একুশ শতকের বাংলা সাংবাদিকতা

ব্রিটিশ আমলে বাংলাদেশ বা বঙ্গপ্রদেশ অবিভক্ত ছিল। কলকাতা ছিল রাজধানী এবং ছিল বাংলা সাহিত্য, সংস্কৃতি এবং সাংবাদিকতারও প্রধান পাদপীঠ। দেশ অবিভক্ত থাকলেও তার সাহিত্য, সংস্কৃতি বা সাংবাদিকতা অবিভক্ত ছিল না। রাজনীতিতে ধর্মীয় বিভাজনের প্রভাব সাহিত্য, সংস্কৃতি এবং সাংবাদিকতাতেও দেখা দেয়। বিশেষ করে ব্রিটিশ আমলে শিক্ষিত এবং মধ্যবিত্ত বাঙালি মুসলমানদের বিকাশ লাভের সঙ্গে সঙ্গে এই ধর্মভিত্তিক বিভাজনটা বাড়ে। আমার আলোচনার প্রসঙ্গ আজ সাংবাদিকতা। তাই সাহিত্য-সংস্কৃতির প্রসঙ্গে যাব না। অবিভক্ত বঙ্গে হিন্দু সম্প্রদায় সংখ্যালঘু হলেও শিক্ষাদীক্ষা এবং ব্যবসা-বাণিজ্যে ছিলেন অগ্রসর ও উন্নত শ্রেণী। উদ্যোগটা সে যুগের খ্রিস্টান পাদ্রিদের হাতে হলেও সাংবাদিকতায় বিকাশ হিন্দু মধ্যবিত্ত শ্রেণীর হাতেই। ঈশ্বর গুপ্তের মতো সাংবাদিক (ও কবি) তাদের মধ্যে থেকেই প্রথম আবির্ভূত হয়েছেন। ‘সংবাদ প্রভাকর’ ও পরবর্তীকালের হিতবাদী কাগজের প্রতিষ্ঠাও হিন্দু মধ্যবিত্তের হাতে। বাঙালি মুসলমানরাও এসব কাগজ পড়তেন। যদিও এসব কাগজে তাদের খবর থাকত ছিটেফোঁটা।
গত শতকের গোড়া থেকে বাঙালি মুসলমান মধ্যবিত্তের বিকাশ এবং তারা নিজেদের রাজনৈতিক স্বাতন্ত্র্য প্রতিষ্ঠার জন্য উদ্যোগী হন। তবে দুর্ভাগ্যের বিষয় উত্তর ভারতের অবাঙালি মুসলিম পুঁজিপতিদের প্রভাবে তারা ধর্মকে তাদের এই স্বাতন্ত্র্য প্রতিষ্ঠার ভিত্তি হিসেবে বেছে নেন। ফলে বাংলা ভাষার পরিবর্তে তারা আরবি, ফার্সি, উর্দু ভাষার দিকে ঝুঁকে পড়েন এবং সন্তানের নামকরণ থেকে সংবাদপত্রের নামকরণ পর্যন্ত সব কাজে বাংলা ভাষার মাথায় আরবি, ফার্সি, উর্দু শব্দ চাপিয়ে দেন।
বিকাশের প্রথম যুগে বাঙালি মধ্যবিত্ত মুসলমান ‘মিহির সুধাকরের’ মতো নাম তাদের সংবাদপত্র বা সাময়িকীর জন্য রাখলেও পরবর্তীকালে তাদের দ্বারা প্রকাশিত অধিকাংশ পত্রপত্রিকার নামকরণ হয় আরবি, ফার্সি বা উর্দুতে। যেমন বিভাগপূর্ব বঙ্গে মুসলমানদের দ্বারা প্রকাশিত পত্রপত্রিকার নাম ছিল- তকবির, সোলতান, মোহাম্মদী, আজাদ, ইত্তেহাদ, সওগাত, ইনসান, মদীনা ইত্যাদি। সেকালের কলকাতার বিখ্যাত সাহিত্য-মাসিক ‘ভারতবর্ষের’ অনুকরণে কলকাতা থেকেই বাঙালি মুসলমানের সাহিত্য-মাসিক বেরিয়েছিল, নাম ‘মোসলেম ভারত’। কবি নজরুল ইসলামের কাব্যচর্চা এই পত্রিকা থেকে শুরু। ‘ভারতবর্ষ’ এবং ‘মোসলেম ভারত’ দুটিই বাংলা ভাষার মাসিক। কিন্তু একটির নামকরণে ধর্মীয় জাতীয়তার স্বাতন্ত্র্য প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টাটি প্রকট।
