প্রবাসে নারী নির্যাতন: বিউটির শেকলবাঁধা জীবন by আল-আমিন নয়ন

বিউটি আক্তার (৪০)। বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলার সিংগাইর উপজেলায়। পেশায় ছিলেন একজন  রেমিটেন্স যোদ্ধা, নারী গৃহকর্মী। ২০০৯ সালে গৃহকর্মীর কাজ নিয়ে লেবাননে গিয়ে ভালোই চলছিলো বিউটির জীবন। দেশের জন্য পাঠিয়েছিলেন রেমিটেন্স। এরপর কাতার যান। সেখানেও ভালো ছিলেন। নিয়মিত রেমিটেন্স পাঠাতেন।
কিন্তু জর্ডানে গিয়ে ভাগ্য সুপ্রসন্ন হয়নি তার। সেখানে নিয়োগকর্তার নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়ে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে দেশে ফিরতে হয় বিউটিকে। বিউটির মানসিক অবস্থা এতই খারাপ যে, সবসময় শেকল দিয়ে বেঁধে রাখতে হয় বিউটিকে। পরিবারের আর্থিক অবস্থা ভালো না থাকার কারণে চিকিৎসা করাতে পারছে না বিউটির পরিবার। বিউটি এখন পরিবারের বোঝা।
এ ধরনের মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে দেশে ফেরা ৪৩ নারীকে বিমানবন্দর থেকে পরিবার খুঁজে পেতে সহযোগিতা করে ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম। চিকিৎসা সহায়তা দেয়া হয় অনেককে, যারা আজ সুস্থ হয়ে পরিবারে সঙ্গে স্বাভাবিক জীবনযাপন করছেন।
বিউটিদের মতো রেমিটেন্স যোদ্ধাদের জন্য তো মন্ত্রণালয় আছে, আছে জনশক্তি ব্যুরো, ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড, জেলা জনশক্তি অফিস। কিন্তু কেউ তো বিউটিদের খোঁজ-খবর রাখে না। এই প্রতিষ্ঠানগুলোর কী তাহলে বিদেশে কর্মী পাঠানোই দায়িত্ব? আর বসে বসে রেমিটেন্সের গল্প দেয়া। রেমিটেন্স যোদ্ধাদের অধিকার, মর্যাদা ও পূনর্বাসনে কি কোনই কাজ নেই তাদের? তাহলে কে দায়িত্ব  নেবে বিউটিদের?

No comments

Powered by Blogger.