সাভার ও গাজীপুরেও শ্রমিক বিক্ষোভ: দ্বিতীয় দিনেও অচল বিমানবন্দর সড়ক

বকেয়া বেতন ও ন্যূনতম মজুরি কাঠামো বাস্তবায়নের দাবিতে আবারো সড়কে অবস্থান নিয়েছেন পোশাক শ্রমিকরা। গতকাল দ্বিতীয় দিনের মতো বিমানবন্দর সড়ক অবরোধ করেন তারা। এ সময় শ্রমিক-পুলিশের মধ্যে ব্যাপক ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে কয়েকজন আহত হওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে একটি বাসে আগুন ধরিয়ে দেন বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা। ফলে ব্যস্ততম এ সড়কের দু’পাশে  যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এদিকে গার্মেন্ট শ্রমিক বিক্ষোভ করেছেন সাভার ও গাজীপুরে।
বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা জানান, নতুন মজুরি কাঠামো অনুযায়ী ৫১ শতাংশ মজুরি বৃদ্ধি শুধু সপ্তম গ্রেডের ক্ষেত্রেই দিচ্ছেন মালিকরা। সমান মজুরি দেয়া হচ্ছে না, মূল্যায়ন করা হচ্ছে না অভিজ্ঞতা ও দক্ষতাকে।
রোববার দুপুরে মালিকপক্ষ আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেন। তবে সে আশ্বাস উপেক্ষা করে সোমবার সকাল থেকে আবারও তারা মাঠে নেমেছেন।
সোমবার সকাল থেকে শ্রমিকরা বিভিন্ন গার্মেন্ট থেকে বিক্ষোভ সহকারে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে নেমে আসেন। একপর্যায়ে তারা ওই মহাসড়কে বিভিন্ন পরিত্যক্ত বস্তু ও টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে অবরোধ করেন। ফলে ওই সড়কে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
শ্রমিকদের বিক্ষোভের সূত্রপাত রোববার থেকে। ওইদিন উত্তরার বিভিন্ন গার্মেন্টের শত শত শ্রমিক আজমপুর থেকে জসীমউদদীন ক্রসিং পর্যন্ত অবস্থান নিলে অচল হয়ে পড়ে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক। পাঁচ ঘণ্টা পর দুপুর ২টার দিকে তারা রাস্তা থেকে উঠে যাওয়ার আগে সোমবার ফের বিক্ষোভের ঘোষণা দিয়েছিলেন। সেই ঘোষণা অনুযায়ীই তারা সোমবার সকালে রাস্তায় নামেন।
পুলিশ জানায়, সকাল ৯টার পর থেকে শ্রমিকরা রাস্তায় জড়ো হতে থাকে। ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে জানানো হয়, শ্রমিকরা রাস্তায় অবস্থান নেয়ায় সকাল ১১টার পর উত্তরার আজমপুরে প্রথমে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এরপর বেলা সোয়া ১২টা থেকে বিমানবন্দরের সামনেও যান চলাচল বন্ধ হয়। দুপুরের দিকে বিমানবন্দরের সামনের সড়কে এনা পরিবহনের বাসটি ভাঙচুরের পর তাতে আগুন দেন শ্রমকিরা।  দুপুর ২টার দিকে উত্তরা পশ্চিম থানার ওসি আলী হোসেন পরিস্থিতি অপরিবর্তিত থাকার কথা জানিয়ে বলেন, প্রায় ১০ জন কারখানা মালিক বিষয়টি নিয়ে পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসেছেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এর কিছুক্ষণ পরই পুলিশের বড় বহর শ্রমিকদের রাস্তা থেকে সরিয়ে দেয়া শুরু করে। ২০ মিনিট পর থেকে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে শুরু করে পরিস্থিতি।
এ বিষয়ে পুলিশের উওরা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) নাবিদ কামাল শৈবাল বলেন, সরকার শ্রমিকদের জন্য যে বেতন কাঠামো তৈরি করেছে সেটা নজরদারির জন্য আমরা আপনাদের (শ্রমিক) সঙ্গে রয়েছি। ভাঙচুর, জ্বালাও পোড়াও করলে আমরা আপনাদের সঙ্গে থাকব না। এ ব্যাপারে  যেকোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করবো। সরকারি মজুরি কাঠামো অনুযায়ী যাতে আপনারা বেতন পান সে বিষয়টি নিশ্চিত করতেই আপনাদের গার্মেন্টের মালিকরা এখানে এসেছেন আপনাদের আশ্বস্ত করতে ও কথা বলতে। তিনি আরো বলেন, যদি আপনাদের বেতন নিয়ে মালিক পক্ষের সঙ্গে কোনো ঝামেলা থাকে  তাদের সঙ্গে কথা বলে সমাধান করতে হবে। সেজন্য জনগণকে হয়রানি করা যাবে না।

No comments

Powered by Blogger.