চল্লিশ পেরোলেন? by অধ্যাপক এবিএম আবদুল্লাহ

চল্লিশ পেরিয়েছেন? আপনাকে অভিনন্দন তারুণ্যকে উপভোগ করার জন্য। কিন্তু চাইলে আপনি এই তারুণ্য ধরে রাখতে পারবেন আরও অনেক দিন, একটু সচেতন হলেই।
৪০ বছর ধরে যেসব অঙ্গপ্রত্যঙ্গ আপনাকে সচল রেখেছে, তাদের এবার একটু-আধটু ক্লান্তি আসতেই পারে। কিছু রোগবালাই সাধারণত চল্লিশের কোঠা পেরোতেই শরীরে বাসা বাঁধে, জীবন নতুন বাঁক নেয়।
—৪০ বছর বয়স হলে কিছু নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা করিয়ে নেওয়াই ভালো। আজকাল বিভিন্ন হাসপাতালে এসবের ব্যবস্থা রয়েছে। আর তা না হলে কিছু বিষয়ে মনোযোগ দিন। সাত দিনের মধ্যে কয়েকবার বিভিন্ন সময় রক্তচাপ মাপুন। ওজন মেপে উচ্চতা অনুযায়ী বিএমআই জেনে নিন। রক্তে শর্করার মাত্রা দেখে নিন, তার সঙ্গে লিপিড প্রোফাইল বা রক্তে চর্বির অনুপাত।
—এ বয়সে গিঁটে ব্যথা শুরু হতে পারে। রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা দেখে নিন। হাঁটু ব্যথা থাকলে একটা এক্স-রে বলে দেবে আর্থ্রাইটিস বা হাঁটু ক্ষয় আছে কি না।
—ওজন অতিরিক্ত থাকলে বা রক্তে শর্করা ইত্যাদি একটু বেশি থাকলে একজন পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিতে পারেন।
—চল্লিশোর্ধ্ব পুরুষেরা প্রস্টেটের সমস্যায় ভুগতে পারেন। প্রস্রাব আটকে যাওয়া বা ধীর গতির হওয়া এর লক্ষণ।
—চল্লিশের পর নারীদের কিছু নিয়মিত পরীক্ষা জরুরি। এর একটা হলো প্যাপ স্মিয়ার টেস্ট বা জরায়ু মুখের রস পরীক্ষা। ক্যানসারের ঝুঁকি ধরা পড়বে এতে। ৪০ থেকে ৫০-এর মধ্যে যেকোনো সময় মাসিক বন্ধ হওয়া বা মেনোপজ হতে পারে। এ সময় হৃদ্রোগের ঝুঁকি ও হাড় ক্ষয় বাড়ে।
—দৃষ্টিশক্তিতে পরিবর্তন আসতে পারে। একে বলে চালশে। তাই চোখ পরীক্ষা করিয়ে নিন, দরকার হলে চশমা নিন।
—অনেকে ভাবেন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করলেই নানা রোগ ধরা পড়বে, তার চেয়ে এই তো বেশ ভালো আছি। তাঁরা ভুল করছেন। কেননা অনেক গুরুতর রোগ, যেমন ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদ্রোগ, চর্বি আধিক্য এমনকি ক্যানসার—কেবল নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার মাধ্যমেই আগেভাগে বা প্রাথমিক অবস্থায় ধরা পড়ে। আর তখন এর চিকিৎসাও ভালো ফল হয়।
অধ্যাপক এবিএম আবদুল্লাহ
মেডিসিন অনুষদ, বিএসএমএমইউ

No comments

Powered by Blogger.