ্টার দূরত্বে সামরিক একাডেমির কাছাকাছি একটি ভবনে। যাঁরা দীর্ঘদিন ধরেই সন্ত্রাসবাদবিরোধী লড়াইয়ে পাকিস্তানের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে আসছেন, এই বিষয়টি তাঁদের বক্তব্যকে আরও জোরালো করে তুলবে।
মাত্র ১০ দিন আগে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আশফাক পারভেজ কায়ানি সেনা ক্যাডেটদের উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে বলেছেন, আল-কায়েদা ও তালেবানের সঙ্গে সম্পৃক্ত জঙ্গিদের মেরুদণ্ড ভেঙে দিয়েছে সামরিক বাহিনী।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন অভিযোগ করেছিলেন, কিছু সরকারি কর্মকর্তা ওসামা বিন লাদেন ও মোল্লা ওমরকে লুকিয়ে রেখেছেন। এদিকে পাকিস্তানে মার্কিন পাইলটবিহীন বিমানের হামলা ও পাকিস্তানে সিআইএর কর্মকাণ্ড নিয়ে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে দুই দেশের সম্পর্কে তিক্ততা দেখা দেয়।
আল-কায়েদার অগ্রদূত হাক্কানি নেটওয়ার্কের সঙ্গে পাকিস্তানের প্রভাবশালী গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের যোগাযোগ রয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
লাদেনকে আশ্রয় ও সুরক্ষা দেওয়ার জন্য সন্দেহের আঙুল উঠছে আইএসআইয়ের দিকে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, ঘটনার পরম্পরা এই ইঙ্গিত দিচ্ছে, আইএসআইয়ের সেইফ হাউসে প্রাণ হারিয়েছেন ওসামা বিন লাদেন।
পাকিস্তানের নিরাপত্তা বিশ্লেষক ইমতিয়াজ গুল বলেন, ‘কিছু দিন ধরে ওয়াশিংটন ও ইসলামাবাদের মধ্যে প্রচণ্ড উত্তেজনা বিরাজ করছিল। কারণ, বিন লাদেন ইসলামাবাদের কাছাকাছি কোথাও লুকিয়ে আছেন বলে মনে করা হচ্ছিল।’
ইমতিয়াজ গুল বলেন, ‘আইএসআই যদি বিষয়টি জেনে থাকে, তাহলে তাদের ভেতরের কেউ তথ্যটি ফাঁস করে দিয়েছিল।’ এই বিশ্লেষক আরও বলেন, পাকিস্তানের যে ক্ষতি হয়েছে, তা পুষিয়ে নিতে অনেক কিছু করতে হবে। কারণ, মার্কিনরা বলে আসছিল ওসামা বিন লাদেন পাকিস্তানে রয়েছেন। তিনি বলেন, বিষয়টি পাকিস্তানের বিশ্বাসযোগ্যতার ওপর দারুণ আঘাত।

No comments

Powered by Blogger.