ঈদের ছুটি চার দিন করা হোক

রাজধানী ঢাকা শহর থেকে ৫০ লাখেরও বেশি মানুষ ঈদে সারা দেশে তাদের গ্রামের বাড়ি ফেরে। ঈদে বাড়ি ফেরা যাত্রীদের দুর্ভোগের শেষ নেই। টিকিট সংগ্রহ নিয়ে ইতিমধ্যেই যাত্রীদের ভোগান্তি শুরু হয়েছে। বাসে, লঞ্চে, ট্রেনে তথা সব জায়গায় একই অবস্থা। ভোর থেকে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট কাটতে হয়। অনেক সময় কালোবাজারিদের কাছ থেকেও চড়া দামে টিকিট সংগ্রহ করতে হয়।
ঈদ-উত্সবে মানুষ তাদের প্রিয়জনদের কাছে গ্রামের বাড়িতে যাবে, এটাই স্বাভাবিক। কোনোমতে টিকিট জোগাড় করে গ্রামে তো যাওয়া গেল। কিন্তু সমস্যা হয় ঢাকা ফেরা নিয়ে। বিশেষ করে ঈদুল ফিতরের ছুটি নিয়ে।
ঈদের তারিখ যত ঘনিয়ে আসে, চাকরিজীবীদের উত্কণ্ঠা ততই বাড়তে থাকে, ঈদ কোন দিন হবে? ২৯ রোজা শেষে ঈদ হবে নাকি ৩০ রোজা শেষে হবে? ২৯ রোজা হলে ছুটি হবে তিন দিন আর ৩০ রোজা হলে ছুটিও একদিন বেড়ে গিয়ে হবে চার দিন। সরকারি-বেসরকারি সব ক্ষেত্রেই এটা একধরনের রীতি হয়ে গেছে।
ঈদুল ফিতর চাঁদ দেখার ওপর নির্ভরশীল। এতে মানুষের কোনো হাত নেই। কিন্তু জনগণের ভোগান্তি দূর করতে সরকারের অবশ্যই করণীয় রয়েছে।
এবারে ঈদ হবে ২১ সেপ্টেম্বর অথবা ২২ সেপ্টেম্বর। ঈদের ছুটির গোলকধাঁধায় সবচেয়ে বিপাকে পড়েন চাকরিজীবীরা। ঈদের টিকিট পেতে ভোগান্তির কথা তো শুরুতেই বলেছি। ঢাকা ফিরতে ইচ্ছুক চাকরিজীবী যাত্রীরা দ্বিদ্বন্দ্বে রয়েছেন, তাঁরা কোন দিনের ফিরতি টিকিট কাটবেন? ঈদের পরদিনের টিকিট কাটলে ঈদ একদিন পিছিয়ে গেলে পরদিনের টিকিট মূল্যহীন হয়ে পড়ে। তখন শত চেষ্টা করেও আর নতুন টিকিট পাওয়া যায় না। ফলে অনেক চাকরিজীবী বাধ্য হন অফিসে একদিন অনুপস্থিত থাকতে।
ঈদুল ফিতরের ছুটি নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্ব যেহেতু প্রতিবছরের নিয়মিত ঘটনা, সরকারকে স্থায়ীভাবে সিদ্ধান্ত নিতে হবে ঈদের ছুটি নিয়ে। এ ক্ষেত্রে চার দিনের ছুটিই হবে যৌক্তিক সিদ্ধান্ত। আমরা সাধারণ জনগণ আশা করি, সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জনগণের ভোগান্তির বিষয়টি উপলব্ধি করতে পারবেন এবং সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে ঈদের ছুটি চার দিনের ঘোষণা দেবেন, যা স্থায়ীভাবে সরকারি ছুটির তালিকাভুক্ত হবে।
নিলুফা চৌধুরী
অ্যাপোলো হাসপাতাল, ঢাকা।

No comments

Powered by Blogger.