মওলানা আকরম খাঁর কাছে গল্প শুনেছি, তিনি যখন সাপ্তাহিক মোহাম্মদী বের করেন, তখন কোনো কোনো মুসলমান পাঠক তাকে এই বলে সাধুবাদ জানিয়েছিলেন যে, ‘আপনি মোহাম্মদী নামে একটি হিতবাদী (তখনকার জনপ্রিয় সংবাদপত্র) পত্রিকা বাহির করিয়াছেন জানিয়া যারপরনাই আনন্দিত হইয়াছি।’ মওলানা আকরম খাঁও যখন অসাম্প্রদায়িক কংগ্রেসী রাজনীতি করতেন, তখন একটি দৈনিক পত্রিকা বের করে বাংলায় নাম রেখেছিলেন, ‘দৈনিক সেবক’। কিন্তু ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল মুসলিম লীগের দিকে ঝুঁকে পড়ার পর তিনি দৈনিক কাগজ বের করেন ‘আজাদ’ নামে।
ব্রিটিশ আমলে অবিভক্ত বঙ্গে মুসলমান বাঙালি দ্বারা বাংলা নামে বাংলা সংবাদপত্র বের করার চেষ্টা হয়নি তা নয়। বড় ধরনের চেষ্টার মধ্যে কবি নজরুল ইসলাম যেসব সংবাদপত্র বের করেছিলেন, তার সব কটির নাম রেখেছিলেন বাংলায়। যেমন- ধূমকেতু, লাঙল, গণবাণী। একে ফজলুল হক তার দুই দফা প্রধানমন্ত্রিত্বের আমলে বাংলায় নবযুগ নাম দিয়ে দৈনিক সংবাদপত্রটি বের করেন। কৃষক প্রজা পার্টির নেতা কুষ্টিয়ার শামসুদ্দীন সাহেব তার দৈনিকের নাম রেখেছিলেন ‘কৃষক’। কুমিল্লার কংগ্রেস নেতা (পরে নেজামে ইসলাম দলে যোগ দেন) আশরাফ আলী চৌধুরী কলকাতা থেকে সাপ্তাহিক কাগজ বের করেছিলেন, নাম ‘নয়াবাংলা’। এসব কাগজ বেশি দিন টেকেনি।
বাঙালি মুসলমানের চৈতন্যোদয় ঘটার শুরু ধর্মের ভিত্তিতে দেশভাগের অব্যবহিত পরেই। তারা বুঝতে পারেন ধর্মের বা ধর্মীয় ভাষার ভিত্তিতে তাদের রাজনৈতিক স্বাতন্ত্র্য ও অধিকার চিহ্নিত করা যাবে না, রক্ষা করা দূরে থাক। এই স্বাতন্ত্র্য ও অধিকার রক্ষা এবং অস্তিত্ব বজায় রাখার জন্যই তারা যুদ্ধে বাংলা ভাষার বর্মধারণের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন। দেশভাগের এক বছর পুরো হওয়ার আগেই তৎকালীন পূর্ববঙ্গ বা পূর্ব পাকিস্তানে বাংলা ভাষা আন্দোলনের সূত্রপাত।
তথাপি ঢাকাকেন্দ্রিক যে বাংলা সাহিত্য, সংস্কৃতি, সাংবাদিকতার বিকাশ শুরু হয় গোড়াতে তার ওপর ধর্মীয় জাতীয়তার প্রভাব তখনও ছিল। সাতচল্লিশের দেশভাগের পর ঢাকা থেকে যে প্রথম বাংলা দৈনিক বের হয়, তার নাম ছিল ‘জিন্দেগী’। কিছু পরে কলকাতা থেকে স্থানান্তরিত হয়ে দৈনিক আজাদ ঢাকায় আসে। পত্রিকাটি ছিল ক্ষমতাসীন মুসলিম লীগের সমর্থক। পাকিস্তানের প্রথম খসড়া সংবিধান ১৯৫০ সালে তৎকালীন গণপরিষদে উত্থাপিত হয়। তাতে পূর্ব পাকিস্তানের মানুষের স্বার্থ ও অধিকার উপেক্ষিত হওয়ায় তার বিরুদ্ধে প্রবল আন্দোলন গড়ে ওঠে। এই আন্দোলনেরই মুখপত্র হিসেবে বের হয় বংশাল স্ট্রিটের বলিয়াদি প্রেস থেকে দৈনিক ইনসাফ। তরুণ ও প্রগতিশীল সাংবাদিকরা সবাই এই পত্রিকায় এসে জুটেছিলেন।
