কূটনীতিকদের সঙ্গে ঐক্যফ্রন্টের বৈঠক: সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য চাপ প্রয়োগের আবেদন রেখেছি: ড. কামাল

একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সরকারকে চাপ প্রয়োগ করতে  কূটনীতিকদের   কাছে আবেদন রেখেছেন বলে জানিয়েছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন। বাংলাদেশে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের কূটনৈতিকদের সঙ্গে গতকাল গুলশানে হোটেল আমারি ঢাকায় এক বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের একথা বলেন। ড. কামাল বলেন, নির্বাচনের অনিয়ম ও সহিংসতার তথ্য উপাত্ত আসমা কূটনৈতিকদের কাছে তুলে ধরেছি।
আমরা যেগুলো বলেছি, তথ্য দিয়েছি তারা সেগুলো দেখেছেন এবং একসেপ্ট করেছেন। আমরা বলেছি সব রাষ্ট্র আমাদের বন্ধু রাষ্ট্র। উনারা বাংলাদেশের মানুষের মঙ্গল চেয়েছেন। এ দেশের মানুষ যেন সুন্দরভাবে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে থাকতে পারে, শান্তি শৃঙ্খলা থাকে ও আইনের শাসন থাকে সেটাই চেয়েছেন। আমরা বলেছি, কূটনীতিকরা আমাদের জন্য যেটা চান আমরাও সেটাই চাই।
মানুষের গণমত যাচাই করলে দেখা যাবে তারাও চায়- দেশে শান্তি শৃঙ্খলা থাকুক। মানুষ কাজ কর্ম করে বেচে থাকুক। তিনি বলেন, ৩০শে ডিসেম্বর ভালোমতো নির্বাচন হলে সেই জিনিসটাই প্রতিষ্ঠা করা যেত। এখন আমাদের কথা হল- নির্বাচনে যা হয়েছে, হয়েছে। এখন একটা ভালো নির্বাচন দিয়ে একটা সুন্দর সমাজ গড়ার সুযোগ দেয়া হোক। আমরা কূটনীতিকদের কাছে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য এই সরকারকে চাপ প্রয়োগ করার আবেদন রেখেছি। তারা না বলেননি। আমরা বলেছি, সবাই যেন গঠনমূলক একটি ভূমিকা রাখতে পারি সেই জন্য সরকারকে চাপ প্রয়োগ না হলেও তো যুক্তি দিয়ে বুঝাতে পারেন।
এর আগে বিকেল সোয়া ৪টায় কূটনৈতিকদের সঙ্গে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের বৈঠক শুরু হয়। চলে প্রায় দেড় ঘন্টা। বৈঠকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে ফ্রন্টের  মুখপাত্র ও বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষের প্রতীকে অংশ নেয়া প্রার্থী গোলাম মাওলা রনি, আফরোজা আব্বাস, কণ্ঠশিল্পী রুমানা মোর্শেদ কনকচাঁপা অংশ নেন। বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত ডেভিড আর্ল মিলারসহ যুক্তরাজ্য, কানাডা, ফ্রান্স, ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূতসহ ৩০টি বেশি দেশের কূটনীতিকরা উপস্থিত ছিলেন। রাশিয়া, চীন, কোরিয়া, ফ্রান্স, সুইডেন, স্পেন, জার্মানী, নরওয়ে, ভারত, পাকিস্তান, জাপান, অস্ট্রেলিয়া, ইতালী, সুইজারল্যান্ড, তুরস্ক, নেদারল্যান্ড, ডেনমার্ক, নেপাল, ভুটান, শ্রীলংকার কুটনীতিকরা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে ড. কামাল হোসেন নির্বাচনের অনিয়ম ও নির্বাচনের আগে এবং পরের ঘটনা তুলে ধরেন। পরে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও সারাদেশে নির্বাচনী সহিংসতা নিয়ে কথা বলেন। কূটনীতিকদের কাছে ভোটের নানা অনিয়মের একটি ভিডিও প্রজেক্টরের মাধ্যমে উপস্থাপন করা হয়। এছাড়া, ভিডিওর সিডি ও তথ্য প্রমাণের কাগজপত্র সরবরাহ করা হয়।

No comments

Powered by Blogger.