ওমানে বিক্ষোভকারীদের ওপর পুলিশের গুলি, নিহত ২

তিউনিসিয়া, মিসর, ইয়েমেন, আলজেরিয়া ও লিবিয়ার পর ওমানে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। পুলিশের গুলিতে দুজন বিক্ষোভকারীও নিহত হয়েছেন। রাজনৈতিক সংস্কারের দাবিতে গতকাল রোববার রাজধানী মাস্কাটের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে সোহার চত্বরে বিক্ষোভকারীরা সমবেত হলে পুলিশ তাঁদের ওপর রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। এতে দুজন নিহত হন।এদিকে ইয়েমেনের প্রেসিডেন্ট আলী আবদুল্লাহ সালেহ ক্ষমতা আঁকড়ে রাখতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। তিন দশক ধরে দেশ শাসন করা এই নেতার পদত্যাগের দাবিতে শুরু হওয়া বিক্ষোভ দমনে এবার তিনি স্বমূর্তিতে আবির্ভূত হয়েছেন। গতকাল শরীরের শেষ বিন্দু রক্ত দিয়ে হলেও বিক্ষোভ দমনের অঙ্গীকার করে তিনি বলেন, বিরোধীরা জাতিকে বিভক্ত করার কূটচালে ব্যস্ত।মাস্কাটের ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিক্ষোভকারীরা গতকাল দ্বিতীয় দিনের মতো সোহার স্কয়ারে সমবেত হয়ে রাজনৈতিক সংস্কারের দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন। পুলিশ প্রথমে কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ ও লাঠিচার্জ করে তাঁদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে। এতে কাজ না হলে পুলিশ রাবার বুলেট ছোড়ে।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, রাবার বুলেটে দুই ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। অপর এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলিবর্ষণ করেছে। তবে এতে কী অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে, তা বোঝা যায়নি। এ ঘটনায় অন্তত আটজন নিহত হয়েছেন।রাজনৈতিক সংস্কারের দাবিতে বিক্ষোভ শুরুর এক সপ্তাহ পর গত শনিবার ওমানের সুলতান কাবুস বিন সাইদ তাঁর মন্ত্রিসভায় রদবদল করেছেন।এদিকে ইয়েমেনের প্রেসিডেন্ট শেষ বিন্দু রক্ত দিয়ে হলেও বিক্ষোভ দমনের অঙ্গীকার করেছেন। বিক্ষোভকারীরা পদত্যাগ দাবি করলেও প্রেসিডেন্ট সালেহ বরাবরই তা প্রত্যাখান করে আসছেন।রোববার রাষ্ট্রপরিচালিত বার্তা সংস্থা সাবা প্রেসিডেন্টের উদ্ধৃতি দিয়ে একটি খবর প্রকাশ করেছে। তাতে তিনি বলেন, বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সহিংসতার কারণে ১৯৯৪ সালে দেশে একটি স্বল্পমেয়াদি গৃহযুদ্ধ বেধেছিল। বিরোধী দল সেই গৃহযুদ্ধের পুনরাবৃত্তির চেষ্টা করছে।প্রেসিডেন্ট বলেন, ইয়েমেনের ঐক্য ও আঞ্চলিক অখণ্ডতার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে। শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে হলেও সেই ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করা হবে। তিনি বলেন, ‘গণতান্ত্রিক পন্থায় এই সংকট মোকাবেলা করতে সব ধরনের চেষ্টাই আমরা করছি। সব রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করছি। কিন্তু কোনো আলোচনা কাজে আসছে না।’হাসপাতাল ও প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে সংগৃহীত তথ্যের ভিত্তিতে পাওয়া হিসাবে দেখা যায়, গত দুই সপ্তাহে সংঘর্ষে অন্তত ১৯ ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। তবে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলছে, এ সংখ্যা ২৭। দিনে গড়ে তিনজন নিহত হয়েছেন। নিহত হওয়ার অধিকাংশ ঘটনা ঘটেছে দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর এডেনে; এ ছাড়া সানায় দুজন ও উত্তরাঞ্চলের তায়েজে একজন।
গত শনিবার ইয়েমেনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দুজন উপজাতি নেতা হাশিদ ও বাকিল সরকারবিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণার পর আন্দোলন আরও চাঙা হয়ে ওঠে।

No comments

Powered by Blogger.