বাঙালির স্বাধিকার আদায়ের আন্দোলনের প্রথম মুখপত্র, কিন্তু তার নামটি ছিল উর্দুতে, ‘ইনসাফ’। বাঙালি মুসলমানের মধ্যে এই কনট্রাডিকশনটি দূর হতে শুরু করে পঞ্চাশের দশকের গোড়া থেকেই। বাংলা ভাষা আন্দোলনের অন্যতম নেতা তমদ্দুন মজলিসের অধ্যাপক আবুল কাশেম তাদের সাপ্তাহিক পত্রিকার নাম রাখেন বাংলায়- সাপ্তাহিক সৈনিক। মাসিক কাগজের নাম রাখেন দ্যুতি।
ভাষা আন্দোলন শুরুতে শক্তিশালী না থাকলেও তার প্রভাব সমাজের সর্বস্তরে প্রসারিত হয়েছে দেখা যায়। ১৯৫১ সালে তৎকালীন ক্ষমতাসীন মুসলিম লীগের সমর্থক দৈনিক পত্রিকা বের হয়, নাম দৈনিক সংবাদ। একই সময় মুসলিম লীগের বিরোধী এবং ভাষা আন্দোলনের সমর্থক একটি ছোট দৈনিক পত্রিকা বের হয়েছিল, নাম আমার দেশ। দীর্ঘ আয়ু পায়নি পত্রিকাটি।
১৯৪৯ সালে আওয়ামী লীগের মুখপত্র হিসেবে কারকুনবাড়ী লেন থেকে সাপ্তাহিক ইত্তেফাকের আত্মপ্রকাশ। অবিভক্ত বঙ্গে মুসলিম লীগের সোহরাওয়ার্দী গ্রুপের দৈনিক পত্রিকা ছিল ইত্তেহাদ। মুসলিম লীগ ত্যাগ করে দেশভাগের পর এই গ্রুপটিই আওয়ামী মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠা করে। তাদের ইচ্ছা ছিল ‘ইত্তেহাদ’ নাম দিয়েই তারা দলীয় মুখপত্র প্রকাশ করবে। কিন্তু মুসলিম লীগ সরকার এই নামে পত্রিকা প্রকাশের অনুমতি না দেয়ায় তারা নামটি ঈষৎ বদলে ‘ইত্তেফাক’ রাখে। ১৯৫৩ সালে পত্রিকাটি দৈনিকে রূপান্তরিত হয়।
এরপর তাহজীব, নাজাত ইত্যাদি উর্দু নামে ঢাকা থেকে পত্রপত্রিকা বের হয়েছিল। বেশিদিন আয়ু পায়নি। ভাষা আন্দোলন বিদ্যুৎ গতিতে সমাজের সর্বস্তরে কী প্রচণ্ড প্রভাব বিস্তার করেছিল তার প্রমাণ পাওয়া উর্দু, ফার্সি, আরবি নাম ত্যাগ করে বাঙালি মুসলমানের মধ্যে সন্তান থেকে সংবাদপত্রের বাংলা নামকরণের হিড়িক দেখে। এমনকি জামায়াত এবং মুসলিম লীগও পাকিস্তান আমলের শেষদিকে তাদের প্রচার মাধ্যমের আরবি, উর্দু নাম ত্যাগ করে বাংলা নাম রাখতে শুরু করে। জামায়াতের মুখপত্রের নাম ছিল জাহানে নও। সেটি বন্ধ করে দিয়ে তারা দৈনিক পত্রিকা বের করে, তার নাম রাখে সংগ্রাম। পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম লীগের মুখপত্র বের হয়, নাম বিপ্লব।
