শিশুটি কার?

এক নারী চার কী পাঁচ মাস বয়সের একটি বাচ্চা নিয়ে এদিক ওদিক ছুটাছুটি করছেন। সাথে কয়েকজন পোশাকধারী পুলিশ। বাচ্চাটি যার কোলে তাকে দেখে অসামঞ্জস্যপূর্ণ মনে হচ্ছে। পিছু পিছু ছুটছেন সাধারণ পোশাকের এক নারী। ঘটনাটি বুধবার রাত ৮টার দিকে ঢাকা মেডিকেলের।

পরে কথা হলে জানা যায়, বাংলাদেশ পুলিশের সিনিয়র এ এসপি সুলতানা ইসরাত জাহান ডিউটি শেষে বাসায় ফিরছিলেন। হাইকোর্ট মাজার পার হয়ে শিক্ষা ভবনের সামনে আসতেই দেখতে পেলেন একজন পুরুষ ছোট্ট বাচ্চাটি নিয়ে রাস্তায় ভিক্ষা করছেন। দেখে মনে হলো শিশুটি ভীষণ অসুস্থ, কাতরাচ্ছে। ইসরাত জাহান তার গাড়ি থেকে নেমেই লোকটির কাছ থেকে শিশুটিকে কোলে তুলে নিলেন। জানতে চাইলেন শিশুটি কার। মা কোথায়, এভাবে অসুস্থ শিশু নিয়ে কেন সে ভিক্ষা করছে।

প্রথমে লোকটি জানায় বাচ্চাটি তার। মাও আছে কাছাকাছি। কথিত মা জোসনাকে ডেকে আনা হলো। তার কাছে জানতে চাওয়া হলো শিশুটি অসুস্থ তাকে নিয়ে কেন ভিক্ষা করা হচ্ছে। শিশুটি আসলেই তার কিনা। না কী চুরি করেছে। প্রথমে শিশুটি তার নিজের বলে দাবি করলেও ডাক্তারি পরীক্ষা ও ডিএনএ করার কথা বললে জানায়, বাচ্চাটি তাকে একজন দিয়েছে।

ততক্ষণে শিশুটির কথিত বাবা জহুরুলকে আটক করে শাহবাগ থানায় সোপর্দ করা হয়েছে। কথিত মা জোসনাকে নিয়ে সোজা হাজির হলেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। দেখা যায়, শিশুটির হাতের পিছনে ক্ষত। তাকে প্রথমে নেয়া হয় শিশু বিভাগে। শিশু বিভাগে নেয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক ভর্তি নিতে কেন যেন অসম্মতি জানাচ্ছিলেন। তার দায়িত্ব নিবে কে? বারবার অনুনয় করছিলেন ইসরাত জাহান। সব কিছু বাদ দিয়ে শিশুটিকে তো বাঁচাতে হবে। পরে নিয়ে যাওয়া হয়, বার্ন ইউনিটে। সেখান থেকে আবার শিশু বিভাগে।

বাচ্চাটিকে অক্সিজেন দিতে হবে জরুরি। শ্বাস নিতে পারছে না। এরই মধ্যে সুলতানা ইসরাত জাহান বাচ্চাটির জন্য ডায়পার, দুধ খাওয়ানোর টিউব, লেকট্রোজেন আনিয়েছেন। কিন্তু নিমোনিয়া থাকায় শিশুটিকে খাওয়ানো যাচ্ছে না।
আসন সংকটের কারণে সিটও পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে অন্যজনের অক্সিজেন রিপ্লেস করে বাচ্চাটি দেয়ায় কোনো রকমে রক্ষা।

No comments

Powered by Blogger.