আলেপ্লোয় তুমুল লড়াই শুরু

সিরিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর আলেপ্পোর দখল বজায় রাখতে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে ভয়াবহ সংঘর্ষে নেমেছে বিদ্রোহীরা। প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের অনুগত বাহিনী কয়েক দিন ধরে শহরটি ঘিরে রেখেছে এবং নগরী পুনর্দখলে চূড়ান্ত অভিযান শুরু করেছে। এতে তুমুল সংঘর্ষ শুরু হয়। সেখানে আটকা পড়েছে অন্তত ৩ লাখ বাসিন্দা। এ অবস্থায় তাদের খাদ্য ও ওষুধ সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। রোবরার বিদ্রোহীদের ছোড়া গোলায় কয়েক ডজন বেসামরিক মানুষ হতাহত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। সোমবার আলজাজিরা এক প্রতিবেদনে এসব কথা জানিয়েছে।
সিরিয়ার সরকার ও রাশিয়ার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, অভিযান শুরুর আগে আলেপ্পো নগর থেকে বের হওয়ার সুযোগ দিতে বেসামরিক লোক ও বিদ্রোহীদের জন্য চারটি করিডর (পথ) খুলে দিয়েছে সরকারি বাহিনী। শহরটির বিদ্রোহী-নিয়ন্ত্রিত পূর্বাঞ্চলে প্রায় তিন লাখ মানুষ আটকা পড়ে আছে। বড় সংঘাতের আগে তাদের বেরিয়ে আসার সুযোগ দিতেই মূলত ওই করিডর খোলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই সয়গু। এ উদ্যোগকে ‘বড় ধরনের মানবিক তৎপরতা’ আখ্যায়িত করে তিনি বলেছেন, সবার আগে বাসিন্দাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই এ পদক্ষেপের লক্ষ্য। এরই মধ্যে সেসব করিডোর দিয়ে বহু লোক বেরিয়ে গেছে।
এদিকে ব্রিটেনভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানিয়েছে, আলেপ্পো শহরের উপকণ্ঠে কয়েকটি ফ্রন্টে যুদ্ধ শুরু হয়েছে। সংস্থাটির পরিচালক রামি আবদেল রহমান বলছেন, আলেপ্পো দখলের এ লড়াই হবে ‘দীর্ঘ এবং কঠিন’। আল জাজিরা জানিয়েছে, শহরের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে সরকারি বাহিনীর অবস্থান লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছে কয়েকটি বিদ্রোহী সংগঠন। এদের নেতৃত্ব দিচ্ছে জাবাত ফাতাহ আল শাম গ্র“প। সংগঠনটির সঙ্গে আল কায়দা নুসরা ফ্রন্টের সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে। তাদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আল আহরার শাম গ্র“প। এদিকে আলেপ্পোর আবাসিক এলাকায় সন্ত্রাসীদের ছোড়া গোলায় হতাহতের মধ্যে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী,
এক শিশুও রয়েছে। আলেপ্পোয় আটকে পড়া প্রায় তিন লাখ লোকের অবনতিশীল পরিস্থিতি নিয়ে সতর্ক করে দিয়েছে জাতিসংঘ। সংস্থাটির মানবিক সহায়তা কার্যক্রমের প্রধান স্টিফেন ও’ব্রায়ান বলেছেন, ‘আগস্টের মাঝামাঝি নগরে খাদ্যের মজুত ফুরিয়ে যেতে পারে। হামলা চলতে পারে অনেক চিকিৎসা স্থাপনায়।’ অবরুদ্ধ আলেপ্পো থেকে বেসামরিক লোকজনের বেরিয়ে আসার ক্ষেত্রে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার তাগিদ দিয়েছে আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থা রেডক্রস। সংগঠনটি বলেছে, ত্রাণ সহায়তা ও উদ্ধারকর্মীদের আলেপ্পো ছেড়ে বের হওয়া বেসামরিক লোকজনের কাছে যাওয়ার সুযোগ দিতে হবে। যেসব পরিবার শহরটি ছেড়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেবে তাদের সদস্যরা যাতে একসঙ্গে থাকতে পারেন, তাও নিশ্চিত করতে হবে।

No comments

Powered by Blogger.