বাংলা ভাষার আন্দোলন, বাঙালি জাতীয়তার জোয়ার তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে এত প্রখর হয়ে উঠেছিল যে তা শুধু রাজনীতির অঙ্গনে নয়, সাহিত্য, সংস্কৃতি ও সাংবাদিকতার অঙ্গনকেও প্লাবিত করেছিল। এরপর আরবি, ফার্সি বা উর্দুতে বাংলা পত্রপত্রিকার নাম রাখার রেওয়াজ প্রায় উঠেই যায়। যে হামিদুল হক চৌধুরী যুক্ত বাংলা ও স্বাধীন বাংলা কোনো আন্দোলনেরই সমর্থক ছিলেন না, তিনিও পাকিস্তান আমলের শেষদিকে তার অবজারভার মিডিয়া গোষ্ঠীর বাংলা দৈনিকটির নাম রাখেন ‘পূর্বদেশ’। আমার ধারণা, তার অবচেতন মনে বাঙালিদের জন্য পূর্ব দিগন্তে একটি স্বাধীন স্বদেশের আবির্ভাব যে ঘটছে, তার আভাস জেগেছিল।
বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার আগে অবিভক্ত বঙ্গে বাঙালির রাজনীতি, সাহিত্য, সংস্কৃতি ও সাংবাদিকতায় যে ধর্মভিত্তিক বিভাজন ঘটেছিল, স্বাধীনতার পর সাহিত্য, সংস্কৃতি ও সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে তার অনেকটাই বিলুপ্তি ঘটে। গঙ্গার এপার ওপার দুই বাংলার বাঙালির সংস্কৃতির মধ্যেই একটি মেলবন্ধনের সূত্রপাত ঘটে। তাদের পলিটিক্যাল ডিভিশনটি থেকে যায়; কিন্তু একটি অভিন্ন কালচারাল নেশনহুড গড়ে উঠতে পারে তার সম্ভাবনা দেখা দেয়।
স্বাধীনতার পর একুশ শতকের একেবারে ঊষালগ্নে ঢাকা থেকে যে দুটি উন্নতমানের দৈনিক সংবাদপত্র বের হয়, যুগান্তর ও প্রথম আলো- এ দুটি নামই অবিভক্ত বাংলা সংস্কৃতি ও সাংবাদিকতার সূচক হয়ে দাঁড়ায় বলে আমার ধারণা। প্রথম আলো সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের একটি জনপ্রিয় উপন্যাসের নাম। ‘যুগান্তর’ ছিল দীর্ঘকাল ধরে কলকাতা থেকে প্রকাশিত এবং বহুল প্রচারিত একটি দৈনিক। এই পত্রিকার মালিকরাও ছিলেন পূর্ববঙ্গের যশোরের মানুষ। পূর্ববাংলার মানুষের সুখ-দুঃখের কথাই কলকাতার যুগান্তরে বেশি প্রতিফলিত হতো। বাংলাদেশের স্বাধীনতার যুদ্ধেও যুগান্তর জুগিয়েছে অতুলনীয় সাহায্য ও সমর্থন।
কলকাতার যুগান্তর বন্ধ হয়ে গেছে দীর্ঘকাল আগে। ষোলো বছর আগে ঢাকা থেকে যখন দৈনিক পত্রিকা হিসেবে যুগান্তর প্রকাশের ঘোষণা প্রচারিত হয়, তখন একটু চমকে উঠেছিলাম। আনন্দিতও হয়েছিলাম। কলকাতার ‘যুগান্তর’ আমার প্রিয় পত্রিকা ছিল। মুক্তিযুদ্ধের সময় ওই পত্রিকায় অনেক লেখালেখি করেছি। ঢাকার যুগান্তরও আমার প্রিয় পত্রিকা হবে এমন একটা আন্দাজ করেছিলাম। পত্রিকাটি প্রকাশিত হতেই দেখলাম, আমার অনুমান মিথ্যা হয়নি। যুগান্তর নামটি গত শতকের হলেও ঢাকার যুগান্তর চেহারায়, সাংবাদিকতায়, নবপ্রযুক্তির ঝলমলে স্পর্শে সম্পূর্ণভাবে একুশ শতকের পত্রিকা। তার সাংবাদিকতার