বাংলাদেশ ব্যাংকের কেউ কেউ জড়িত ছিলেন: অর্থমন্ত্রী

রিজার্ভ চুরির ঘটনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের কেউ কেউ জড়িত ছিলেন বলে এখনো মনে করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গকে মুঠোফোনে তিনি বলেন, ‘রিজার্ভ চুরির ঘটনায় বাংলাদেশ একটি তদন্ত চালাচ্ছে। আমাদের কিছু মানুষ অবশ্যই এর সঙ্গে জড়িত।’ তবে এ বিষয়ে আর বেশি বলতে রাজি হননি তিনি। একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্কের (ফেড) সমালোচনা করে অর্থমন্ত্রী বলেন, বৈধতা সম্পর্কে নিশ্চিত না হয়েই ফেড চারটি লেনদেন অনুমোদন দিয়েছে। এ কারণে ওই অংশের জন্য তারাও (ফেড) দায়ী। তাদের নিরাপত্তাব্যবস্থায় ত্রুটি ছিল। তারা এ সমস্যার দায় থেকে মুক্ত নয়। ফেড গত মাসে বলেছিল, বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে পাঠানো লেনদেনের নির্দেশনাগুলো যথাযথ পদ্ধতি অবলম্বন করেই পাঠানো হয়েছিল। ওই নির্দেশনাগুলোয় সুইফট সিস্টেমের অনুমোদন ছিল।
এদিকে অর্থমন্ত্রীর বক্তব্যের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র শুভঙ্কর সাহা দেশের বাইরে রয়েছেন। আর সহকারী দুই মুখপাত্র এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। অর্থমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের নিরাপত্তাব্যবস্থায় ত্রুটি রয়েছে। এ ব্যবস্থার উন্নয়নে নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা এখন কাজ করছেন। আগামী ছয় সপ্তাহের মধ্যে তদন্তের বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রস্তুত হবে বলে অর্থমন্ত্রী উল্লেখ করেন। এ ছাড়া রিজার্ভ থেকে চুরি যাওয়া অর্থের মধ্যে ৭ কোটি ডলার অপরাধীরা পুরোপুরি সরিয়ে নিতে সক্ষম হয়েছে বলে মনে করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকে থাকা বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব থেকে গত ৪ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাতে ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি করে ফিলিপাইনে নিয়ে যায় অপরাধীরা। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ১ কোটি ডলার উদ্ধার করা সম্ভব। বাকি অর্থ শনাক্ত করা কঠিন। অর্থমন্ত্রী ব্লুমবার্গকে বলেন, যে প্রক্রিয়ায় ওই অর্থ চুরি গেছে, তাতে এর সুবিধাভোগীদের চিহ্নিত করা খুবই কষ্টসাধ্য। অধিকাংশ অর্থই কয়েকটি ক্যাসিনো ও এগুলোর অ্যাকাউন্ট বা হিসাবে জমা হয়। নএ অপরাধকে ‘খুবই অস্বাভাবিক ঘটনা’ হিসেবে উল্লেখ করেন অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘স্মরণকালে এ ধরনের ঘটনা আর দেখেছি বলে মনে পড়ে না। চুরি যাওয়া অর্থ বাংলাদেশের জন্য অনেক বড় অঙ্কের। এটি অর্থ লেনদেনে নিরাপত্তার বিষয়ে সারা বিশ্বের জন্যই একটি অনেক বড় সতর্কবার্তা।’ বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের অর্থ চুরির ঘটনায় গভর্নরকে পদত্যাগ করতে হয় ও সরিয়ে দেওয়া হয় দুই ডেপুটি গভর্নরকে। বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা করা হয় ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিবকে।

No comments

Powered by Blogger.