পরমাণু চুক্তি মেনে নিলে অচলাবস্থা নিরসন সম্ভব: ইরান

ত্রিপক্ষীয় পরমাণু জ্বালানি বিনিময় চুক্তি মেনে নেওয়ার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ইরান। দেশটি বলেছে, এ চুক্তি মেনে নেওয়ার মধ্য দিয়েই তেহরানের সঙ্গে পশ্চিমা দেশগুলোর সৃষ্ট অচলাবস্থার নিরসন করা সম্ভব। এদিকে ইরানের পরমাণু স্থাপনায় ইসরায়েলের বোমা হামলা চালানোর সুবিধার্থে সৌদি আরব তার আকাশসীমা পরীক্ষা সম্পন্ন করেছে।
ইরানের আণবিক শক্তি সংস্থার প্রধান আলি আকবর সালেহি বলেছেন, ‘ইরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে সৃষ্ট অচলাবস্থা নিরসনে পশ্চিমা বিশ্বের উচিত ব্রাজিল ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় করা ত্রিপক্ষীয় পরমাণু জ্বালানি বিনিময় চুক্তিটি মেনে নেওয়া।’ সংকট নিরসনের পথে তিনি উদ্ভূত পরিস্থিতিকে পশ্চিমা বিশ্বের ‘নিজস্ব সৃষ্টি প্রতিকূলতা’ বলে অভিহিত করেছেন।
জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ গত বুধবার ইরানের বিরুদ্ধে চতুর্থ দফা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। ইরানের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আহমাদিনেজাদ জাতিসংঘের এ পদক্ষেপের কড়া সমালোচনা করে বলেছেন, বিশ্বের পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্রগুলো কেবল নিজেদের স্বার্থে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের হীন মানসিকতা থেকে এ ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে। তারা চায় না, অন্য কেউ এ অস্ত্রের মালিক হোক। এমনকি অন্যরা শান্তিপূর্ণ উদ্দেশে পরমাণু জ্বালানি ব্যবহার করুক, তাও তারা চায় না।
ব্রিটেনের প্রভাবশালী পত্রিকা দ্য টাইমস গতকাল শনিবার মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে বলেছে, ইরানে হামলা চালানোর ক্ষেত্রে সৌদি আরব তাদের আকাশসীমা ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে ইসরায়েলকে। এ ক্ষেত্রে ইসরায়েলি বিমানবহরের যেন কোনো সমস্যা না হয়, সে জন্য রিয়াদ নিজস্ব বিমানবাহিনী দিয়ে পরীক্ষাও চালিয়েছে। সৌদি আকাশসীমায় রাডারের নিয়ন্ত্রণমুক্ত হয়ে এবং ভূপাতিত করার ঝুঁকি এড়িয়ে ইসরায়েল যেন নিরাপদে ইরানে হামলা চালাতে পারে, সে-সংক্রান্ত সফল পরীক্ষা চালিয়েছে রিয়াদ।
পত্রিকাটি জানায়, মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরামর্শ অনুযায়ীই এ পরীক্ষা চালানো হয়েছে। সৌদি আরবের উত্তরাঞ্চলীয় আকাশসীমা ব্যবহার করে ইরানে হামলা চালাতে পারবে ইসরায়েল। সৌদি আকাশ ব্যবহারের ফলে ইরানের সঙ্গে ইসরায়েলের আকাশসীমার দূরত্ব কমে যাবে।
এদিকে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রবার্ট গেটস আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন, তিন বছরের মধ্যে পারমাণবিক বোমা তৈরি করার মতো পর্যাপ্ত পরিমাণে ইউরেনিয়াম-সমৃদ্ধ করে থাকতে পারে ইরান। তিনি বলেন, এমনকি আগামী বছরের মধ্যেই এ বোমা তৈরি করা হতে পারে।
ন্যাটো জোটভুক্ত দেশগুলোর প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকের পর গেটস গত শুক্রবার এ কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের মাধ্যমে ইরানের বিরুদ্ধে অবরোধ আরোপের আগে ইসরায়েলের সঙ্গে আলোচনা করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

No comments

Powered by Blogger.