এ রায় যেন যোগাযোগ ব্যবস্থাকে উন্নত করে

‘ব্যক্তিমানুষ হিসেবে মৃত্যুকে সংবেদনশীল হিসেবে দেখতে চাই। মৃত্যুর বদলে মৃত্যু প্রত্যাশা করি না। যে রায়টি পেয়েছি, সেটি আমাদের প্রত্যাশা ও আকাঙ্ক্ষার পরিপূরক হবে তখনই, যখন এটি একটি প্রণিধান হিসেবে সামগ্রিক যোগাযোগব্যবস্থাকে উন্নততর করার জন্য ভূমিকা পালন করবে’—সড়ক দুর্ঘটনায় চলচ্চিত্রকার তারেক মাসুদ ও সাংবাদিক মিশুক মুনীরের নিহত হওয়ার ঘটনায় করা মামলার রায়ের প্রতিক্রিয়ায় এ কথা বলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের শিক্ষক ঢালী আল মামুন। ২০১১ সালের ১৩ আগস্ট মানিকগঞ্জে ওই সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন ঢালী আল মামুন। দীর্ঘ চিকিৎসার পর তিনি সুস্থ হন। এ দুর্ঘটনায় তাঁর স্ত্রী শিল্পী দিলারা বেগম জলি এবং তারেক মাসুদের স্ত্রী ক্যাথরিন মাসুদও আহত হয়েছিলেন। মানিকগঞ্জের আদালতের রায় ঘোষণার পর গতকাল বুধবার দুপুরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটে কথা হয় ঢালী আল মামুনের সঙ্গে। তিনি বলেন, সড়ক দুর্ঘটনার অন্যতম প্রধান কারণ যোগাযোগ অব্যবস্থাপনা। শুধু চালক এককভাবে দায়ী নন। তিনি বলেন,
‘যার ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই, সে (চালক) কীভাবে রাস্তায় গাড়ি নামায়? যে গাড়ির ফিটনেস নেই, সেই গাড়িটি কীভাবে রাস্তায় চলাচল করে? সামগ্রিক ব্যবস্থাপনায় কোথায় কী ত্রুটি আছে, তা ভেবে দেখা দরকার। শুধুমাত্র দ্রুতগতির রাস্তা করে দিলে হবে না, সেখানে সঠিক নিয়ন্ত্রণ থাকতে হবে। যাঁরা ব্যবস্থাপনা নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে আছেন, তাঁদেরই প্রধান ভূমিকা পালন করতে হবে।’ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এই শিক্ষক বলেন, দুর্ঘটনা একটি পরিবারকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেয়। এই যে খামখেয়ালিপনায় তারেক ও মিশুকের মতো দুটি মেধাবী প্রাণ চলে গেল, তাতে গোটা জাতিই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাঁরা নিজ নিজ ক্ষেত্রে একটি শৃঙ্খলা তৈরি করেছিলেন। তাঁদের মতো করে কেউ তো আর কাজ করতে পারছেন না। ওই দুর্ঘটনায় আরও তিনটি পরিবার প্রিয়জন হারিয়েছে। এ রকম দুর্ঘটনা যেন আর না ঘটে, সেভাবে ব্যবস্থা নিতে হবে।

No comments

Powered by Blogger.