আতঙ্কের কিছু নেই, শান্ত হোন

যুক্তরাষ্ট্রে নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে
বিক্ষোভ চলছেই। নিউইয়র্কের ম্যানহাটনে। রোববারের ছবি। রয়টার্স
বিক্ষোভকারীদের আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই বলে আশ্বস্ত করে তাঁদের শান্ত হতে বললেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান দলের বিজয়ী প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেল সিবিএসের ‘সিক্সটি মিনিটস’ অনুষ্ঠানে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বিক্ষোভকারীদের প্রতি এই আহ্বান জানান। নির্বাচনের পর এটাই ট্রাম্পের প্রথম কোনো সাক্ষাৎকার, যা স্থানীয় সময় গত রোববার প্রচার করা হয়। এতে অভিবাসী, সংখ্যালঘু, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি নিয়োগ, নিজের বেতনসহ নানা ইস্যুতে কথা বলেন ট্রাম্প।
সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনাদের আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। আমরা আমাদের দেশকে ফিরিয়ে আনব।’ এ সময় তিনি বলেন, তাঁর নির্বাচনী প্রচারণার সময় সংখ্যালঘুদের ওপর হয়রানি ও হুমকির হার বেড়ে গেছে বলে প্রকাশিত খবরগুলোয় ‘কষ্ট’ পেয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমি এ ধরনের কিছু শুনতে ঘৃণা করি। আমি খবরটা শুনে খুব কষ্ট পেয়েছি। যদি আমার কথায় কিছু হয়, তাহলে আমি ক্যামেরার সামনেই বলব, এসব বন্ধ করুন।’ নির্বাচনে জয় পাওয়ার আগের সংখ্যালঘু ইস্যু কিংবা মুসলিমবিরোধী অবস্থান থেকে সরে এলেও ট্রাম্প অভিবাসী ইস্যুতে আগের অবস্থানেই রয়ে গেছেন। সিবিএসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, সন্ত্রাস বা অপরাধের রেকর্ড রয়েছে কিংবা মাদক চোরাচালানের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এমন ৩০ লাখ অভিবাসীকে হয় তিনি জেলে ঢোকাবেন, নতুবা দেশ থেকে বের করে দেবেন। সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প আরও বলেন, মেক্সিকোর সঙ্গে সীমান্তে দেয়াল নির্মাণের অবস্থানে তিনি এখনো অটল। সেই সঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের নয় বিচারপতির একটি শূন্য পদে দ্রুত মনোনয়ন দেওয়ার ইচ্ছাও প্রকাশ করেছেন তিনি। ট্রাম্প আশা করছেন, রিপাবলিকান সংখ্যাগরিষ্ঠ সুপ্রিম কোর্ট গর্ভপাত নিরোধ এবং আগ্নেয়াস্ত্র বহনের সাংবিধানিক অধিকারকে সমর্থন করবে। তিনি বলেন, ‘বিচারপতিরা হবেন জীবনমুখী।’ সমকামী বিয়ে বৈধকরণের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান পরিবর্তন করবেন না বলেও সাক্ষাৎকারে ইঙ্গিত দেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, ‘এটা আইন। সুপ্রিম কোর্টে এটা নিষ্পত্তি হয়েছে।
এবং এ ব্যাপারে আমার কোনো আপত্তি নেই।’ প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালনের সময় কোনো বেতনও নেবেন না বলে সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন ট্রাম্প। প্রচারণার সময় দেওয়া তাঁর প্রতিশ্রুতিগুলোর মধ্যে এটাও একটি। ২০০১ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বার্ষিক চার লাখ মার্কিন ডলার করে বেতন পেয়ে আসছেন। এর সঙ্গে তিনি ব্যয়ের জন্য বছরে ৫০ হাজার, করমুক্ত সফরের জন্য ১ লাখ এবং বিনোদনের জন্য ১৯ হাজার ডলার করে পেয়ে থাকেন। প্রেসিডেন্টের বেতনসংক্রান্ত সাম্প্রতিক বিলটি ১৯৯৯ সালে মার্কিন কংগ্রেস এবং তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন অনুমোদন দেন। বিলটি কার্যকর হয় ২০০১ সাল থেকে। সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, আইন অনুযায়ী যেহেতু পারিশ্রমিক নেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে, কাজেই তিনি বছরে এক ডলার করে বেতন নেবেন। এদিকে, রোববার স্থানীয় সময় রাতে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে টেলিফোনে চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের কথা হয়। প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা হস্তান্তর সংশ্লিষ্ট ট্রাম্পের কার্যালয় থেকে এক বিবৃতিতে গতকাল সোমবার বিষয়টি জানানো হয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়, ৮ নভেম্বরের নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার পর ট্রাম্পকে অভিনন্দন জানানোর জন্য সি চিন পিংকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন ট্রাম্প। টেলিফোনে দুই নেতা পারস্পরিক সম্মানবোধের বিষয়টি পরিষ্কার করেছেন এবং দুই দেশের উন্নয়নে তাঁদের পারস্পরিক শক্তিশালী সম্পর্ক বিশেষ ভূমিকা রাখবে বলে ট্রাম্প আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

No comments

Powered by Blogger.