দোভাল ঢাকায়

বঙ্গোপসাগর উপকূলবর্তী  দেশগুলোর জোট বিমসটেকের নিরাপত্তা সম্মেলনে অংশ নিতে মঙ্গলবার ঢাকায় এসেছেন ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল। আজ (বুধবার) রাজধানীতে বিমসটেকের   নিরাপত্তা প্রধানদের এই সম্মেলন হবে। বাংলাদেশে তিন দিনের সফরকালে বহুপক্ষীয় আলোচনার পাশাপাশি সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সামগ্রিক নিরাপত্তা নিয়ে বৈঠক হবে দোভালের। বাংলাদেশের পক্ষে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা  মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিকের অংশ  নেয়ার কথা রয়েছে। সম্মেলনে বাংলাদেশ ও ভারত ছাড়াও  নেপাল, ভুটান, মিয়ানমার, শ্রীলঙ্কা এবং থাইল্যান্ডের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা বা সংশ্লিষ্ট বিভাগের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিরা অংশ নিচ্ছেন। বহুমাত্রিক অর্থনৈতিক ও কারিগরি সহযোগিতার বঙ্গোপসাগরীয় জোট- বিমসটেকের নিরাপত্তা উপদেষ্টা পর্যায়ের দ্বিতীয় সম্মেলনে  রোহিঙ্গা সমস্যার বিষয়টি প্রাধান্য পাবে। পাশাপাশি নিরাপত্তা নিয়ে বঙ্গোপসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোর পারস্পরিক যোগাযোগের বিষয়টিতে জোর দেয়া হবে। এই এলাকার নিরাপত্তার জন্য একটি অভিন্ন কৌশল তৈরির  চেষ্টাও হবে। অজিত দোভালের বাংলাদেশ সফর বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ভারতীয় হাইকমিশন বা আয়োজক প্রতিষ্ঠান বিমসটেকের তরফে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু বলা না হলেও সফরটি যে তাৎপর্যপূর্ণ তা মানছেন দেশি-বিদেশি কূটনীতিকরা। তাদের মতে, আসন্ন নির্বাচন ও রোহিঙ্গা প্রশ্নে ভারত সরকারের মনোভাব খোলাখুলিভাবেই ব্যক্ত করে যাবেন তিনি। নির্বাচনকে সামনে রেখে নয়াদিল্লি বাংলাদেশের সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যোগাযোগ আরো ঘনিষ্ঠ করেছে মর্মে এরই মধ্যে খবর চাউর হয়েছে। ভারত এখানে ৫ই জানুয়ারির মতো বিতর্কিত বা একতরফা নির্বাচন আর দেখতে চায় না বলেও সাউথ ব্লক সূত্রে বার্তা স্পষ্ট করা হয়েছে। দোভালের সফর নিয়ে সমপ্রতি আনন্দবাজার পত্রিকার খবরে বলা হয়েছে, এ বছরের  শেষে বাংলাদেশে নির্বাচন হবে। রাজনৈতিকভাবে এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে দুই দেশের যোগাযোগ বাড়ানোয় জোর দিচ্ছে ঢাকাও। নয়াদিল্লি নজর রাখছে পরিস্থিতির ওপর। আগামী ৭ই এপ্রিল বাংলাদেশ সফর করবেন পররাষ্ট্র সচিব বিজয় গোখলে। প্রতিবেশী দেশে নির্বাচনকে  কেন্দ্র করে যাতে সামপ্রদায়িক সহিংসতা অথবা জঙ্গি হামলার মতো ঘটনা না বাড়ে, সেটাই চাইছে ভারত। খবরে আরো বলা হয়েছে, রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের ওপর জোর দেবে ঢাকা। রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান খুঁজে বের করাটা ভারতের কাছেও একটা বড় চ্যালেঞ্জ। ইতিমধ্যেই মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশকে  ঢেলে সাজানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে দিল্লি। ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর এটাই অজিত  দোভালের প্রথম ঢাকা সফর। অবশ্য ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফরসঙ্গী হয়ে ২০১৫ সালের জুনে ঢাকায় আসার কথা ছিল তার। কিন্তু সেই সময়ে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বিরুদ্ধে মিয়ানমার সীমান্তের  ভেতরে ভারতীয় সেনাবাহিনীর সার্জিকেল স্ট্রাইকের তত্ত্বাবধানের জন্য তিনি দিল্লিতে থেকে যান।

No comments

Powered by Blogger.