অপক্ষপাত আছে। পত্রিকাটির প্রকাশক সালমা ইসলাম নিজে একটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত; সাবেক প্রতিমন্ত্রী এবং পার্লামেন্ট সদস্যও। কিন্তু তার দলীয় রাজনীতির ছোঁয়া থেকে পত্রিকাটিকে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করেন। যুগান্তরে সম্পাদক বদলেছেন কয়েক দফা। কিন্তু কাগজটির নীতি বদলায়নি।
কুড়ি ও একুশ- এই দুই শতকের ক্রান্তিলগ্নে যুগান্তরের জন্ম। বলা চলে, যুগান্তরের ঘূর্ণিপাকেই পত্রিকাটির আত্মপ্রকাশ। কিন্তু যুগযন্ত্রণার সঙ্গে নবযুগের আশা-আকাঙ্ক্ষারও প্রকাশ রয়েছে পত্রিকাটিতে, যা তরুণ প্রজন্মের পাঠকদের আকৃষ্ট করে রেখেছে যুগান্তরের দিকে। এখানেই যুগান্তরের সাংবাদিকতার সাফল্য।
‘যুগান্তর’ ষোলো বছর পার করে সতেরো বছরে পা দিল। বলা চলে, বালকত্বের কাল পেরিয়ে সাবালকত্বে পা দিল পত্রিকাটি। কিন্তু সেই বালকত্বের কালেও ‘যুগান্তর’ সাংবাদিকতার সাবালকত্বের প্রমাণ দেখিয়েছে বহুবার। তার যাত্রাপথ কুসুমাস্তীর্ণ ছিল না। বিএনপি-জামায়াতের আমলে পত্রিকাটির মালিককে বিভিন্ন মামলায় জড়িয়ে হয়রানি করার চেষ্টা হয়েছে। ব্যবসায়ী মানুষ। তবু মাথা উন্নত রেখেছেন। শুধু যুগান্তর পত্রিকা নয়, তার যমুনা টিভিও এখন দেশের একটি জনপ্রিয় ও সফল মিডিয়া।
সারা বিশ্ব এখন একটি গ্লোবালভিলেজ। এই ভিলেজের প্রতিটি অংশে এখন অসংখ্য পত্রিকা। তাদের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতাও প্রচণ্ড। বাংলাদেশেও এখন এই প্রতিদ্বন্দ্বিতার দ্রুত প্রসার ঘটছে। এই প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও প্রতিযোগিতার মুখে একটি পাঠকপ্রিয় ও ব্যবসাসফল কাগজ হিসেবে টিকে থাকা কম কথা নয়। যুগান্তর সেই বিস্ময়কর সাফল্য দেখিয়েছে। এই পত্রিকায় আমি নিয়মিত কলাম লিখি। ফলে এই পত্রিকার সঙ্গে আমার একটা হার্দিক সম্পর্কও গড়ে উঠেছে দীর্ঘকাল ধরে।
স্বাভাবিকভাবেই যুগান্তরের সাফল্য আমি কামনা করি। বাংলাদেশে একুশ শতকের উন্নত ও আধুনিক সাংবাদিকতায় যুগান্তরের একটি বৈশিষ্ট্য আছে। ক্রান্তিলগ্নের যে সমস্যাগুলোতে বাংলাদেশ আজ জর্জরিত, তার বিরুদ্ধে সংগ্রামে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক রাজনীতিরও যুগান্তর বলিষ্ঠ সহযোগী। তার এই সহযোগিতা বর্তমানের মতো ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকুক, এই কামনার সঙ্গে বিনা দ্বিধায় যুগান্তরের সব পাঠকের সঙ্গে কণ্ঠ মিলিয়ে বলি, যুগান্তর যুগ যুগ জিও।

No comments

Powered by Blogger.